করোনার মাঝেই চার মার্কিন কম্পানির বিনিয়োগ টানলেন মুকেশ আম্বানি!

ভারতের শীর্ষ ধনী ও ব্যবসায়ী আইকন মুকেশ আম্বানি। যে কাজে নামেন অনেকটা আটঘাট বেঁধেই নামেন। ঘোষণা দিয়েছিলেন ২০২১ সালের মার্চের মধ্যে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের শূন্য ঋণ হবে। অর্থাৎ কোন ঋণই থাকবে না। এ জন্য টেলিকম ও জ্বালানি কম্পানিতে বিদেশি বিনিয়োগ টানার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছিলেন। কিন্তু আকস্মিক বাধা হয়ে আসে করোনা সংকট। একদিকে লকডাউনে ব্যবসা-বাণিজ্য অচল, অন্যদিকে জ্বালানি তেলের ব্যাপক দরপতনে বড় অংকের লোকসান। কিন্তু পরিস্থিতি যতোই কঠিন হোক দমে যাওয়ার পাত্র নন তিনি।

এমন পরিস্থিতির মাঝেই অল্প সময়ে চারটি বিদেশি বিনিয়োগ টেনে ছক্কা হাঁকালেন মুকেশ আম্বানি। মাত্র চার সপ্তাহের ব্যবধানে টেলিকম কম্পানি রিলায়্যান্স জিও’র  শেয়ার বিক্রি করে ৬৭ হাজার কোটি রুপির বেশি বিনিয়োগ ঘরে তুললেন। এতে তার কম্পানি রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের (আরআইএল) ঘাড়ে ১.৬১ লাখ কোটি রুপির যে বিশাল ঋণ তা নামানোর ক্ষেত্রে অনেক দূর এগিয়ে গেলেন।

গত ২২ এপ্রিল ৪৩ হাজার ৫৭৪ কোটি রুপিতে জিও’র ৯.৯৯% শেয়ার কিনে নেয় ফেসবুক। এরপর ৫ মে ৫ হাজার ৬৫৫ কোটি রুপিতে ১.১৫% শেয়ার কিনে মার্কিন প্রযুক্তি সংস্থা সিলভার লেক। তার এক সপ্তাহের মধ্যেই ২.৩২% শেয়ার কেনার কথা জানা যায় মার্কিন প্রাইভেট ইকুইটি সংস্থা ভিস্তা ইকুইটি পার্টনার্স। তারা বিনিয়োগ করবে  ১১ হাজার ৩৬৭ কোটি রুপি। সর্বশেষ গত রবিবার আরেক মার্কিন কম্পানি জেনারেল আটলান্টিক ৬ হাজার ৬০০ কোটি রুপিতে জিও’র ১.৩৪ শতাংশ শেয়ার কিনে নেয়। এ নিয়ে চারটি আমেরিকান কম্পানি জিয়ো প্ল্যাটফর্মে মোট ৬৭ হাজার ১৯৪.৭৫ কোটি রুপি বিনিয়োগের কথা জানাল।

এছাড়া রিলায়েন্সের জ্বালানিসহ আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের  শেয়ার বিক্রি করতে কয়েকটি কম্পানির সঙ্গে কথা চলছে। যার অন্যতম সৌদি আরামকো। একের পর এক বহুজাতিক অংশীদারিত্ব বাড়ায় রিলায়েন্সের শেয়ারের দরও দ্রুত বাড়ছে। আর সে কল্যাণেই এ মাসে এশিয়ার শীর্ষ ধনীর স্বীকৃতি পেয়েছেন মুকেশ আম্বানি।

২০২১ সালের মধ্যে কম্পানির ঋণ শূন্যে নামিয়ে আনতে মুকেশ আম্বানি রাইট শেয়ার ইস্যু করেছেন। সেখান থেকে তোলা হবে ৫৩ হাজার ১২৫ কোটি রুপি। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, তেলের বাজারে মন্দা,  দেশেও চাহিদা  নেই। ব্যবসা বাণিজ্যও খারাপ অবস্থায়। এ সব বুঝেই হয়তো এখন জিয়োর তাস খেলছেন মুকেশ। লক্ষ্য পুঁজি গোছানো। মুকেশ  আম্বানি বলেন,  ‘ভারতের অর্থনীতিতে ডিজিটাল রুপান্তরে প্রযুক্তিদক্ষ আমেরিকান কম্পানিগুলোর সুবিধা কাজে লাগাতে চাই।’সূত্র: এনডিটিভি, ফার্স্টপোস্ট

বৈশাখী নিউজজেপা