ড. রায়ান সাদি উদ্ভাবিত করোনা ভ্যাকসিন ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য এফডিএতে

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান চিকিৎসা বিজ্ঞানী ড. রায়ান সাদি  সারা পৃথিবীর বুকে অসাধারণ কাজের মাধ্যমে বাংলাদেশের  সুপরিচিতির জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।

আমেরিকান চিকিৎসা বিজ্ঞানী ড. রায়ান সাদির অক্লান্ত পরিশ্রমে উদ্ভাবিত করোনা চিকিৎসার ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমতির জন্যে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ফুড এ্যান্ড ড্রাগ এডমিনিস্ট্রেশন’ (এফডিএ) এ ১৪ অক্টোবর সাবমিট করা হয়েছে। নিউজার্সিস্থ ‘টেভোজেন বায়ো’ নামক একটি ওষুধ প্রস্তুতাকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সাবমিট করা এই ভ্যাকসিন প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, এ্যান্টিজেন বিশেষ করে ‘টি সেল টেকনোলজি’র অনুকরণে এই নতুন ভ্যাকসিনের পন্থা উদ্ভাবন করতে ইয়েল ইউনিভার্সিটির প্রশিক্ষিত সংক্রমণ রোগ বিশেষজ্ঞ পাবনার সন্তান ড. রায়ানের গবেষণায় সহায়তা দিয়েছেন বোন ম্যারো প্রতিস্থাপনের জন্যে বিশ্বব্যাপি খ্যাতি অর্জনকারি ফিলাডেলফিয়ার থমাস জেফারসন ইউনিভার্সিটিতে মেডিকেল অনকোলজি ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান ড. নীল ফ্লোমেনবার্গ।

প্রসঙ্গত: উল্লেখ্য, টেভোজেন উদ্ভাবিত ‘টি সেল’ থেরাপির অভিজ্ঞতার আলোকে যে ভ্যাকসিনের ট্রায়ালের জন্যে এফডিএ সমীপে আবেদন জানানো হয়েছে, সেটি সাফল্য লাভে সক্ষম হলে শুধু কভিড-১৯ রোগী চিকিৎসা নয়, একইসাথে ফ্লু, টিউমার এবং মারাত্মক অনেক রোগ প্রতিরোধের পথও সুগম হবে।

এ প্রসঙ্গে এই ওষুধ প্রস্তুতকারি কোম্পানীর পরিচালনা পর্ষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. রায়ান সাদি এ সংবাদদাতাকে বলেছেন, করোনা মহামারিতে গোটাবিশ্ব সন্ত্রস্ত। ভ্যাকসিনের জন্যে বহুদেশ চেষ্টা চালাচ্ছে। আমরাও করোনা প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার সময় থেকেই এ নিয়ে কাজ করছি। এফডিএ কর্তৃক অনুমোদন পেলে এবং তা প্রকৃত অর্থেই করোনা রোগীর জন্যে সুফল বয়ে আনলে আমরা মনে করবো মানবতার কল্যাণে বড় ধরনের একটি কাজের অংশ হতে পারলাম। আমাদের এই ভ্যাকসিনের মূল্য তুলনামূলকভাবে কম রাখার প্রস্তাব রয়েছে। যাতে সব শ্রেণির মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকে। ড. রায়ান উল্লেখ করেছেন, ক্যান্সার চিকিৎসায় আমাদের অবিস্মরণীয় অবদানের ধারাবাহিকতা হিসেবে করোনা রোগীরাও স্বস্তি পাবেন বলে আশা করছি।
সম্মিলিত চেষ্টায় উদ্ভাবনের পথে থাকা করোনা ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলবে চলমান স্বাভাবিক প্রত্রিয়ায়। আক্রান্তদের শরীরে স্পেশিফিক টি সেল নিজে থেকেই সচল হয় এবং কভিড-১৯ ভাইরাসে রূপ নেয়। প্রস্তাবিত ট্রায়ালে টি সেল তৈরী হবে ল্যাবরেটরিতে এবং মারাত্মকভাবে অসুস্থ রোগীকে তা প্রয়োগ করা হবে।

প্রসঙ্গত: উল্লেখ্য যে, চার দশকেরও অধিক সময় যাবত রোগ প্রতিরোধক বিজ্ঞানী হিসেবে অত্যন্ত দাপটের সাথে কর্মরত ড. ফ্লোমেনবার্গ বলেন, ‘ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের মধ্যদিয়ে টেভোজেনের টি সেল থেরাপিকে কভিন-১৯ এর চিকিৎসার পথে বর্তমান পর্যায়ে উপনীত হতে পারায় গবেষণায় সহযোগীসহ আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আমরা আশা করছি, ফেজ-ওয়ান ট্রায়ালের পর যে তথ্য পাবো তার পথ ধরে টি সেল’র সুরক্ষায় অনেক অগ্রগতি আসবে। শরীরের জন্যে ক্ষতিকর সেল আমরা শনাক্ত করতে সক্ষম হবো এবং করোনা রোগ সারাতে আমাদের সামনে সুস্পষ্ট একটি দিক-নির্দেশনা আসবে। যদিও ট্রায়ালের প্রথম পর্বে সচরাচর রোগী কিংবা ওষুধের নিরাপত্তার ব্যাপারটি প্রাধান্য পায়, ফলাফলের চেয়ে। তবে আমরা সবসময় আশাবাদি যে, এসব সেল করোনা ভাইরাসকে নিধনের ক্ষেত্রে নেয়ামক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হবে।’

বৈশাখী নিউজ/ফারজানা