শাহজাহান আলী,বগুড়া জেলা প্রতিনিধিঃ বগুড়ার দুপচাঁচিয়া থানাধীন জয়পুরপাড়া এলাকায় আজিজিয়া মঞ্জিল নামে নিজ বাসায় গৃহবধূ উম্মে সালমা খাতুনকে (৫০) নিঃসৃতিভাবে শ্বাসরোধে হত্যা করে তারই আপন ছোট ছেলে সাদ বিন আজিজুর রহমান(১৯)।
১২ নভেম্বর (মঙ্গলবার) রাত সোয়া ১ টার দিকে উম্মে সালমার হত্যাকারী সন্দেহে ভিকটিমের ছোট ছেলে সাদ বিন আজিজুর রহমানেকে বগুড়া জেলার কাহালু উপজেলাধীন পাঁচপীর আড়োবাঢী একাকার জনৈক মোঃ রমজান মোল্লা(আসামীর দাদ) এর বাড়ি থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসে র্যাব।
র্যাব-১২ বগুড়ার কোম্পানি কমান্ডার মোঃ এহতেশামুল হক খান এর স্বাক্ষরিত পাঠানো এক প্রেস রিলিজে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
র্যাবের পাঠানো প্রেস রিলিজে বলা হয়, গত ১০ নভেম্বর বগুড়া জেলার দুপচাঁচিয়া থানার জয়পুরপাড়া এলাকায় আজিজিয়া মঞ্জিল নামে নিজ বাসয় গৃহবধূ উম্মে সালমাকে হত্যা করে হাত- পা বেধেঁ ডিপ ফ্রিজে রাখার ঘটনা ঘটে।
এই নৃশংস ও বর্বরোচিত ঘটনার পরেই র্যাব-১২ বগুড়ার ক্রাইম সিন পরিদর্শন করে ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও ঘটনার সাথে জড়িত আসামীদের গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে ছায়া তদন্তসহ অভিযান পরিচালনা করে।
একপর্যায়ে ১২ নভেম্বর রাত সোয়া ১টার দিকে র্যাব-১২ বগুড়া, ভিকটিম সালমার ছোট ছেলে মোঃ সাদ বিন আজিজুর রহমানে কাহালু উপজেলাধীন পাঁচপীর আড়োবাড়ী জনৈক মোঃ রমজান মোল্লা ( আসামীর দাদা) এর বাড়ি থেকে ভিকটিমকে হত্যাকারী সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়।
এরপর তাকে ব্যাপোক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ঘটনার দিন সকালে নিহত সালমা খাতুনের সঙ্গে তার ছোট ছেলে সাদ বিন আজিজুর রহমানের হাত খরচার টাকা নিয়ে বাকবিতন্ডা হয়।
পর আসামী রাগ করে সকালের নাস্তা না খেয়ে তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দুপচাঁচিয়া দারুসসুন্নাহ কামিল মাদ্রাসায় ক্লাস করার জন্য চলে যায়।
সকাল ১১টায় ক্লাসের বিরতি হলে মাদ্রাসার আশেপাশে এবং তার বাসার,কাছাকাছি এলাকায় ঘুরে বেড়ায়।
সময় অনুমান সাড়ে ১২ টার,দিকে আসামী সাদ বিন আজিজুর রহমান বাসায় প্রবেশ করে দেখতে পায় তার মা উম্মল সালমা একাই বাসায় বসে বটি দিয়ে মিষ্টি কুমড়ার তরকারি কাটাকাটি করছে।
এমতাবস্থায় ছেলে সাদ বিন আজিজুর রহমান পূর্ব পরিকল্পিত অনুযায়ী তার মায়ের পিছন দিক থেকে নাক- মুখ চেপে ধরে ধস্তাধস্তি শুরু করে।
ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তার মা বাঁচার চেষ্টা করতে থাকলে তার,হাতের তর্জনী আঙ্গুলের নীচে কেটে,যায়। পরে আসামী তার সর্বশক্তি প্রয়োগ করে মা সালমার নাক-মুখ দুই হাত দিয়ে,চেপে ধরে শ্বাসরোধে মৃত নিশ্চিত করে।
এরপর আসামী তার মা উম্মে সালমা খাতুনের দুই হাত,ওড়না দিয়ে বেঁধে বাসায় থাকা ডিপ ফ্রিজে রেখেন।
এই হত্যাকান্ডটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য বাসয় থাকা কুড়াল দিয়ে তার মা-বাবার,বেড রুমে থাকা আলমারিতে কয়েকটি কোপ মেরে কুড়ার সেখানে রেখে বাসার,মেইন গেটে তালা দিয়ে বের হয়ে যায়।
এর কিছুক্ষণ পর আসামী নিজেই আবার মেইন গেটের তালা খুলে বাসায় প্রবেশ করে,তার বাবা দুপচাঁচিয়া দারুসসুন্নাহ কামিল মাদ্রাসার ভাইচ প্রেন্সিপাল আজিজুর রহমানকে(৫৬) ফোন করে জানায় যে,তার মা কে বাসায় পাওয়া যাচ্ছেনা।
ফোনে কথা বলার ৩-৪ মিনিটের মধ্যেই আজিজুর রহমান বাসায় চলে আসপন। কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে উম্মে সালমার ভাইদের ফোন করে।
ফোন পেয়ে ভিকটিমের ছোট ভাইসহ প্রতিবেশী আরও অনেকেই বাসায় আসেন।
এসময় আসামী সাদ বিন আজিজুর রহমান সু-কৌশলে তার বাবা এবং দুই মামকে দিয়ে ছাদ ও বাসার ভিতর সমস্ত জায়গায় খোঁজাখুঁজি করার অভিনয় শুরু করে।
এর একপর্যায়ে আসামী সাদ বিন আজিজুর রহমান ডিপ ফ্রিজের ঢাকনা খুলে তার মায়ের মরদেহ উদ্ধার করে এবং ডাকাত দল এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে।
র্যাব-১২, বগুড়ার কোম্পানি কমান্ডার মেজর মোঃ এহতেশামুল হক খান জানান,গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বগুড়া জেলার দুপচাঁচিয়া থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
সম্পাদকীয় : নাহার ম্যানশন (৩য় তলা), ১৫০ মতিঝিল ঢাকা।
নিউজ ও কমার্শিয়াল : মুন কমপ্লেক্স (৩য় তলা) ৫৯/১, পাটুয়াটুলি, ঢাকা।
ই-মেইল: boishakhinews24.net@gmail.com
হট লাইন: ০১৬৮৮৫০৫৩৫৬
https://www.boishakhinews24.net/