ইবিতে সিকিউরিটি অফিসারের বিরুদ্ধে শিক্ষিকার হয়রানির অভিযোগ

আপডেট: April 24, 2024 |

ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জয়শ্রী সেনের পারিবারকে হয়রানি ও অসম্মানজনক আচরণের অভিযোগ উঠেছে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। অসাধাচরণের অভিযোগ ওঠা এ কর্মকর্তার নাম আব্দুস সালাম ওরফে সেলিম।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষক। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি, প্রক্টর, বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও শাপলা ফোরামের প্রতিও অভিযোগের অনুলিপি পাঠানো হয়।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, গত ১৪ এপ্রিল দুপুর আনুমানিক ১২টা ১৫ মিনিটে ছেলে সন্তানকে সাথে নিয়ে মোটর বাইকে করে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছিলেন তার স্বামী। এসময় মেইনগেট অতিক্রমকালে উপস্থিত নিরাপত্তা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম (সেলিম) তাদেরকে আপত্তিকর কথাবার্তা বলে চরমভাবে অপমান করেন। স্বামীর সামনে তাকেও অপমানজনক কথাবার্তা বলেছেন বলে অভিযোগ পত্রে তুলে ধরেন তিনি।

অভিযোগ পত্রে আরও উল্লেখ করেন যে, এ ঘটনায় তিনি একজন শিক্ষক হিসাবে চরমভাবে অপমানিত। সর্বোপরি ঘটনাস্থলে শিক্ষিকার ছেলে তার বাবার সাথে ছিল। বিশ্ববিদ্যাদয়ের একজন শিক্ষক এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রাক্তন গ্রাজুয়েট সন্তান হিসাবে মেইন গেটে এমন হয়রানি ও অপমানজনক আচরণে সে (স্বামী) মানসিকভাবে ভীষণ আঘাত পেয়েছে।

এ বিষয়ে প্রক্টরের কাছে অভিযোগ দিলেও সম্মানজনক কোন সমাধান পাননি বলে দাবি করেন তিনি। বাধ্য হয়ে অভিযোগ দায়ের করেন বলেও জানান তিনি।

সহযোগী অধ্যাপক জয়শ্রী সেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবারের সম্মানার্থে আমি এতদিন ধৈর্য ধরে ছিলাম। ভেবেছিলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এর একটা বিচার করবে। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় তারা বিষয়টি নিয়ে কোন সম্মানজনক সমাধানের ব্যবস্থা করে নাই। এটা শিক্ষক সমাজের জন্য অপমান ও ন্যাক্কারজনক ঘটনা।

জয়শ্রী সেন আরও জানান, ঐ দিন আমার স্বামী সন্তানকে নিয়ে তার মায়ের বাসায় যাচ্ছিলেন। এসময় মেইনগেটে নিরাপত্তা কর্মকর্তা তাকে থামিয়ে অকারণে আপত্তিকর ও অসম্মানজনক কথাবার্তা বলেন। এ নিয়ে প্রক্টরের কাছে মৌখিকভাবে জানালেও কোন সম্মানজনক সমাধান পাইনি।

এবিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, সেলিম উচ্চমান সহকারী হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় যোগদান করে। এরপর পদোন্নতি পেয়ে এক সময় সে নিরাপত্তা কর্মকর্তা হয়েছে। এ দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই তার বেপরোয়া আচরণের মাধ্যমে অনেকে অসম্মানিত হয়েছেন। এর আগেও খারাপ ভাষা ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের অপদস্ত করার রেকর্ড রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে নিরাপত্তা কর্মকর্তা সেলিম বলেন, প্রত্যক্ষদর্শী অনেকের সাথে কথা বললে আসল সত্য সামনে আসবে। বলতে গেলে ইদের পর বহিরাগতদের চাপে মেইনগেটে অনেক ভীড় থাকে। ম্যামের স্বামী বাইক নিয়ে ঢোকা বা বের হওয়ার সময় বাইকের হর্ন বাজিয়ে মেইনগেটে উপস্থিত দারোয়ানদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে মেইনগেট খুলে দিতে বলেন। ছোট গেট দিয়েও তিনি বাইক নিয়ে যেতে পারতেন। তার স্বামীর সাথে কোনো খারাপ ব্যবহার করিনি। আমি শুধু আমার দায়িত্ব পালন করেছি। বিষয়টা সঠিক তদন্ত করা হোক।

প্রক্টর বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট সবার সাথে কথা বলা হচ্ছে। আমার পক্ষে যতটুকু সম্ভব করে যাচ্ছি।

রেজিস্টার (ভারপ্রাপ্ত) এইচ এম আলী হাসান বলেন, অভিযোগপত্রটি গতকাল হাতে পেয়েছি। শিক্ষকের বিষয় যেহেতু সেনসিটিভ। অভিযোগটি শীঘ্রই উপাচার্যের কাছে হস্তান্তর করা হবে এবং তিনিই যা ব্যবস্থা নেওয়ার নিবেন।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর