মাদারীপুর প্রতিনিধিঃ মাদারীপুরের রাজৈরে দাহ্য পদার্থ ঢেলে আগুন দিয়ে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ ওঠা স্বামী আফিদুল ইসলামের শাস্তির দাবি জানিয়ে চিরবিদায় নিলেন এক গৃহবধূ।
শুক্রবার গভীর রাতে উপজেলার বদরপাশা ইউনিয়নের কাজী কাঁঠাল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মুমূর্ষু অবস্থায় স্ত্রী মাহামুদা আক্তারকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করার পর শনিবার (২০ মে) দুপুরে তার মৃত্যু হয়।
নিহত মাহামুদা আক্তার (২৫ ) ওই গ্রামের আনোয়ার কাজীর মেয়ে।
পুলিশ ও ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, মাহামুদা আক্তারের পাঁচ বছর আগে একটি বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের দুই মাস যেতে না যেতেই স্বামী স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে।
এর কিছুদিন পর টাঙ্গাইলের ভুয়াপুর এলাকার আফিদুল ইসলাম নামে এক যুবকের সঙ্গে মুঠোফোনের মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে মাহামুদার। এই প্রেমের সম্পর্কের জের ধরেই দুই বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। আগের বিয়ের কথা স্বামীর কাছে গোপন করে মাহামুদা।
বিয়ের এক বছর পর স্বামী তার আগের বিয়ের কথা জানতে পেরে ও টেকেরহাট একটি প্রাইভেট হাসপাতলে চাকরি করতে নিষেধ করা নিয়ে স্বামী স্ত্রীর মাঝে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়।
এরই জের ধরে স্বামী আফিদুল ইসলাম ও তার লোকজন শুক্রবার রাত ৩টার দিকে দাহ্য পদার্থ ঢেলে আগুন দিয়ে ঝলসে দেয় বলে পরিবারের দাবি।
পরে মুমূর্ষু অবস্থায় প্রথমে রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেলে প্রেরণ করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার দুপুরে তার মৃত্যু হয়।
নিহত মাহামুদার বাবা আনোয়ার কাজী জানায়, দীর্ঘদিন ধরে আমার জামাইয়ের সঙ্গে মেয়ে মাহামুদার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল।
এরই জের ধরে জামাই ও তার লোকজন আমার মেয়েকে শুক্রবার গভীর রাতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মেরে ফেলেছে। আমি এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।
মাহামুদার মা জাহেদা বেগম জানান, আমি রাত তিনটার সময় ছাগলের বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর জন্য বাইরে বের হই। তখন আমি ব্রিজের ওপর দুজন লোক দেখি। তার কিছুক্ষণ পর দেখি ঘরের বাতি নিভানো। তার কিছুক্ষণ পরই আমার মেয়ে চিৎকার করে বলছে আমাকে আগুন দিয়েছে। আমাকে বাঁচাও।
মেয়ের চিৎকার শুনে ওর বাবা গিয়ে পানি দিয়ে আগুন নিভায়। এর মধ্যে ওর শরীরের অধিকাংশ অংশ পুড়ে যায়। আমার ধারনা আমার জামাই ও তার লোকজন আমার মেয়েকে পুড়িয়ে মেরে ফেলেছে। আমি এর বিচার চাই।
মৃত্যুর আগে মাহামুদা জানায়, আমার স্বামী শুক্রবার রাতে তরল কিছু ছিটিয়ে আমার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। আমি মরে গেলেও আপনারা ওকে ছাড়বেন না।
রাজৈর থানার ওসি (তদন্ত) সঞ্জয় কুমার ঘোষ জানান, মাহামুদা আক্তার নামের একজনের গায়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আলামত সংগ্রহ করেছি। তাদের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সম্পাদকীয় : নাহার ম্যানশন (৩য় তলা), ১৫০ মতিঝিল ঢাকা।
নিউজ ও কমার্শিয়াল : মুন কমপ্লেক্স (৩য় তলা) ৫৯/১, পাটুয়াটুলি, ঢাকা।
ই-মেইল: boishakhinews24.net@gmail.com
হট লাইন: ০১৬৮৮৫০৫৩৫৬
https://www.boishakhinews24.net/