ভারতের হায়দরাবাদের সংসদ সদস্য ও সর্বভারতীয় মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম)-এর প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি বলেছেন, নরেন্দ্র মোদীর সরকার যদি অবৈধ বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠাতে চায়, তবে শেখ হাসিনাকে কেন পাঠানো হচ্ছে না। তিনি বলেন, “আমরা কেন সেই ক্ষমতাচ্যুত নেত্রীকে (শেখ হাসিনা) আমাদের দেশে রাখছি? তাকে ফেরত পাঠান। তিনিও তো একজন বাংলাদেশি, তাই না?”
বৃহস্পতিবার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের আইডিয়া এক্সচেঞ্জ অনুষ্ঠানে ওয়াইসি বলেন, ভারতের উচিত ঢাকায় ‘জনগণের যে বিপ্লব’ হয়েছে সেটাকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা।
গতবছর অগাস্টে অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানোর পর থেকেই দিল্লিতে ভারত সরকারের আশ্রয়ে আছেন শেখ হাসিনা। আন্দোলন দমাতে শত শত মানুষ হত্যার অভিযোগে তাকে বিচারের মুখোমুখি করতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার তাকে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছে, তবে ভারত এখনও সাড়া দেয়নি।
অবৈধ বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর নামে সাম্প্রতিক অভিযানে বাংলাভাষীদের ঠেলে বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছে উল্লেখ করে ওয়াইসি বলেন, “আমাদের দেশে একজন বাংলাদেশি (হাসিনা) বসবাস করছেন, যিনি বিবৃতি আর বক্তৃতা দিয়ে সমস্যা তৈরি করছেন। অথচ মালদা ও মুর্শিদাবাদের গরিব বাংলাভাষী ভারতীয়দের পুণে থেকে বিমানে করে কলকাতায় পাঠিয়ে ‘নো-ম্যানস-ল্যান্ডে’ ফেলে দিয়ে আসছি। যে কেউ বাংলা বললেই কি সে বাংলাদেশি হয়ে যাবে? এটাই প্রমাণ করে এখানে কী ধরনের বিদ্বেষী মানসিকতা কাজ করছে।”
এভাবে মানুষকে ধরে ধরে বন্দিশালায় পাঠানোর এখতিয়ার পুলিশের আছে কি না, সে প্রশ্নও তোলেন তিনি। বিহারে ভোটার তালিকার ‘নিবিড় পর্যালোচনা’ নিয়ে ওয়াইসি বলেন, এর ফলে প্রকৃত ভারতীয় মুসলমানরা ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়তে পারেন। তার ভাষায়, “যদি এসআইআর হয় এবং প্রকৃত ভোটারদের নাম তালিকায় না থাকে, তাহলে তাদের নাগরিকত্ব নিয়েই প্রশ্ন উঠবে।”
ওয়াইসি অভিযোগ করেন, “আমাদের অভিজ্ঞতা বলছে, বিহারে বিপুলসংখ্যক মুসলমানের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। এ প্রক্রিয়া যদি অন্যত্রও হয়, তাহলে কী ঘটবে?”
সংখ্যালঘুদের ওপর অবিচার নিয়ে বিজেপি সরকার ও বিরোধী দল–উভয়ের নীরবতার সমালোচনা করে তিনি বলেন, “এই রাজনীতি ২০১৪ সালে শুরু হয়নি, সবসময়ই ছিল। তবে ২০১৪ সালের পর থেকে পরিস্থিতি ভিন্ন মোড় নেয়। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অনেক তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ দল দেশের সবচেয়ে বড় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিষয়েও কথা বলতে কুণ্ঠা বোধ করছে।”
এছাড়া ওয়াইসি গাজায় চলমান সহিংসতা নিয়ে মোদী সরকারের নীরবতাকে ‘পরোক্ষ সমর্থন’ বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, “আমরা কেবল চুপ করে আছি। সরকার গাজায় চলমান গণহত্যা নিয়ে কিছুই বলছে না। ৬৫ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বর্ণবাদী সরকারের হাতে। এর মধ্যে ২০ হাজার শিশু। প্রধানমন্ত্রী (মোদী) একটি শব্দও উচ্চারণ করছেন না। তারপর আবার বলেন, আপনারা দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে। কোথায় সেই রাষ্ট্র হবে, যদি প্রতিদিন ফিলিস্তিনিদের হত্যা করা হয়? মোদী সরকারের নীরবতা আসলে নেতানিয়াহুকে গণহত্যায় সহায়তা করারই নামান্তর।”
সম্পাদকীয় : নাহার ম্যানশন (৩য় তলা), ১৫০ মতিঝিল ঢাকা।
নিউজ ও কমার্শিয়াল : মুন কমপ্লেক্স (৩য় তলা) ৫৯/১, পাটুয়াটুলি, ঢাকা।
ই-মেইল: boishakhinews24.net@gmail.com
হট লাইন: ০১৬৮৮৫০৫৩৫৬
https://www.boishakhinews24.net/