বিদেশি রাষ্ট্রসমূহে গোয়েন্দা তৎপরতা পরিচালনাকরী রুশ গোয়েন্দা সংস্থা এসভিআরের প্রধান নির্বাহী সের্গেই নারিশকিন বলেছেন, ইউক্রেনে সামরিক অভিযানকে কেন্দ্র করে বর্তমানে এক ঐতিহাসিক মুহূর্তে উপস্থিত হয়েছে রাশিয়া। ভবিষ্যতে বিশ্ববাসীর সামনে রাশিয়ার ভাবমূর্তি কেমন হবে, তা এই অভিযানের ফলাফলের ওপর নির্ভর করছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
রাশিয়ার প্রধান দুই গোয়েন্দা সংস্থার নাম এফএসবি ও এসভিআর। এই দু’টি সংস্থার মধ্যে এফএসবি দেশের অভ্যন্তরে এবং এসভিআর বহির্বিশ্বে গোয়েন্দা তৎপরতা পরিচালনা করে। বুধবার রাজধানী মস্কোতে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের এক অনুষ্ঠানে এসভিআর প্রধান সের্গেই নারিসকিন বলেন, ‘রাশিয়া বর্তমানে বাস্তবিক অর্থেই ঐতিহাসিক এক মুহূর্তের সামনে উপস্থিত হয়েছে। (ইউক্রেনে অভিযানকে কেন্দ্র করে) আমাদের ভাগ্যে যা ঘটবে, তা ই ভবিষ্যত পৃথিবীতে রাশিয়ার স্থান নির্ধারণ করবে।’
তবে সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে রাশিয়া কখনও, কোনো অবস্থাতেই আপস করবে না উল্লেখ করে এই রুশ গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, ‘সার্বভৌমত্ব হচ্ছে রুশ নগারিকদের সম্মান, তাদের নিশ্চয়তা। এটি আমাদের শিশুদের ভবিষ্যত। তাই এই প্রশ্নে কখনও রাশিয়া পিছু হটেনি, ভবিষ্যতেও কোনো পরিস্থিতিতে পিছু হটবে না। কারণ, যদি এক্ষেত্রে আপস করা হয়, তাহলে রাশিয়া আর প্রকৃত রাশিয়া থাকবে না।’
এদিকে ইউক্রেনের সঙ্গে একটি সম্ভাব্য শান্তি চুক্তির কিছু অংশ নিয়ে মস্কো-কিয়েভ ঐকমত্যে পৌঁছানোর কাছাকাছি রয়েছে বলে জানিয়েছে রাশিয়া। কিয়েভ নিরপেক্ষতা নিয়ে আলোচনা করতে রাজি হওয়ার পর যুদ্ধরত দুই দেশ ওই চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছেছে বলে জানানো হয়েছে। এর ফলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের বৃহত্তম যুদ্ধ অবসানের আশা তৈরি হয়েছে।
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ আরবিসি নিউজকে বলেছেন, নিরাপত্তার নিশ্চয়তাসহ ইউক্রেনের নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়ে এখন গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে। তিনি বলেছেন, ‘এখন অত্যন্ত জরুরি এই বিষয়টি নিয়েই আলোচনা করা হচ্ছে। বিষয়টি একেবারে একটি নির্দিষ্ট কাঠামোতে রয়েছে; যা আমার দৃষ্টিতে চুক্তির কাছাকাছি।’
রুশ এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ন্যাটোর সম্প্রসারণ ছাড়াই ইউক্রেনের নিরাপত্তার নিশ্চিয়তার পাশাপাশি সম্ভাব্য একটি বিকল্প এবং নিরপেক্ষতার ব্যাপারে ফেব্রুয়ারিতে কথা বলেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানে চুক্তির ব্যাপারে আশার বাণী লাভরভের কাছ থেকে আসার পর ইউরোর মূল্য ০ দশমিক ৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে লাভরভ সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, আলোচনা সহজ নয়। কিন্তু ‘সমঝোতায় পৌঁছানোর কিছু আশা’ দেখা যাচ্ছে।
শান্তি আলোচনার বিষয়ে ইউক্রেনও অত্যন্ত সতর্কতার সাথে ইতিবাচক একটি বিবৃতি দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘যুদ্ধ অবসানে আলোচনা করতে ইচ্ছুক ইউক্রেন। কিন্তু আত্মসমর্পণ করবে না অথবা রুশ হুশিয়ারি মেনে নেবে না।’ লাভরভ বলেছেন, আলোচনার মূল বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে— ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের জনগণের নিরাপত্তা, ইউক্রেনকে অসামরিকায়ন এবং ইউক্রেনে রুশ-ভাষী জনগণের অধিকার।
ইউরোপের পূর্বাঞ্চলে ন্যাটোর সম্প্রসারণ রাশিয়ার জন্য নিরাপত্তা ঝুঁকি বলে মনে করেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। তিনি বলেছেন, ২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রিমিয়া দখলে নেওয়ার পর থেকে ইউক্রেনে রুশ-ভাষী জনগণ ‘জাতীয়তাবাদী এবং নব্য-নাৎসিদের’ গণহত্যার শিকার হয়ে আসছে। যে কারণে ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের বিকল্প ছিল না। তবে ইউক্রেন এবং পশ্চিমারা বলছে, রাশিয়ার গণহত্যার এই দাবি ভিত্তিহীন।
সম্পাদকীয় : নাহার ম্যানশন (৩য় তলা), ১৫০ মতিঝিল ঢাকা।
নিউজ ও কমার্শিয়াল : মুন কমপ্লেক্স (৩য় তলা) ৫৯/১, পাটুয়াটুলি, ঢাকা।
ই-মেইল: boishakhinews24.net@gmail.com
হট লাইন: ০১৬৮৮৫০৫৩৫৬
https://www.boishakhinews24.net/