মিন্নি যেসব অভিযোগে ফাঁসির আসামি হলেন

আপডেট: October 1, 2020 |

বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড ছিলেন তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি। তারই পরিকল্পনায় রিফাতকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। বুধবার এই হত্যা মামলার রায়ে এমন পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান।

পর্যবেক্ষণে আরও বলা হয়, হত্যাকাণ্ডটি জঘন্য ও ন্যক্কারজনক। ঘটনার সময় মিন্নি তার স্বামীকে রক্ষা করতে গেছেন সিমপ্যাথি (সহমর্মিতা) আদায়ের কৌশল হিসেবে- এটা প্রতীয়মান। কোপানোর সময় রিফাতকে রক্ষার চেয়ে নয়ন বন্ডকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেছিলেন মিন্নি।

বাদীপক্ষের আইনজীবী মজিবুল হক বলেন, মামলায় বিচারক তার পর্যবেক্ষণে স্পষ্ট করে উল্লেখ করেছেন, মিন্নির পরিকল্পনায় এবং তার কারণেই এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, হত্যার আগে মিন্নি মামলার মূল আসামি নয়ন বন্ডের সঙ্গে এক মাসে ৪৪ বার এবং নয়ন বন্ড মিন্নির সঙ্গে ১৬ বার ফোনে কথা বলেছেন। এ ছাড়া অসংখ্যবার খুদে বার্তা চালাচালি করেছেন।

রায় ঘোষণার সময় বিচারক বলেন, পাঁচজনের সহযোগী হিসেবে হত্যায় অংশ নিয়েছেন মিন্নি। একই সঙ্গে তারা সবাই রিফাতের মৃত্যু নিশ্চিত করেছেন। এ জন্য কলেজগেটের সামনে সময়ক্ষেপণ করেন মিন্নি। রিফাতকে যখন মারার জন্য আসামিরা নিয়ে যাচ্ছিল, তখন স্বাভাবিক ছিলেন মিন্নি। এতেই প্রমাণিত হয়, মিন্নি হত্যার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন। তারই পরিকল্পনায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এ জন্য তাকেও ফাঁসি দেওয়া হয়েছে।

এ রায়ের মধ্য দিয়ে স্বামীকে হত্যার প্লটে মিন্নির জড়িত থাকার বিষয়টি প্রমাণিত হলো। এতে মামলার প্রধান সাক্ষী থেকে ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি হলেন মিন্নি।

প্রসঙ্গত, বহুল আলোচিত বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ছয়জনের ফাঁসির আদেশ দেন আদালত। একই মামলায় চারজনকে খালাস দেয়া হয়েছে। এছাড়া প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত।

বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুর পৌনে ২টার দিকে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, মো. রাকিবুল হাসান ওরফে রিফাত ফরাজী (২৩), আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বি আকন (২১), মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত (১৯), রেজোয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয় (২২), মো. হাসান (১৯) ও আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি (১৯) ।

এছাড়া এ মামলায় চার আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন, মো. মুসা (২২), রাফিউল ইসলাম রাব্বি (২০), মো. সাগর (১৯) ও কামরুল হাসান সায়মুন (২১)।

বৈশাখী নিউজজেপা

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর