ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যৌতুকের টাকা না পেয়ে গৃহবধূকে বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা

আপডেট: November 19, 2020 |

যৌতুকের টাকা না পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে কোহিণূর খানম নিতু (৩০) নামে এক গৃহবধূকে বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে মাদকাসক্ত স্বামী মো. জুয়েল মিয়া (৩২)।

বৃহস্পতিবার উপজেলার চরচারতলা এলাকার আনু সর্দারের বাড়ির পাশের আলগা বাড়ির মো. আবু চান মিয়ার ঘর থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত কোহিণূর একই এলাকার আবুল হোসেন মিয়ার মেয়ে।

ঘটনার পর থেকে নিহতের ঘাতক স্বামী জুয়েল পলাতক রয়েছে। এই ঘটনায় জুয়েলের পরিবারের ৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হল, জুয়েলের বাবা আবু চান মিয়া (৬৮), মা রহিমা বেগম (৫৫), বড় ভাইয়ের স্ত্রী তানিয়া বেগম (২৯), ছোটভাই কামরুল ইসলাম (২৮) ও কামরুলের স্ত্রী আর্জিনা বেগম (২৪)।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, প্রায় ছয় মাস আগে প্রেমের সম্পর্কের মাধ্যমে আদালতে গিয়ে বিয়ে করেন কোহিণূর এবং জুয়েল। দুজনেরই এটি দ্বিতীয় বিয়ে। বিয়ের পর থেকে দুজনের মাঝে কখনো সম্পর্কের অবনতি হয়নি। বিয়ের পর উভয়ের পরিবার তাদের বিয়ে মেনে নেয়। তবে জুয়েল প্রতিদিন ইয়াবা সেবন করতেন। এরই মধ্যে জুয়েল একটি ওয়ার্কসপ খুলে ব্যবসা পরিচালনা শুরু করেন। ওয়ার্কসপে নতুন করে বিনিয়োগ করার জন্য দুমাস আগে কোহিণূরের কাছে ২ লাখ টাকা যৌতুক চায় জুয়েল। তবে কোহিনুর টাকা দিতে অপারগতা জানায়। কিন্তু এর মধ্যে তাদের দুজনের মধ্যে আর কোন সমস্যা হয়নি। বুধবার সন্ধ্যায় কোহিণূর পাশেই বাবার বাড়ি গিয়ে নিজ পরিবারের সাথে দেখা করে আসেন। তখনও তাদের কোন সমস্যার কথা তাদের কোন সমস্যার কথা জানাননি কোহিণূর। এরই মধ্যে জুয়েল বটি দা দিয়ে কোহিণূরকে এলোপাথারী কুপিয়ে হত্যা করে কম্বল দিয়ে লাশ ঢেকে রেখে পালিয়ে যায়। পরে পরিবারের লোকজন দেখতে পেয়ে পুলিশকে জানায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে বটি দা উদ্ধান করে এবং জুয়েলের পরিবারের ৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেন।

কোহিণূরের বাবা মো. আবুল হোসেন জানান, বুধবার রাতেও তার সাথে কোহিণূরের দেখা হয়। তবে সে সময়ে সে তাকে কোন সমস্যার কথা জানাননি। তিনি তার মেয়ে কোহিণূর হত্যাকারীর বিচার চান।

আশুগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শ্রীবাস চন্দ্র বিশ্বাস জানান, হত্যাকান্ডের ঘটনার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মরদেহের পাশ থেকে একটি রক্তমাখা বটি দা উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পরিবারের ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। কোহিণূরের ঘাতক স্বামী জুয়েলকে আটক করার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। পরিবারের অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বৈশাখী নিউজ/ ফাজা

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর