গ্রিসের বিরুদ্ধে প্রতিশোধের হুমকি এরদোয়ানের

আপডেট: September 7, 2022 |

তুরস্কের সামরিক বিমানকে হয়রানি করার জন্য গ্রিস এজিয়ান সাগরের দ্বীপগুলোকে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান।

বলকান দেশে সফরের সময় বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার নেতাদের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেন, ‘আঙ্কারা অনির্দিষ্টকালের জন্য এমন আচরণ সহ্য করবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘যখন সময় আসবে, হঠাৎ কোনো এক রাতে তুরস্ক প্রতিশোধ (গ্রিসের কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে) নেবে।’
সম্প্রতি তুরস্ক অভিযোগ করেছে, এজিয়ান দ্বীপপুঞ্জ থেকে তুরস্কের এফ-সিক্সটিন যুদ্ধবিমানকে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৩০০ এর মাধ্যমে রাডার লক করা হয়। কোনো বিমানকে ক্ষেপণাস্ত্রের লক্ষ্যবস্তু বানানোর আগে রাডার লক করতে হয়।

সেই ঘটনা নিয়ে এরদোয়ান বলেছেন, এটি মোটেও ভাল লক্ষণ নয় যে গ্রিক রাডার তুরস্কের যুদ্ধবিমান লক করছে।

এ ধরনের আচরণকে এথেন্সের পক্ষ থেকে দেয়া হুমকি হিসেবে বিবেচনা করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘যদি এই ধরনের অবৈধ হুমকি অব্যাহত থাকে তবে (তুরস্কের) ধৈর্যের অবসান ঘটবে।’

সময় এলে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বললেও কী কী পদক্ষেপ নেয়া হবে তা খোলাসা করেননি এরদোয়ান।

এরই মধ্যে এজিয়ান সাগরে গ্রিসের কর্মকান্ড ও উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে নিজেদের অবস্থান নিয়ে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ২৫টি ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) সদস্যভুক্ত দেশ, পাশাপাশি ইইউর শীর্ষ কূটনীতিক জোসেপ বোরেল ও ন্যাটোর মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গকে চিঠি দেয়া হয়েছে।

এই চিঠি জাতিসংঘ মহাসচিব ও নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যদেরও পাঠানো হয়েছিল। এর বিষয়বস্তু পূর্ব এজিয়ান দ্বীপে এথেন্সের অসামরিক মর্যাদা লঙ্ঘন এবং গ্রিসের বিরুদ্ধে বেআইনি কর্মকান্ডের অভিযোগ।

এর আগে শনিবার তুরস্কের উত্তরের স্যামসুন প্রদেশে এক বক্তব্যে এরদোয়ান বলেন, আপনাদের (গ্রিসকে উদ্দেশ করে) দ্বীপ দখল আমাদের শৃঙ্খলিত করে না। যখন সময় (উপযুক্ত), মুহূর্ত আসবে, আমরা প্রয়োজনীয় যা করার করব।’

এজিয়ান দ্বীপপুঞ্জ একসময় অটোমান সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল, কিন্তু ১৯২৩ ও ১৯৪৭ সালে করা চুক্তির অধীনে তা গ্রিসের অন্তর্ভুক্ত হয়।

আঙ্কারা বারবার অভিযোগ করে আসছে, গ্রিস দ্বীপগুলোকে সামরিকায়ন করছে এবং জোর দিয়ে বলে আসছে গ্রিস সার্বভৌমত্ব তাদের নিরস্ত্রীকরণ অবস্থার শর্তাধীন।

তুরস্কের অভিযোগ, গ্রিস ন্যাটোর সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জ করছে। যদিও গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকস মিতসোতাকিস অবশ্য তুরস্কের দাবিকে অযৌক্তিক বলছেন।

সম্প্রতি ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানে ইউরোপের টালমাটাল অবস্থার মধ্যেই গ্রিস ও তুরস্কের মধ্যে এস-৩০০ লক করা নিয়ে নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।

গত ২৩ আগস্ট তুরস্কের বিমানবাহিনীর কয়েকটি এফ-সিক্সটিন যুদ্ধবিমান পূর্ব ভূমধ্যসাগরে ন্যাটোর একটি পর্যবেক্ষন অপারেশন চালাতে এজিয়ান সাগরের ওপর দিয়ে আন্তর্জাতিক আকাশসীমায় থাকা অবস্থায় ক্রিট দ্বীপ থেকে রাশিয়ার নির্মিত একটি এস-৩০০ দ্বারা লকের শিকার হয়েছিল।

গ্রিক মিডিয়াগুলোতে তুরস্কের এই অপারেশনকে উসকানিমূলক বলা হচ্ছে, যার মূল উদ্দেশ্য ক্রিট দ্বীপে এস-৩০০-এর অবস্থান প্রকাশ করা।

একই সঙ্গে গ্রিসের সামরিক সূত্রগুলো তুরস্কের দাবি অস্বীকার করছে, তারা বলছে সেদিন কোনো বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করা হয়নি।

বৈশাখী নিউজ/ বিসি

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর