স্বাধীনতার বিকৃত ইতিহাস পরিবেশন করে ব্রিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে : তথ্যমন্ত্রী

আপডেট: November 22, 2020 |

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন স্বাধীনতার ইতিহাস নতুন প্রজন্ম জানছে বলেই বিএনপির গাত্রদাহ । তিনি বলেন ,স্বাধীনতার বিকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে পরিবেশন করে তাদেরকে ব্রিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে বিএনপির শাসনামলে ।

রবিবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয় সভাকক্ষ থেকে অনলাইনে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্যদের মাঝে ‘বকনা বাছুর’ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় এই মন্তব্য করেন তথ্যমন্ত্রী।

সাংবাদিকরা এসময় মির্জা ফখরুল ইসলামের বক্তব্য ‘স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করা হচ্ছে’ এর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর ২১ বছর ধরে স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। স্বাধীনতার খলনায়ককে নায়ক বানানোর চেষ্টা করা হয়েছে। ঠিক তেমনিভাবে স্কুলের দপ্তরিকে হেডমাস্টার বানানোর চেষ্টা করা হয়েছে। স্বাধীনতার এই বিকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে পরিবেশন করে তাদেরকে ব্রিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে।’

তিনি বলেন, এরপর ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা স্বাধীনতার মহানায়ক বাংলাদেশের মহান স্থপতি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতার সুযোগ্যকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা জনগণের রায় নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়ার পর সেই বিকৃতির গতি বন্ধ হয়েছিল এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে সেটির সংশোধন সম্ভবপর হয়েছিল।

২০০১ সালের পর আবারও স্বাধীনতার ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শুধু বিকৃত করাই নয়, টেলিভিশনের অনেক ফুটেজ ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। রেডিও-টেলিভিশনে সংরক্ষিত আর্কাইভ থেকে প্রায় সমস্ত জিনিস ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে, যাতে এই সত্যগুলো পরবর্তী প্রজন্ম না জানে। এরপরও কিছু কিছু থেকে গেছে। প্রকৃতপক্ষে স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস ধীরে ধীরে দেশের জনগণ ও নতুন প্রজন্ম জানছে বিধায় মির্জা ফখরুল সাহেব ও বিএনপির গাত্রদাহ শুরু হয়েছে। যে দলের নেতারা দুর্নীতি আর খুনের দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির জন্মদিন ঢাকঢোল পিটিয়ে পালন করে, তাদের রাজনৈতিক দৈন্য সেই জায়গায় গেছে। এ কারণেই তাদের এই গাত্রদাহ।

রাজধানীতে বাসে আগুন দেওয়া নিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, গত ১২ নভেম্বর হঠাৎ করে গাড়িতে আগুন দেওয়া হলো এবং ২০১৩, ১৪, ১৫ সালে যেভাবে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করা হয়েছিল ঠিক একইভাবে এই ন্যাক্কারজনক কাজটির পর আরেকটি ন্যাক্কারজনক কাজ করা হয়েছে, সেটি হচ্ছে এটিকে অস্বীকার করা। এই অপরাধীদের খুঁজে বের করার পর সেটা যদি বিএনপির দলীয় কেউ হয়, তাদের বিরুদ্ধে দলগতভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, সেই কথা না বলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবসহ বিএনপির সমস্ত ঊর্ধ্বতন নেতারা এটি নিয়ে প্রচণ্ড মিথ্যাচার করেছেন, এটিকে অস্বীকার করেছেন।

মন্ত্রী বলেন, মিথ্যাচার করে বিএনপি তাদের দলের মধ্যে যেসমস্ত দুষ্কৃতিকারী আছে তাদেরকে আড়াল করার চেষ্টা করেছে। যে দুষ্কৃতিকারীরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তারা যেমন অপরাধী, যারা এ নিয়ে মিথ্যাচার করে এই দুষ্কৃতিকারীদের আড়াল করার চেষ্টা করেছেন তারা এবং যারা এই ক্ষেত্রে মদদ ও অর্থ দিয়েছেন তারাও আইনের চোখে সমানভাবে অপরাধী।

ড. হাছান বলেন, আপনারা জানেন, এরই মধ্যে ভিডিও ফুটেজ দেখে অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং অতি সম্প্রতি যুবদল, ছাত্রদলের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বনানীতে কোথায় বসে এই পরিকল্পনা হয়, কোথা থেকে অর্থ এসেছে সেগুলো তারা স্বীকার করেছে। এই স্বীকারোক্তির পর মির্জা ফখরুল ইসলাম সাহেব কি বলবেন?

জনগণের দাবির কথা উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘যারা বাসে আগুন দিয়েছে, পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করেছে, তারা যেমন অপরাধী, এই ঘটনা নিয়ে যারা মিথ্যাচার করে তাদেরকে আড়াল করে অপরাধীদের রক্ষার অপচেষ্টা চালিয়েছেন তারাও সমানভাবে অপরাধী, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে জনগণের দাবি।

বৈশাখী নিউজ/ জেপা

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর