গত বছরের ৪ আগস্ট নতুন সরকার গঠনের পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন বলে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি জানান, আলোচনার সময় ইউনূসকে নতুন সরকারপ্রধানের দায়িত্ব পালনের প্রস্তাবও দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেলে এ জবানবন্দি দেন নাহিদ। প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন মিজানুল ইসলাম ও গাজী এমএইচ তামিম।
ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দানকালে নাহিদ ইসলাম বলেন, আন্দোলনকারী নেতৃবৃন্দদের গ্রেপ্তার করে চাপ দেয়ার পাশাপাশি তাদের জীবিত ফেরত চাইলে আন্দোলন প্রত্যাহারের হুমকি দেয়া হয়। এই অবস্থার মধ্যেই ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই থেকে হত্যাযজ্ঞের প্রকৃত তথ্য প্রকাশ ও আন্দোলনকারীদের কর্মসূচি তুলে ধরা থেকে বিরত থাকে গণমাধ্যম।
ডিবি অফিসে তুলে নিয়ে সমন্বয়কদের নির্যাতন ও জিজ্ঞেসাবাদের বিষয়ে উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম জানান, ২০ জুলাই রাতে চোখ বেঁধে, হাতকড়া পরিয়ে তাকে তুলে নিয়ে যায় ডিবি। পরে তাকে জানানো হয়- তাকে গুম করা হয়েছে, আন্দোলন প্রত্যাহার না করলে ছাড়া হবে না। তবে ২৪ ঘণ্টা পর তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। এরপর ২৬ জুলাই আন্দোলন প্রত্যাহার করতে জোরপূর্বক লিখিত বক্তব্য পাঠ করিয়ে মোবাইলে ধারণ করে মিডিয়ায় প্রচার করেন তৎকালীন ডিবি প্রধান হারুন-অর-রশীদ।
ট্রাইব্যুনালকে নাহিদ ইসলাম আরও জানান, ডিবি অফিস থেকে ছাড়া পেয়ে ২০২৪ সালের ১ আগস্ট এক দফা দারিতে সরকার পতনের ডাক দেয় সমন্বয়করা। এরপর ৪ আগস্ট রাতেই সরকার গঠনের জন্য ড. ইউনূসকে উপদেষ্টা করার বিষয়ে আলোচনা করেন তারা।
জবানবন্দিতে নাহিদ ইসলাম বলেন, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী গত বছরের ৪ আগস্ট শাহবাগে অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচি হয়। ওই দিনই ৬ আগস্ট ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির ঘোষণা আসে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে কারফিউ জারি ও ইন্টারনেট–মোবাইল বন্ধসহ হত্যা বা গুমের পরিকল্পনার খবর পেয়ে এ কর্মসূচি একদিন এগিয়ে ৫ আগস্ট নির্ধারণ করা হয়।
তিনি আরও জানান, ৫ আগস্টের কর্মসূচি সফল করতে সমন্বয়ক মাহফুজ আলম অন্যান্য ছাত্র সংগঠন ও নাগরিক সমাজের সঙ্গে লিয়াজোঁ করেন। আর নতুন সরকার গঠনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আলোচনায় বসানো হয়েছিল।
এর আগে, ১৭ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত নাহিদের সাক্ষ্যগ্রহণ চলে। শেষ না হওয়ায় তা আজ পর্যন্ত মুলতবি করা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরের পর তাকে জেরা করবেন শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন।
সম্পাদকীয় : নাহার ম্যানশন (৩য় তলা), ১৫০ মতিঝিল ঢাকা।
নিউজ ও কমার্শিয়াল : মুন কমপ্লেক্স (৩য় তলা) ৫৯/১, পাটুয়াটুলি, ঢাকা।
ই-মেইল: boishakhinews24.net@gmail.com
হট লাইন: ০১৬৮৮৫০৫৩৫৬
https://www.boishakhinews24.net/