যেসব খাবার খাবেন করোনায় আক্রান্ত হলে

করোনাভাইরাসের ধারাই হলো আক্রান্তের শরীর দুর্বল করে কাবু করে ফেলা। তাই এরকম অবস্থায় শুধু স্বাদের কথা না ভেবে খেতে হবে শরীরের প্রতিটি প্রত্যঙ্গের কথা মাথায় রেখে। না হলে শরীরের দুর্বলতার সুযোগ নেবে সংক্রমণ।

হৃদযন্ত্র, ফুসফুস, বৃক্ক, মস্তিস্ক, যকৃৎ- প্রতিটি অঙ্গেরই খেয়াল রাখতে হবে। সুগার, প্রেশার, কোলেস্টেরল, ওজন, সবই রাখতে হবে নিয়ন্ত্রণে। না হলে এসব রোগের মাধ্যমেও কোভিড-১৯ আপনাকে মুমূর্ষ অবস্থায় নিয়ে যেতে পারে। তাই এই সময়ে সবচেয়ে দৃষ্টি দিন পুষ্টির উপর। কোনও ভাবেই যাতে শরীরে পুষ্টির অভাব না ঘটে।

রোগটি যেহেতু প্রাণঘাতী, তাই কিছু নিয়ম তো মানতেই হবে। শরীরের কথা মাথায় রেখে খাবারের তালিকায় যোগ করতে হবে নতুন কিছু। তাই এবার জেনে নিন, এই অবস্থায় প্রতিদিনের খাবারের তালিকাটা কিভাবে সাজাবেন…

• সকালে খালিপেটে খান হলুদ দুধ। গরুর দুধে এক চামচ কাঁচা হলুদ বাটা, আধ চামচ দারচিনির গুঁড়া, সিকি চামচ গোলমরিচের গুঁড়া মিশিয়ে বানান। সুগার না থাকলে মধু মেশাতে পারেন। এরপর আধঘণ্টা কিছু খাবেন না।

• সকালে চায়ের বদলে আয়ুর্বেদিক ক্বাথ খেতে পারেন। তুলসি, পিপলি, আদা ও মধু দিয়ে অথবা তুলসি, আদার সঙ্গে গোলমরিচ, দারচিনি, কিশমিশ, মধু ও লেবুর রস দিয়ে বানাতে পারেন এই ক্বাথ। আধা চামচ গুড়ুচি এককাপ পানিতে ফুটিয়ে মধু মিশিয়েও বানানো যায়। নিয়মিত খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যেমন বাড়বে, বাড়বে হজমশক্তি। গলাতেও আরাম হবে।

• সকালে এমন খাবার খান, যাতে কোনও অস্বাস্থ্যকর উপাদান নেই। গম ও ছোলা শুকনা খোলায় ভেজে তাতে মেশান ওটস ও বার্লি। তারপর মিক্সিতে গুঁড়া করে দুধ বা পানি দিয়ে ফুটিয়ে ফল মিশিয়ে খান। আমন্ড দুধে কাঁচা হলুদ, ওটস ও মধু মিশিয়ে পরিজ বানাতে পারেন।

• দুপুরে ভাতের সঙ্গে কাঁচা হলুদ ও গোলমরিচ বাটা খান। ডাল-সব্জির সঙ্গে খান লেবু। বা খাওয়ার পর কোনও টক ফল খেতে পারেন।

• লেবু দিয়ে ধনেপাতা বা পুদিনার চাটনি বা ১৫ মিলি আমলকির রসও খেতে পারেন।

• রান্নায় সব ধরনের মশলা ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে ব্যবহার করুন। যেমন ধনে, জিরা, হলুদ, গোলমরিচ, আদা, রসুন, মেথি, কালোজিরা।

• ইমিউনিটি বাড়ে এমন একটি মশলা বানিয়ে রাখুন। যেমন- ৩ চামচ করে জিরা, ধনে, ৬ চামচ মেথি ও এক চামচ গোলমরিচ শুকনা খোলায় ভেজে গুঁড়ো করে নিতে পারেন। তাতে মেশান এক চামচ আদার গুঁড়া, ৬ চামচ হলুদ গুঁড়া ও সিকি চামচ দারচিনির গুঁড়া।

• যে কোনও রান্নায় মেশানোর আগে এক চামচ ঘি অল্প গরম করে তাতে এক চামচ এই মশলা দিয়ে নেড়ে নিন। এছাড়া ভাত, সেদ্ধ সবজি, ডাল, স্যুপে এই মশলা মিশিয়ে খাতে পারেন।

• যত খিদে পাক, পেট খানিকটা খালি রেখে খাবেন। পানির বোতল সঙ্গে রাখুন। মাঝেমধ্যে চুমুক দিন।

• রাতের খাবার যত হালকা হয় ততো ভাল। ঘুমাতে যাওয়ার ঘণ্টা দুয়েক আগে খাবেন। খাওয়ার পর একটু পায়চারি করুন।

• রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে এমন পুষ্টিকর খাবার বা ভেষজ খেতে পারেন। নিয়মিত একটি করে ডিম খেতে পারেন। যাদের ডিমে আছে, তারা সপ্তাহে তিন থেকে চারটি খেতে পারেন। খেজুরে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় খেজুর রাখুন।

• শান্ত হয়ে বসে, ভাল করে চিবিয়ে, মন দিয়ে খাবেন। একে বলে মাইন্ডফুল ইটিং। এভাবে খেলে হজম ভাল হয়, খাবারের পুষ্টি ভালভাবে শোষিত হয় শরীরে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।

বৈশাখী নিউজজেপা