জাহাঙ্গীর আলম, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: বিশৃঙ্খলাসহ নানা অভিযোগ তুলে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় অনুষ্ঠিত বিএনপির দ্সবি-বার্ষিক সম্মেলনের ফলাফল স্থগিত করা হয়েছে।
রোববার (১৩ জুলাই) বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী।
পয়গাম আলী বলেন, দ্বি-বাষিক সম্মেলনের সভাপতি প্রার্থী এ্যাড. মো: সৈয়দ আলম এবং সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ড. টিএম মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে তাদের উশৃঙ্খল সমর্থকগণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিনকে লক্ষ করে লাঠিসোঠা চেয়ার দিয়ে হামলা এবং তাকে বহরকারী গাড়ি ভাংচুর করেন।
এক পর্যায়ে জেলা থেকে আগত নেতৃবৃন্দ তাকে রক্ষা করার আ-প্রাণ চেষ্টা করে এবং তারাও আহতপ্রাপ্ত হয়।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু লিখিতভাবে ভোটের ফলাফল প্রদান করা হয়নি। তাই বিশৃংখলাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ফলাফল স্থগিতের ঘোষাণা করা হয়েছে।
অন্যদিকে, নির্বাচনের ফলাফল স্থগিতের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা।
রাত সাড়ে ৯ টার দিকে বালিয়াডাঙ্গী শহরে একটি বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা। পরে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপির দ্বি-বাষিক সম্মেলনের সভাপতি প্রার্থী এ্যাড. মো: সৈয়দ আলম এবং সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ড. টিএম মাহবুবর রহমান একটি সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তারা অভিযোগ করে বলেন, জেলা বিএনপি যে ফলাফল স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি।
যারা রাতে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করে আবার দিনে স্থগিত করে তা আমরা মানি না। তাদের পছন্দের প্রার্থীকে জয়ী করতে পারেনি বলেই বিভিন্ন তালবাহানা করছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ভাই ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিনের গাড়িবহরে হামলার জন্য জামায়াত ও আওয়ামী লীগকে দায়ী করেছেন নবনির্বাচিত উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ড. টিএম মাহবুবর রহমান।
তিনি বলেন, “এটি তার জনপ্রিয়তা ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার সুপরিকল্পিত অপচেষ্টা।
তারা আরও বলেন, “সবার জানা আছে, ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ছিলেন মির্জা রুহুল আমিন চাচা।
তার উত্তরসূরি হিসেবে মির্জা ফয়সাল আমিন নির্বাচন করতে পারেন এ সম্ভাবনায় ঈর্ষান্বিত হয়ে তার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে হামলা চালানো হয়েছে।
জামায়াত-আওয়ামী লীগের লোকজন এতে জড়িত থাকতে পারে বলে আমাদের ধারণা।
বিএনপির অভ্যন্তরে কোনো বিভাজন নেই দাবি করে ড. টিএম মাহবুবর ও সৈয়দ আলম বলেন, “বিএনপির কেউ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন।
সম্মেলন অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে কোনো বিরোধ বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়নি।
বরং সামগ্রিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করলে স্পষ্ট হয়, এটি আসন্ন সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে পূর্বপরিকল্পিত হামলা।
অপরদিকে, বিএনপির সম্মেলনে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিনের উপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও সংবাদ সম্মেলন করেছে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সভাপতি পদ- প্রার্থী আবু হায়াত নুরুন্নবী ও তার অনুসারীরা।
রাতে ঐ উপজেলার চাড়োল ইউনিয়নে লাহিড়ী বাজারে কাউন্সিলদের একাংশ এবং চাড়োল ইউনিয়ন বিএনপির নেতারা এ আয়োজন করেন।
বিএনপির মহাসচিবের ভাইয়ের উপর হামলা ও গাড়ী ভাংচুরের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে সভাপতি পদ- প্রার্থী আবু হায়াত নুরুন্নবী বলেন, ঘটনার সাথে জড়িতদের বহিস্কার এবং ভোট পুনরায় গননা করে ফলাফল প্রকাশের দাবি জানান।
তিনি আরও বলেন, যারা বিএনপির দ্বি-বাষিক সম্মেলনের শীর্ষ নেতাদের উপর হামলা চালিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে এবং দ্বি-বাষিক সম্মেলনের ফলাফল স্থগিত করার জন্য জেলা বিএনপিকে আহব্বান জানান এই নেতা।
উপজেলার দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনকে কেন্দ্র করে নিজের দলে বিভক্তি তৈরি হওয়ায় আবারো সংঘর্ষের শংকা দেখছেন সিনিয়র নেতারা।
অবিলম্বে এ অবস্থার নিরসন হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন তারা।
এর আগে, গেল ১২ জুলাই দীর্ঘ ৮ বছর পর ভোটের মাধ্যমে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপির দ্বি-বাষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
ভোট গ্রহন শেষে ফলাফল প্রকাশে বিলম্বিত হলে ক্ষুদ্ধ হন উপজেলার নেতাকর্মীরা। কারচুপির অভিযোগ তুলে ওই উপজেলা সমির উদ্দিন স্মৃতি মহাবিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের সামনে অবস্থান নেয়।
এতে বিশৃংখলা সৃস্টি হয়। এসময় মৌখিক ফল ঘোষণা দিয়ে বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের ছোট ভাই জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমিনসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা বের হতেই হামলা চালায় উপজেলার নেতাকর্মীরা।
ভাংচুর করা হয় প্রাইভেটকার। এতে আহত হয় চারজন।
সম্পাদকীয় : নাহার ম্যানশন (৩য় তলা), ১৫০ মতিঝিল ঢাকা।
নিউজ ও কমার্শিয়াল : মুন কমপ্লেক্স (৩য় তলা) ৫৯/১, পাটুয়াটুলি, ঢাকা।
ই-মেইল: boishakhinews24.net@gmail.com
হট লাইন: ০১৬৮৮৫০৫৩৫৬
https://www.boishakhinews24.net/