কয়লা বেচে সর্বকালের সর্বোচ্চ আয় ইন্দোনেশিয়ার

আপডেট: September 17, 2022 |

বিশ্বজুড়ে তেল ও গ্যাসের মূল্য ব্যাপক বেড়েছে। ফলে আপাতত জ্বালানি পণ্য দুটি কেনা থেকে বিরত থাকছে বিভিন্ন দেশ। ইতোমধ্যে বিকল্পের সন্ধানে নেমেছে তারা।

এতে দেশে দেশে কয়লার চাহিদা বেড়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে জীবাশ্ম জ্বালানিটির প্রতি ঝুঁকছে তারা। তাতে এর দর রেকর্ড বৃদ্ধি পেয়েছে।

নিক্কেই এশিয়ার এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।এতে বলা হয়, কয়লা বেচে ফুলেফেঁপে উঠছে ইন্দোনেশিয়ার অর্থনীতি। এরই মধ্যে উৎপাদন যোজন যোজন বাড়িয়েছে বিশ্বের শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশটি।

ইউক্রেনে যুদ্ধের জেরে রাশিয়ার ওপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ইউরোপের দেশগুলো। পরিপ্রেক্ষিতে সেসব দেশে জ্বালানি সরবরাহ কমিয়ে জবাব দিয়েছে রুশ কর্তৃপক্ষ। তাতে ইউরো অঞ্চলে ব্যাপক জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে শীতকাল ঘনিয়ে আসছে।

ফলে সেখানে তেল ও গ্যাসের চাহিদা বাড়ছে। কিন্তু সেগুলো সহজলভ্য না হওয়ায় কয়লার প্রতি ঝুঁকছে তারা।

ফলে ব্যাপক মুনাফা করছে ইন্দোনেশিয়া। ইউরোপে কয়লা রপ্তানি বাড়িয়েছে তারা। সেই সঙ্গে চীন, ভারতসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে তা সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে। স্বাভাবিকভাবেই উৎপাদন বাড়িয়েছে তারা।

সম্প্রতি নিক্কেই এশিয়াকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ইন্দোনেশিয়ার কয়লা খনি অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান পান্দু জাহরির বলেন, ভূ-রাজনৈতিক ইস্যুতে বিশ্বব্যাপী ইন্দোনেশিয়ার কয়লার চাহিদা অনেক বেড়েছে। এদেশ থেকে তা ব্যাপক আমদানি বাড়িয়েছে জার্মানি।

ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত কোম্পানির ব্যবসায়িক উন্নয়ন পরিচালক রাফলি জান্দা জানিয়েছেন, গত মার্চ থেকে জুলাইয়ের মধ্যে ইতালিতে ১ লাখ ৪৭ হাজার টন কয়লা রপ্তানি করেছে তারা।

তিনি বলেন, জার্মানি ও পোল্যান্ডের মতো ইউরোপের অন্যান্য দেশে ভালো দামে কয়লা বিক্রি করতে বাজার প্রক্রিয়াধীন করার মধ্যে রয়েছে ইন্দোনেশিয়ার কোম্পানি পিটিবিএ।

জানুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে ১৫ দশমিক ৯ মিলিয়ন টন কয়লা উত্তোলন করেছে বুকিত আসাম। ২০২১ সালের একই সময়ের যা ২০ শতাংশ বেশি।

ইন্দোনেশিয়ার সর্ববৃহৎ কয়লা উৎপাদক কোম্পানি বুমি রিসোর্সও উৎপাদনও বাড়িয়েছে। এ বছর ৮৩ মিলিয়ন টন জ্বালানি পণ্যটি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে তারা। গত বছরের চেয়ে যা ৬ শতাংশ বেশি।

আদারো এনার্জিতে বিনিয়োগকারী সম্পর্কের প্রধান মহার্দিকা পুত্রান্তো জানিয়েছেন, ২০২২ সালে ৬০ মিলিয়ন টন কয়লার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে তারা। গত বছরের চেয়ে যা প্রায় ১৪ শতাংশ বেশি।

চাহিদা বাড়ায় কয়লার দামও দ্রুতগতিতে বাড়ছে। বেঞ্চমার্ক নিউক্যাসলে জ্বালানি পণ্যটির ভবিষ্যত সরবরাহ মূল্য আকাশ ছুঁয়েছে। চলতি মাসের শুরুতে সেখানে প্রতি টন বিক্রি হয়েছে ৪৬০ ডলারে। চলতি বছরের প্রথমদিকের চেয়ে যা প্রায় তিন গুন বেশি।

কয়লার আরেক বৃহৎ উৎপাদক দেশ অস্ট্রেলিয়া। সেখানে আর্দ্র আবহাওয়ার কারণে উৎপাদন কমেছে। ফলে ইন্দোনেশিয়ার পণ্যটির চাহিদা আকাশচুম্বী হয়েছে।

দাম বাড়ায় সর্বকালের সর্বোচ্চ আয় করেছে ইন্দোনেশিয়া কয়লা খনি কোম্পানিগুলো। এ বছরের প্রথমার্ধে ৪১৫ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে পিটিবিএ। ২০২১ সালের একই সময়ের তুলনায় যা ২৪৬ শতাংশ বেশি।

আদারোর আয় ৮ গুন বেড়ে ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারে ঠেকেছে। আর বায়ান রিসোর্সের ৩ গুণ বেড়ে ৯৭০ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। আগামী বছরও এ ধারা অব্যাহত থাকতে পারে।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর