ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি: দ্বৈত নাগরিক হওয়ার অভিযোগ উঠেছে ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামীম হক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল কাদের আজাদ (এ কে আজাদ) এর বিরুদ্ধে।
একে অপরের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ তুলেছেন দুই প্রার্থী।
আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শামীম হক জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদ জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি।
দ্বৈত নাগরিকত্বের অভিযোগে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হকের দলীয় মনোনয়নপত্র বাতিল চেয়ে জেলা রিটার্নিং অফিসার বরাবর আবেদন করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল কাদের আজাদ (এ কে আজাদ) ও মো. ফারুক হোসেন।
ওই সময়েই আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামীম হকের পক্ষ থেকেও স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল কাদের আজাদের (এ কে আজাদ) বিরুদ্ধেও দ্বৈত নাগরিক হওয়ার অভিযোগ এনে মনোনয়ন বাতিল চেয়ে আবেদন করা হয়।
সোমবার (৪ ডিসেম্বর) মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইকালে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হকের দলীয় মনোনয়নপত্র বাতিল চেয়ে জেলা রিটার্নিং অফিসার বরাবর আবেদন করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদ ও মো. ফারুক হোসেন।
ওই সময়েই আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামীম হকের পক্ষ থেকেও স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল কাদের আজাদের (এ কে আজাদ) বিরুদ্ধেও দ্বৈত নাগরিক হওয়ার অভিযোগ এনে মনোনয়ন বাতিল চেয়ে আবেদন করা হয়।
এব্যাপারে আবেদনকারী দুই প্রার্থীকে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
সেইসঙ্গে রিটার্নিং অফিসার শামীম হক ও একে আজাদের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন।
তাদের বিরুদ্ধে দ্বৈত নাগরিকত্বের অভিযোগ উঠায় ওক্ত ঘটনায় ওই আসনের সাধারণ ভোটারদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
বিষয়টি নিয়ে জেলাজুড়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
জানা যায়, শামীম হক নেদারল্যান্ডে থাকার সময় দীর্ঘদিন অল ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।
এই পদে থাকতে হলে যেকোনো ব্যক্তিকে ওই দেশের নাগরিক হতে হয়। প্রবাস রাজনীতিতে দলীয় পদ পদবি পেতে হলে স্ব-স্ব দেশের ভোটার ও বৈধ নাগরিক হতে হয়।
রিটার্নিং অফিসার বরাবর জমা দেওয়া আবেদনে বলা হয়েছে, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য সংসদীয় ২১৩ ফরিদপুর-৩ আসনে শামীম হক মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন, যিনি একজন ইউরোপীয় ইউনিয়নের পাসপোর্টধারী দ্বৈত নাগরিক, যাহা বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদের ‘গ’ ধারা অনুযায়ী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
উক্ত প্রার্থীর দ্বৈত নাগরিকত্ব ত্যাগের প্রমানপত্র দেখাতে না পারলে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করার বিনীত অনুরোধ করছি।
চিঠির একটি অনুলিপি নির্বাচন কমিশন সচিবালয় বরাবরও পাঠানো হয়েছে।
অভিযোগ করা হয়, শামীম হক একই সঙ্গে নেদারল্যান্ডস ও বাংলাদেশের নাগরিক। তিনি ডাচ পাসপোর্টধারী ও ভোটার।
অপরদিকে আব্দুল কাদের আজাদের বিরুদ্ধেও তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের দ্বৈত নাগরিক বলে অভিযোগ করা হয়।
এ ব্যাপারে শামীম হক বলেন, আমি নেদারল্যান্ডসের নাগরিক ছিলাম। কিছুদিন আগে সারেন্ডার করেছি। যাবতীয় কাগজপত্র আমার কাছে আছে। এখন শুধুমাত্র বাংলাদেশের নাগরিক আমি।
তিনি আরও বলেন, ‘সংসদ নির্বাচনে দ্বৈত নাগরিকদের নির্বাচন করার সুযোগ নেই বিষয়টি আমি জানতাম।
এ কারণে আগে থেকেই নেদারল্যান্ডসের নাগরিকত্ব সারেন্ডার করেছি। নির্বাচন কমিশন চাইলে আমি আমার কাগজপত্র দাখিল করব।
অপরদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল কাদের আজাদ (এ কে আজাদ) বলেন, দ্বৈত নাগরিকত্ব নিয়ে আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে সেটি মোটেও সত্য নয়। আমি বাংলাদেশের নাগরিক। অন্য কোনো দেশের নাগরিকত্ব নেই আমার।
তিনি আরও বলেন, আমি কোনোদিন অন্য কোনো দেশের নাগরিকত্ব লাভের জন্য আবেদনও করিনি।
আমি বাংলাদেশের পাসপোর্ট হোল্ডার। বিদেশের কোনো ব্যাংকে আমার অ্যাকাউন্টও নেই।
উল্লেখ্য, সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে বলা আছে, জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হতে হলে আগ্রহী প্রার্থীকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হওয়া ছাড়াও বয়স ২৫ বছরের ঊর্ধ্বে হতে হবে।
এ ছাড়া অপ্রকৃতিস্থ, দেউলিয়া কিংবা দ্বৈত নাগরিকত্ব প্রার্থীর অযোগ্যতা বলে বিবেচিত হবে।
৬৬ ধারায় আরও উল্লেখ আছে, কোনো ব্যক্তি জন্মসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করলে ও পরবর্তীতে ওই ব্যক্তি দ্বৈত নাগরিকত্ব গ্রহণের ক্ষেত্রে, বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ত্যাগ করলে; কিংবা অন্য ক্ষেত্রে পুনরায় বাংলাদেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করলে তিনি বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করেছেন বলে গণ্য হবে না।
সম্পাদকীয় : নাহার ম্যানশন (৩য় তলা), ১৫০ মতিঝিল ঢাকা।
নিউজ ও কমার্শিয়াল : মুন কমপ্লেক্স (৩য় তলা) ৫৯/১, পাটুয়াটুলি, ঢাকা।
ই-মেইল: boishakhinews24.net@gmail.com
হট লাইন: ০১৬৮৮৫০৫৩৫৬
https://www.boishakhinews24.net/