শৈলকুপায় ভেজাল বীজে মরে যাচ্ছে পেঁয়াজের চারা

আপডেট: January 18, 2023 |

টিপু সুলতান,ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকের পেঁয়াজ খেতের চারা মরে গেছে। কৃষকেরা বলছেন, উপজেলার সারুটিয়া, বগুড়া, মনোহরপুর, আউশিয়া, হরিহরা, সাতগাছিয়া, মৌকুড়ি, ভাটই, দুধস্বর, তামিনগর, ধাওড়া, পাইকপাড়া, বিজুলিয়া, দামুকদিয়া, মহিষাডাঙ্গাসহ বেশ কিছু এলাকায় মাঠে কয়েক হাজার বিঘা জমিতে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

তবে কৃষি বিভাগ বলছে শৈলকুপায় এ মৌসুমে ৯ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। ইতিমধ্যে ৮ হাজার ৭৪০ হেক্টরে চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ১০০ হেক্টর জমির চারা মরে গেছে। এদিকে ক্ষতিগ্রস্থ চাষিরা প্রতারক বীজ ব্যবসায়ীদের শাস্তি ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে গত রোববার শৈলকুপা শহরের কৃষি অফিসের সামনে বিক্ষোভ করেন।

এ ঘটনায় কৃষি বিভাগ ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। মনোহরপুর গ্রামের কৃষক স্বপন মিয়া বলেন, তাঁরা নভেম্বর মাসে বীজ কিনে বীজতলা তৈরি করেন।

ডিসেম্বরের শেষ ও জানুয়ারির শুরুতে চারা জমিতে রোপণ করেন। এক সপ্তাহের মধ্যে এসব চারা সবুজ তরতাজা গাছ হয়ে যাওয়ার কথা।

কিন্তু তা হয়নি। এক বিঘা জমির পেঁয়াজের চারা নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি রতনাট গ্রামের খবির উদ্দিনের কাছ থেকে খোলা প্যাকেটের বীজ কিনেছিলেন।

হরিহরা গ্রামের জাহিদুল ইসলাম বলেন, তিনি এক কেজি বীজ কিনেছিলেন চার হাজার টাকায়। খেতে চারা লাগাতে আরও ছয় হাজার টাকা লেগেছে। তাঁর এক বিঘা জমির পেঁয়াজের গাছ মরে গেছে।

কৃষকেরা বলেন, শৈলকুপায় পেঁয়াজের চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে একটি সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। তারা কৃষকের ঘরে সংরক্ষিত বীজ বলে এলাকায় খোলা বীজ বিক্রি করেন। সেই বীজ কিনে কৃষকেরা লোকসানে পড়েছেন।

উপজেলার মহিষাডাঙ্গা গ্রামের কৃষক বিজন বিশ্বাস বলেন, তিনি ৬ হাজার টাকা কেজি দরে ১২ কেজি বীজ কিনেছিলেন।

তাঁকে বলা হয়েছিল এটি ভারতীয় লাল তীর জাতের পেঁয়াজ। কিন্তু চারা লাগানোর পর মরে গেছে। এখন বুঝতে পারছেন এটা ভেজাল বীজ।

এ বিষয়ে বীজ বিক্রেতাদের একজন খবির উদ্দিন মুঠোফোনে বলেন, তিনি পাশ্ববর্তী পাংশা উপজেলা থেকে বীজ এনে বিক্রি করেছেন। তাঁরা ভালো বীজ বলেই বিক্রি করেছেন।

এখন গাছ কেন মারা যাচ্ছে, তা বুঝে উঠতে পারছেন না। তবে তিনি যে কৃষকের কাছে বীজ বিক্রি করেছেন, তাঁদের সাধ্যমতো ক্ষতিপূরণ দিয়ে দেবেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনিছুজ্জামান খান বলেন, কৃষকদের অভিযোগের পর তাঁরা রোববার উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা আবুল হাসনাতকে আহ্বায়ক করে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত দল গঠন করেছেন।

সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর