দুর্নীতির একটি অভিযোগের তদন্ত শুরু হওয়ায় স্পেনের সাবেক রাজা হুয়ান কার্লোস দেশ ত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ৮২ বছর বয়সী মি. কার্লোস দেশ ছেড়ে যাবার সিদ্ধান্তটি এক চিঠির মাধ্যমে তার ছেলে ফিলিপেকে জানিয়েছেন। স্পেনের রাজপ্রাসাদ থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে। খবর বিবিসি

ছেলের কাছে চিঠিতে সাবেক এই রাজা লিখেছেন, “স্পেনের জনগণ, প্রতিষ্ঠান এবং রাজা হিসেবে তুমি যাতে ভালো কাজ করতে পারো সেজন্য আমি এখন দেশ ছেড়ে যাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” ছয় বছর আগে এই ছেলের কাছেই ক্ষমতা হস্তান্তর করেন মি. কার্লোস।

তবে সাবেক এই রাজা জানিয়েছেন, তদন্তের জন্য যদি তার সাথে কথা বলার প্রয়োজন হয় তাহলে তার সাথে যোগাযোগ করা যাবে। কিন্তু স্পেনের কিছু সংবাদ মাধ্যম রিপোর্ট করেছে যে মি. কার্লোস এখন দেশে নেই।

সৌদি আরবের সঙ্গে একটি দ্রুত গতির রেল প্রকল্প নির্মাণের চুক্তিতে হুয়ান কার্লোসের বিরুদ্ধে দুর্নীতি অভিযোগ ওঠায় জুন মাসে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছিল স্পেনের সুপ্রিম কোর্ট।

অভিযোগ রয়েছে কার্লোসের অবৈধ লেনদেনের ফলে সৌদি আরবের মক্কা-মদিনা রেল প্রকল্পের জন্য ৬০০ কোটি ডলারের কাজ পায় স্পেনের একটি কোম্পানি। এর আগে তার জামাতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত শুরু হয়েছিল। এছাড়া স্পেনের আর্থিক মন্দার সময় রাজ পরিবার হাতি শিকারের জন্য ভ্রমণে গিয়ে তীব্র বিতর্কের মুখে পড়েছিল।

১৯৭৫ সালে স্পেনের স্বৈরশাসক জেনারেল ফ্রাঙ্কোর মৃত্যুর পর দেশটিকে গণতন্ত্রের পথে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে হুয়ান কার্লোস বেশ দক্ষতার সাথে নেতৃত্ব দিয়েছেন। রাজ সিংহাসনে ৪০ বছর থাকার পর ২০১৪ সালে তিনি ছেলে ফিলিপের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।

ক্ষমতা হস্তান্তরের পরই সৌদি প্রকল্পের সাথে হুয়ান কার্লোসের দুনীতির সংশ্লিষ্টতা প্রমাণের উদ্যোগ নেয় দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। কারণ, তিনি যতক্ষণ পর্যন্ত রাজা ছিলেন, ততক্ষণ পর্যন্ত তার দায়মুক্তি ছিল।

এই তদন্ত সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতেও গড়িয়েছে। স্পেনের দুর্নীতি-বিরোধী কর্মকর্তারা সন্দেহ করেন, সাবেক এই রাজার কিছু অঘোষিত অর্থ সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে গচ্ছিত রয়েছে।

স্পেনের সরকার বলেছে, ‘বিচার সবার জন্য সমান’ এবং তদন্তে সরকার কোন ‘হস্তক্ষেপ’ করবে না।

অন্যদিকে, স্পেনের সংবাদমাধ্যম এবং বিশিষ্টজনরা বলছেন, দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে এভাবে দেশ ছেড়ে যাওয়া একজন সাবেক রাজার জন্য খুবই অপমানজনক।

বৈশাখী নিউজ/ জেপা