মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে ১৪টি দেশের ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে। তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশও। আগামী ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হতে যাওয়া এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা বাংলাদেশি পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বসানো হবে।
এই সিদ্ধান্তের কথা একটি চিঠির মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে এর আগেই একটি অনুকূল সমঝোতায় পৌঁছার আশায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে টানা আলোচনায় আছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান গত সোমবার ব্লুমবার্গকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমরা ভার্চুয়াল ও সরাসরি মিলিয়ে অন্তত সাত দফা বৈঠক করেছি। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি ইতিবাচক সমাধানের প্রত্যাশা করছি।”
তিনি আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্র ইঙ্গিত দিয়েছে—বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত (এলডিসি) দেশগুলোর জন্য তারা একটি পৃথক স্তর রাখবে। আরেক স্তরে থাকবে উন্নত বাণিজ্যিক অংশীদার দেশগুলো।
বাণিজ্যসচিব বলেন, “স্বল্পোন্নত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি অগ্রসর বা ‘দ্য মোস্ট অ্যাডভান্সড’। মার্কিন কর্মকর্তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে, আলোচনা ইতিবাচক পথে এগোলে শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপ এড়ানো যেতে পারে।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টার মধ্যে থাকা বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি ভারসাম্যপূর্ণ বাণিজ্যচুক্তি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তৈরি পোশাক খাতে ৮০ শতাংশ রপ্তানি নির্ভরশীল দেশের জন্য অতিরিক্ত শুল্ক মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভিয়েতনামের সমমান কিংবা আরও সুবিধাজনক একটি চুক্তি করতে হবে।
সম্প্রতি ভিয়েতনামের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তিতে রপ্তানির ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক ধার্য করা হয়েছে, তবে ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে পণ্য এলে সেখানে ৪০ শতাংশ শুল্ক বসানো হচ্ছে।
বাণিজ্যসচিব আরও জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে প্রবেশ করা মার্কিন পণ্যের জন্য শুল্কমুক্ত সুবিধা চাচ্ছে—বিশেষ করে অটোমোবাইল খাতের মতো প্রতিযোগিতামূলক খাতগুলোতে।
তবে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, “আমরা এখনো কোনো বাধ্যবাধকতা নিচ্ছি না। চূড়ান্ত নথিপত্রের জন্য অপেক্ষা করছি। সবকিছু হবে একটি পরামর্শভিত্তিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে।”
এদিকে, প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, বাংলাদেশের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল ওয়াশিংটনে অবস্থান করছে।
তাদের সঙ্গে রয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান। প্রতিনিধি দলটি যুক্তরাষ্ট্রের সমপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছে এবং আগামী ৯ জুলাই আরেক দফা বৈঠকের কথা রয়েছে।
এক ফেসবুক পোস্টে শফিকুল আলম লিখেছেন, “উভয় দেশের স্বার্থ সুরক্ষায় একটি পারস্পরিক লাভজনক চুক্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে আলোচনা। ঢাকা আশাবাদী, ১ আগস্টের আগে এই আলোচনায় একটি ইতিবাচক সমাধান পাওয়া যাবে।”
সম্পাদকীয় : নাহার ম্যানশন (৩য় তলা), ১৫০ মতিঝিল ঢাকা।
নিউজ ও কমার্শিয়াল : মুন কমপ্লেক্স (৩য় তলা) ৫৯/১, পাটুয়াটুলি, ঢাকা।
ই-মেইল: boishakhinews24.net@gmail.com
হট লাইন: ০১৬৮৮৫০৫৩৫৬
https://www.boishakhinews24.net/