শিল্পকলায় শুরু হলো শাস্ত্রীয় সংগীত ও নৃত্য উৎসব

আপডেট: July 14, 2023 |

দেশবরেণ্য শাস্ত্রীয় শিল্পীদের নিয়ে জাতীয় সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে দুদিন ব্যাপী থাকছে শাস্ত্রীয় সংগীত ও নৃত্য উৎসব। আগামী ১৫ জুলাই, শনিবার ২০২৩ সমাপনী দিনের অনুষ্ঠান শুরু হবে বিকাল ৫.০০টায়।

শাস্ত্রীয় সংগীত এবং নৃত্য অতি প্রাচীন শিল্প এবং এর পেছনে রয়েছে তিন হাজার বছরের পুরনো ঐতিহ্য যা বর্তমান সময়ে প্রচলিত সকল ধরনের সংগীত এবং নৃত্যের অন্যতম ভিত্তি। প্রাচীন পন্ডিতগণ নান্দনিক উপভোগের জন্য শারীরিক উদ্দীপকগুলি  অধ্যয়ন করে আবেগের প্রকৃতি এবং ভাব বিশ্লেষন করে গেছেন; বিশ্লেষণ করেছেন এই ধরনের আবেগের দৃশ্যমান লক্ষণ এবং প্রতিক্রিয়া; এমনকি অবচেতন মনের প্রকৃতি,অনৈচ্ছিক আবেগ (সাত্ত্বিকভাব)। তারা শাস্ত্রীয় সংগীত ও নৃত্যের মাধ্যমে প্রকাশ ঘটান এ আবেগের।

শাস্ত্রীয় সংগীত এবং নৃত্য কেবল ব্যাকরণ নয়, এটি একটি বিস্তৃত পরিপূর্ন শিল্প মাধ্যম যা যৌন্দর্য এবং শক্তির সূক্ষ্ণ প্রকাশ ঘটায়। শাস্ত্রীয় সঙ্গীত এবং নৃত্য এক প্রকার ধ্যান এবং প্রার্থনা যা আমাদের মনকে শান্ত রাখে। রাগ ও তাল শাস্ত্রীয় সঙ্গীত এবং নৃত্যের ভিত্তি । কঠোর অধ্যবসায় এবং সাধনার মাধ্যমে একজন শিল্পী নিজেকে শাস্ত্রীয সংগীত এবং নৃত্য পরিবেশনার উপযোগী করে গড়ে তোলেন।

শাস্ত্রীয় সংগীত এবং নৃত্যের প্রসার, প্রচার ও নতুন প্রজন্মের শিল্পীদের শাস্ত্রীয় সংগীত এবং নৃত্যের চর্চায় আরো উৎসাহী করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে সংগীত, নৃত্য এবং আবৃত্তি বিভাগের ব্যবস্থাপনায় ১৪-১৫ জুলাই, ২০২৩ দুদিনব্যাপী শাস্ত্রীয় সংগীত ও নৃত্য উৎসবের করা হয়েছে । আজ শুক্রবার বিকেল ৫.৩০টায় জাতীয় সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে‘ শাস্ত্রীয় সংগীত ও নৃত্য উৎসব ২০২৩’ প্রথম দিনের আয়োজনের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক জনাব লিয়াকত আলী লাকী। প্রদীপ প্রজ্জোলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়। দুদিনব্যাপী এ উৎসবে দেশবরেণ্য বিশিষ্ট শাস্ত্রীয় সংগীত এবং নৃত্যশিল্পীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেছেন।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী বক্তব্যে মহাপরিচালক বলেন, ’প্রতিমাসে একবার করে শাস্ত্রীয় সংগীত, নৃত্যের আয়োজন করা হবে। দেশের প্রতিটি জেলায় এধরনের কার্যক্রম ছড়িয়ে দিতে নানামুখী কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। আমরা প্রতিটি জেলায় কমপক্ষে ১০০০ শির্ক্ষাথী তৈরীর লক্ষ্য মাত্রা দিয়েছি। কোন কোন জেলায় তা ৩ হাজার ছাড়িয়েছে। সুতরাং আমাদের কার্যক্রম অব্যাহতভাবেই আমরা এগিয়ে নিচ্ছি”।

২০২৪ সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ৫০ বছর পূর্তিতে আরো বড় পরিসরে শাস্ত্রীয় সংগীত ও নৃত্য উৎসবের ঘোষণা দেন মহাপরিচালক। ধর্মের সাথে সংস্কৃতি চর্চার কোন বিরোধ নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এসময় সংগীত, নৃত্য এবং আবৃত্তি বিভাগের পরিচালক ও একাডেমির অনান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

শাস্ত্রীয় সংগীত ও নৃত্য পরিবেশনার শুরুতেই ছিলো ওডিসি পরিবেশনা। দলীয় এ নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্যছন্দ। এর পরে কত্থক পরিবেশন করেন মন্দিরা চৌধুরী। শাস্ত্রীয় সংগীত পরিবেশন করেন রেজওয়ান আলী লাভলু ও কানিজ হুসনা আহমেদী । এর পরে ভরতনাট্যম পরিবেশন করেন জুয়েইরিয়াহ মৌলি এবং কত্থক পরিবেশনায় স্নাতা শাহরিন।

শাস্ত্রীয় সংগীত পরিবেশন করেন অন্তরা মন্ডল এবং বিটু শীল। মনিপুরি নৃত্য পরিবেশন করবেন বাবরুল আলম চৌধুরী এ্বং গৌড়িও নৃত্য এগনেস র‌্যাচেল প্রিয়াংকা। এরপর শাস্ত্রীয় সংগীত রেজওয়ানুল হক এবং প্রিয়াংকা গোপ।

আবারো কত্থক পরিবেশনা, পরিবেশন করেন অন্যতম বরেণ্য শাস্ত্রীয় নৃত্যশিল্পী সাজু আহমেদ। মনিপুরি পরিবেশন করেন বরেণ্য শাস্ত্রীয় শিল্পী তামান্না রহমান । কত্থক পরিবেশন করেন অন্যতম বরেণ্য শিল্পী মুনমুন আহমেদ।

এর পরে সংগীত পরিবেশন করেন ফকির শহিদুল ইসলাম ও পূর্ন চন্দ্র মন্ডল। মনিপুরি নৃত্য পরিবেশন করেন মনোমী তানজানা অর্থী এবং ভরতনাট্যম পরিবেশন করেন মোহনা মীম।

কত্থক পরিবেশন করেন মো. মাসুম হোসাইন । পরে শাস্ত্রীয় সংগীত পরিবেশন করবেন অসিত দে এবং সুস্মিতা দেবনাথ। শেষে পরিবেশিত হয় ভরতনাট্যম, পরিবেশনায় সালমা বেগম মুন্নি এবং দলীয় কত্থক পরিবেশনায় নৃত্যকলা বিভাগ, রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর