আজ পবিত্র হজ

সময়: 12:16 pm - July 8, 2022 | | পঠিত হয়েছে: 3 বার

আজ পবিত্র হজ। মুসলিমের বিশ্বের জন্য মহাসম্মেলন বলা হয় দিনটিকে। শুক্রবার (৮ জুলাই) সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করবেন সারা বিশ্ব থেকে আসা ১০ লাখ মুসলমান।

আরাফাতের ময়দানে আজ লাখো কণ্ঠে ধ্বনিত হবে ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হাম্‌দা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক্‌, লা শারিকা লাক।’ যার অর্থ− ‘আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনও শরিক নেই, সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই, সব সাম্রাজ্যও তোমার।’

আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করাই হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা। দুই মাইল দৈর্ঘ্য ও দুই মাইল প্রস্থের বিরাট সমতল ময়দানের নাম আরাফাত। এর তিন দিকে রয়েছে জাবাল বা পাহাড়। জাবালে রহমত হলো রহমতের পাহাড়। বলা হয়ে থাকে, পৃথিবীতে এসে হজরত আদম (আ.) ও হজরত হাওয়া (আ.)–এর পুনর্মিলনও হয়েছিল এ ময়দানে।

হজরত মুহাম্মদ (সা.) জাবালে রহমত পাহাড়ের কাছে দাঁড়িয়ে বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন। এই পাহাড়ে একটি উঁচু পিলার আছে। একে কেউ কেউ দোয়ার পাহাড়ও বলেন। কোনো কোনো হজযাত্রী জাবালে রহমতে উঠে ইবাদত বন্দেগি করেন।

আজ আরাফাতের ময়দানে খুতবার পর জোহর ও আসরের নামাজ আদায় করবেন মুসল্লিরা। আরাফাতের ময়দানে মসজিদে নামিরা থেকে হজের খুতবা দেওয়া হবে।

এ বছর পবিত্র হজের খুতবা দেবেন শায়খ মোহাম্মদ বিন আবদুল করিম আল ঈসা। একই সঙ্গে তিনি মসজিদে নামিরায় নামাজে ইমামতি করবেন। হজের আরবি খুতবা বাংলাসহ ১৪টি ভাষায় শোনা যাবে। বাংলায় হজের খুতবা শোনা যাবে এই ওয়েবসাইটে। হজের খুতবার বাংলা অনুবাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন মোহাম্মদ শোয়াইব রশীদ।

হাজীরা আজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতে অবস্থানের পর মুজদালিফায় গিয়ে মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করবেন। রাতে সেখানে অবস্থান করবেন খোলা মাঠে। শয়তানের প্রতিকৃতিতে পাথর নিক্ষেপের জন্য প্রয়োজনীয় পাথর (৭০টি) সংগ্রহ করবেন সেখান থেকে।

মুজদালিফায় ফজরের নামাজ আদায় করে হাজ রা কেউ ট্রেনে, কেউ গাড়িতে, কেউ হেঁটে মিনায় যাবেন এবং নিজ নিজ তাঁবুতে ফিরবেন। মিনায় বড় শয়তানকে সাতটি পাথর নিক্ষেপ করবেন। জামারায় শয়তানের প্রতিকৃতিতে পাথর নিক্ষেপের পর হাজীদের দমে শোকর বা কোরবানির প্রস্তুতি নিতে হয়।

অধিকাংশ হাজী নিজে বা বিশ্বস্ত লোক দিয়ে মুস্তাহালাকায় (পশুর হাট ও জবাই করার স্থান) গিয়ে কোরবানি দেন। কেউ কেউ ইসলামি উন্নয়ন ব্যাংকে (আইডিবি) ৮০৯ রিয়াল জমা দিয়ে কোরবানি দেন। পশু কোরবানি দিয়ে মাথার চুল ছেঁটে বা ন্যাড়া করে গোসল করবেন। সেলাইবিহীন দুই টুকরা কাপড় বদল করবেন। এরপর স্বাভাবিক পোশাক পরে মিনা থেকে মক্কায় গিয়ে কাবা শরিফ সাতবার তাওয়াফ করবেন।

কাবার সামনের দুই পাহাড় সাফা ও মারওয়ায় ‘সাঈ’ (সাতবার দৌড়াবেন) করবেন। সেখান থেকে তাঁরা আবার মিনায় যাবেন। মিনায় যত দিন থাকবেন, তত দিন তিনটি (বড়, মধ্যম, ছোট) শয়তানকে ২১টি পাথর নিক্ষেপ করবেন। আবার মক্কায় বিদায়ী তাওয়াফ করার পর দেশে ফিরবেন। যাঁরা হজের আগে মদিনা যাননি, তাঁরা মদিনায় যাবেন।

হাজীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সৌদি কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। হাজীদের বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা দিতে মিনায় কিছু দূর পরপর রয়েছে হাসপাতাল।

সৌদি হজ মন্ত্রণালয় ও মোয়াচ্ছাসা কার্যালয় সূত্র জানায়, মক্কা, মিনা ও আরাফাতের ময়দানে সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে সব হাজীকে বিনা মূল্যে খাবার, বিশুদ্ধ পানিসহ সব সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান হাজীদের নানা উপহার দিচ্ছে।

হজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাবের) সভাপতি শাহাদাত হোসেন জানালেন, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় আসা সব হজযাত্রী আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন।

বৈশাখী নিউজ/ ইডি

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর