শ্রীলঙ্কায় সরকারি নিয়োগ স্থগিত

আপডেট: January 3, 2023 |

অর্থনৈতিক সংকটে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কার সরকারি খাতে ব্যয় কমানের লক্ষ্যে নতুন করে লোকবল নিয়োগ স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। সোমবার এই বিষয়ে একটি নতুন নির্দেশনাও জারি করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ঋণ পাওয়ার শর্ত পূরণে এই পদক্ষেপ নিয়েছে প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহের সরকার।

ভারত মহাসাগরের দ্বীপ দেশটিকে ২.৯ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে আইএমএফ। তবে ঋণ পাওয়ার পূর্বশর্ত হিসাবে ঋণের স্থায়িত্ব অর্জন করতে হবে। আইএমএফ থেকে ঋণ নেয়া সকল দেশকে তাদের শর্তগুলো পূরণ করতে হয়।

আইএমএফের শ্রীলঙ্কাকে দেয়া শর্তগুলো হলো, দেশটির প্রায় ১৫ লাখ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে লোক ছাঁটাই, কর বৃদ্ধি এবং লোকসানে থাকা রাষ্ট্রীয় উদ্যোগগুলোকে বিক্রি করতে বলা হয়েছে।

আইএমএফের শর্ত মোতাবেক ইতোমধ্যে সরকারি চাকরিতে অবসরের বয়স ৬৫ থেকে ৬০-এ নামিয়ে এনেছেন রাষ্ট্রপতি রনিল বিক্রমাসিংহে।

দেশটির জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে এই সিদ্ধান্তের ফলে ডিসেম্বরের শেষে রেকর্ড ২০ হাজার বেসামরিক সরকারি কর্মচারী অবসর নিয়েছেন ৷ যা স্বাভাবিকের চেয়ে আট গুণ বেশি এবং এই পদগুলোতে নতুন নিয়োগ করা হবে না বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয় ৷

এদিকে রাজস্ব বাড়ানোর জন্য নতুন বছরের প্রথম দিন থেকেই ব্যক্তিগত আয়কর এবং কর্পোরেট কর দ্বিগুণ করা হয়েছে। এছাড়াও আগস্টে ৭৫ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধির পরে বিদ্যুতের দাম ৬৫ শতাংশ বেড়েছে ৷

স্বাধীনতা লাভের পর সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। করোনা মহামারির কারণে পর্যটন ব্যবসায় ধস, জাতীয় অর্থনীতি পরিচালনায় সরকারের অদক্ষতা, বিশ্বজুড়ে জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি এবং রাষ্ট্রীয় কোষাগারে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শূন্যে নেমে যাওয়ায় শ্রীলঙ্কায় বিপর্যয়র পরিস্থিতি তৈরি হয়। যার ফলে খাদ্য, জ্বালানি এবং ওষুধের মতো জরুরি পণ্য আমদানি করতে পারছে না দেশটি।

এই পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক সংকটের পাশাপাশি রাজনৈতিক সংকটও দেখা দেয় শ্রীলঙ্কায়। ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে প্রথমে দেশটির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। পরে প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। দেশটির সংকটময় পরিস্থিতিতে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন রনিল বিক্রমাসিংহে।

বছরের প্রথম কার্যদিবসে বিক্রমাসিংহে তার কর্মীদের বলেন, জ্বালানি, খাদ্য ও সার সরবরাহ পুনরুদ্ধার করা সত্ত্বেও আমাদের সমস্যা এখনো সমাধান হয়নি। আমরা যদি এগিয়ে যেতে চাই তবে আমাদের ঋণের বোঝা কমাতে হবে।

সূত্র: এএফপি

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর