মোহাম্মদ রেজাউল করিম, চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসনের  শিক্ষার্থীবান্ধব উদ্যোগগুলো সুন্দর করে জাতির সামনে তুলে ধরার আহ্বান জানিয়েছেন চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার।

রবিবার(১ জুন) দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জীববিজ্ঞান অনুষদের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত চবি সাংবাদিক সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভা ও দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে চবি উপাচার্য এ আহ্বান জানান।

উপাচার্য বলেন, অত্যন্ত সুন্দর গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চবি সাংবাদিক সমিতির নির্বাচনে নতুন নেতৃবৃন্দ দায়িত্ব নিয়েছেন।

এজন্য তাদেরকে আন্তরিক অভিনন্দন। একটি সংকটপূর্ণ সময়ে চবিসাসের দায়িত্ব পালন করায় তিনি সাবেক কমিটির নেতৃবৃন্দকেও ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান তিনি।

তিনি সাংবাদিকদের পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান। তিনি ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের সিরিজ রিপোর্ট করার অভাব রয়েছে বলে মন্তব্য করেন।

তিনি আরও বলেন, সাংবাদিকরা তাদের লেখালেখির মাধ্যমে সমাজ, বিশ্ববিদ্যালয় তথা রাষ্ট্রের অসংগতিগুলো যেমন তুলে ধরবেন, তেমন বিশ্ববিদ্যালয় ও রাষ্ট্রের অর্জনগুলোও প্রচার করবেন।

তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সেবা বৃদ্ধির বিষয়ে চবি সাংবাদিক সমিতিকে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের অংশ হিসেবে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চবি উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন, চবি বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আল-আমীন, চবি জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. গোলাম কিবরিয়া এবং চবি রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।

উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) বলেন, সংবাদপত্র হচ্ছে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। তিনি হলুদ সাংবাদিকতার কঠোর সমালোচনা করে বলেন, সাংবাদিকদের পেশাদারিত্বের সঙ্গে ভূমিকা পালনের মাধ্যমে বাংলাদেশের সমস্যাগুলো নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।

সাংবাদিকদের লেখনীর মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখতে হবে। উপ-উপাচার্য সঠিক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের মাধ্যমে সংবাদ পরিবেশনের জন্য সাংবাদিকদের পরামর্শ দেন।

একইসাথে জুলাই বিপ্লবপরবর্তী নতুন বাংলাদেশের নির্মাণে সাংবাদিকদের অগ্রণী ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।

উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) বলেন, স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশে যেভাবে সাংবাদিকতার উন্নয়ন হওয়ার কথা ছিল, সেভাবে হয়নি।

দলীয় সরকারের আমলে কিছু সাংবাদিক তাদের পেশাদারিত্ব ভুলে গিয়ে হলুদ সাংবাদিকতায় লিপ্ত হন-এটি জাতির প্রত্যাশা নয়।

‘জুলাই বিপ্লব’-এ চবি সাংবাদিক সমিতির পেশাদারিত্বের প্রশংসা করে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষের নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলা এবং সত্য ও ন্যায়ের ভিত্তিতে সংবাদ পরিবেশন করাই সাংবাদিকদের কাজ।

তিনি চবি সাংবাদিক সমিতিকে নতুন সাংবাদিক তৈরির আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চবি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মো. এনায়েত উল্ল্যাহ পাটোয়ারী, চবি প্রক্টর প্রফেসর ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ, ছাত্র-ছাত্রী পরামর্শ ও নির্দেশনা পরিচালক ড. মো. আনোয়ার হোসেন, চবি প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর ও হালদা ল্যাবরেটরির পরিচালক ড. মো. মনজুরুল কিবরীয়া, চবি যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও চবি তথ্য ও ফটোগ্রাফি শাখার প্রশাসক ড. মো. শহীদুল হক এবং একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও চবিসাসের সাবেক সভাপতি জনাব শাহাব উদ্দিন।

চবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আজহারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক রোকনুজ্জামানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চবিসাসের নবনির্বাচিত সভাপতি মো. জানে আলম, সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ এমরান হোসেন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির চবি শাখার সভাপতি মোহাম্মদ ইব্রাহীম এবং বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় সংগঠক রশিদ দিনার।

অনুষ্ঠানে চবি সাংবাদিক সমিতির নবনির্বাচিত কার্যকরী পরিষদের পক্ষে অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তব্য রাখেন ওবায়দুর রহমান তারিফ এবং বিদায়ী সদস্যদের পক্ষে আসাদুজ্জামান নূর।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে সাবেক কমিটির কার্যকরী সদস্যদেরকে উপাচার্য সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করেন।

অনুষ্ঠানে চবি সাংবাদিক সমিতির ১৩ জন সদস্যকে উপাচার্য সমিতির পক্ষ থেকে ক্রেস্ট প্রদান করেন।

উপাচার্য, উপ-উপাচার্যদ্বয় ও অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে চবি সাংবাদিক সমিতির প্রকাশিত বার্ষিক স্মারক ‘অভ্যুদয়’-এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

অনুষ্ঠানে মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডে ফিচার ক্যাটাগরিতে মো. রোকনুজ্জামান ১ম ও মো. মাসুদ ২য় স্থান এবং অনুসন্ধানী ক্যাটাগরিতে আহমেদ জুনাইদ ১ম ও মো. আতিকুর রহমান ২য় স্থান অধিকার করেন।

উপাচার্য তাদেরকে ক্রেস্ট প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে চবি সাংবাদিক সমিতির সাবেক কার্যকরী পরিষদ নবনির্বাচিত পরিষদকে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব হস