দেব্রত মন্ডল, আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি: জয়পুরহাটের আক্কেলপুরের ভিকনী গ্রামে পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে মৃত্যু অপর দিকে স্বামী বিষপান করে হাসপাতালে ভর্তি হবার ঘটনাটি ঘটেছে।

মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের ভিকনী গ্রামে একই উপজেলার ছাট অনন্তপুর গ্রামের মোস্তফার মেয়ে সুমি (৩০) নিজ শয়নকক্ষে বাঁশের তিরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে অপর দিকে স্বামী আইয়াব (৩৫) তা সহ্য করতে না পেরে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে বর্তমানে সে আক্কেলপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন।

এলাকাবাসি ও পুলিশ জানায়, স্ত্রী সুমি ও স্বামী আইয়াব এদের মধ্যে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকতো। দিনমজুর আইয়াব সকালের খাবার খেয়ে প্রতিদিনের ন্যায় মাঠে কাজ করতে যায়।

কাজ শেষে দুপুরে বাড়ি ফিরে এসে তাদের একমাত্র কন্যা ভিকনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী স্বর্ণা (১১) কে জিজ্ঞাসা করে, তার মা কই? স্বর্ণা বলে, মা ঘরে শুয়ে আছে। ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল।

বাহির হতে ডাকা ডাকি করলে কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে স্বামী আইয়াব খিল দেওয়া দরজায় ধাক্কা ধাক্কি করে দরজা ভেঙে, বাঁশের তিরের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় স্ত্রী সুমিকে দেখতে পায়।

এদেখে তিনি চিৎকার ও কান্না কাটি করে। বাড়িতে থাকা জমিতে দেওয়া কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে। এলাকাবাসি সঙ্গে সঙ্গে তাকে আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে আসেন।

জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ভর্তি করিয়ে পাকস্থলি পরিস্কার (ওয়াশ) করেন। বর্তমানে সে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।

সুমির মামাতো ভাই মোঃ মিন্টু বলেন, আমার বোনের সাথে ভিকনী গ্রামের মনছুর আলীর পুত্র আইয়াবের প্রায় ১৩ বছর আগে বিবাহ হয়।

বিবাহের পর থেকে সংসারে অভাব-অনটনের মধ্যে দিয়েও তাদের বৈবাহিক জীবন ভালোভাবে কাটছিল। কিন্তু কিছু দিন থেকে তাদের মধ্যে পরকীয়া ও বিভিন্ন কারণে আমার বোনের সঙ্গে আইয়াবের ঝগড়া ঝাটি লেগেই থাকতো।

আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে সুমির লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে।

প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে, পরকীয়া ও অভাব-অনটনের কারণে এই আত্মহত্যা ঘটতে পারে। সুমির লাশ ময়না তদন্তের জন্য জয়পুরহাট জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে আক্কেলপুর থানায় সুমির ভাই মোঃ নাসির উদ্দীন একটি মামলা দায়ের করেছেন। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে জানা যাবে প্রকৃত ঘটনা।