বলিউডের বরেণ্য অভিনেতা রাজেশ খান্না। ১৯৭৩ সালে অভিনেত্রী ডিম্পল কাপাডিয়াকে বিয়ে করেন তিনি। ১৯৮২ সালে আলাদাভাবে বসবাস শুরু করেন এই দম্পতি। তবে কখনো আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদের ঘোষণা দেননি তারা। কিন্তু বিস্ময়কর তথ্য হলো—ডিম্পলকে বিয়ের আগে অনিতা আদভানিকে বিয়ে করেছিলেন রাজেশ খান্না। মেরি সাহেলিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনটাই দাবি করেন তিনি।
বিয়ের কথা জানিয়ে অনিতা আদভানি বলেন, “আমরা গোপনে বিয়ে করেছিলাম। কিন্তু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে এসব বিষয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলে না। সবাই বলে, ‘আমরা বন্ধু’, ‘আমরা সম্পর্কে আছি’ বা অন্য কিছু। তখন মিডিয়ায় খবর প্রকাশিত হয়েছিল যে, আমি ওর (রাজেশ খন্নার) সঙ্গে আছি, তাই আমাদের কেউই আলাদাভাবে এই বিয়ের কথা ঘোষণা করার প্রয়োজন অনুভব করিনি।”
অনিতা আদভানি
বিয়ের ঘটনা বর্ণনা করে অনিতা আদভানি বলেন, “আমাদের ঘরে ছোট একটি মন্দির ছিল। সোনা ও কালো রঙের মণি দিয়ে আমি একটি মঙ্গলসূত্র বানিয়েছিলাম। সে আমার গলায় তা পরিয়ে দেয়। তারপর সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে বলে, ‘আজ থেকে তুমি আমার দায়িত্ব।’ এভাবেই একরাতে আমাদের বিয়ে হয়, একদম নিঃশব্দে।”
ডিম্পল কাপাডিয়ার সঙ্গে সংসার বাঁধেন রাজেশ খান্না। ডিম্পলের সঙ্গে রাজেশের পরিচয় হওয়ার আগেই অনিতার সঙ্গে পরিচয় এই অভিনেতার। তা স্মরণ করে অনিতা বলেন, “হ্যাঁ, আমি ডিম্পল কাপাডিয়ার আগেই ওর জীবনে এসেছিলাম। কিন্তু আমরা তখন বিয়ে করিনি। কারণ আমি তখন অনেক ছোট ছিলাম। পরে আমি জয়পুরে ফিরে যাই।”
রাজেশ খান্নার মৃত্যুর পর তার চৌথা (মৃত্যুর চার দিন পর অনুষ্ঠিত এক প্রার্থনা সভা) অনুষ্ঠানে যাননি অনিতা। কারণ ব্যাখ্যা করে অনিতা বলেন, “ওখানে আমাকে ঢুকতে না দেওয়ার জন্য বাউন্সার রেখেছিল, আমি সেটা বন্ধুদের কাছ থেকে জেনেছিলাম। যখন বললাম, আমি যাব, তখন তারা সাবধান করল যে আমাকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। তবু, তারা বলল, ‘যদি কিছু হয়, আমরা তোমার পাশে আছি।’ আমি হতবাক হয়ে বলেছিলাম, ‘এ সব কেন?’ আমার কিছু স্টাফ এবং কাছের বন্ধুরা আমাকে যেতে উৎসাহিত করেছিল, এমনকি বলেছিল ক্যামেরা নিয়ে যেতে, যেন তারা কী করে তা রেকর্ড করতে পারি। কিন্তু আমি ভাবলাম, এমন একটা পবিত্র দিনে এটা কীভাবে করতে পারি? তাই আমি যাইনি। আমি একা একটা মন্দিরে বসে ওর জন্য চৌথা করেছিলাম।”
অনিতা আদভানি
পরের ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে চোখের জল ফেলেন অনিতা। তার ভাষায়, “ওখানে যাওয়াটা আমার আত্মসম্মানে আঘাত করত। আর ওদের আচরণও তাদের মানের নিচে ছিল। কারণ আমার জন্য বাউন্সার রাখা হয়েছিল। আমার এক বন্ধু, যে চৌথা অনুষ্ঠানে গিয়েছিল, সে বলেছিল ওরা আমার বসার জায়গা না রাখতে বলেছিল। এমনকি আমাদের এক পারিবারিক আইনজীবীকেও বলে দিয়েছিল, আমি যেন সেখানে না যাই। এর মানে কী? আমি তো কাকাজির (রাজেশ খান্না) চৌথায় গিয়ে কোনো ঝামেলা করতাম না, এমন ভাবনাও কখনো করিনি। তাই যাইনি। আর ওখানে কী হলো? সবটাই লোক দেখানো ছিল। কারো মনে ওর জন্য সত্যিকারের কোনো অনুভূতি ছিল না।”
২০১২ সালের ১৮ জুলাই মারা যান রাজেশ খান্না। মৃত্যুর আগের ৮ বছর রাজেশ খান্নার সঙ্গে লিভ-ইন সম্পর্কে ছিলেন অনিতা। রাজেশ খান্নার বিখ্যাত বাড়ি ‘আশীর্বাদ’-এর দেখাশোনা করতেন, অসুস্থ রাজেশের সেবা-যত্ন করতেন অনিতা। কেবল তাই নয়, রাজেশের জন্য করবা চৌথের মতো বিবাহিত নারীদের উপবাসও করতেন অনিতা।
রাজেশ খান্নার মৃত্যুর পর অনিতা তার পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মূলত, অভিনেতার সঙ্গে সম্পর্কের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি ও আর্থিক সহায়তার দাবি জানিয়ে এই মামলা করেছিলেন। কিন্তু রাজেশ খান্না ডিম্পল কাপাডিয়ার সঙ্গে আইনত বিবাহিত ছিলেন। তাই রাজেশ খান্নাকে আইনিভাবে বিয়ে করতে পারেননি বলেও জানান অনিতা।
তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
সম্পাদকীয় : নাহার ম্যানশন (৩য় তলা), ১৫০ মতিঝিল ঢাকা।
নিউজ ও কমার্শিয়াল : মুন কমপ্লেক্স (৩য় তলা) ৫৯/১, পাটুয়াটুলি, ঢাকা।
ই-মেইল: boishakhinews24.net@gmail.com
হট লাইন: ০১৬৮৮৫০৫৩৫৬
https://www.boishakhinews24.net/