জিনজিয়াং প্রদেশে সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমদের মানবাধিকার রক্ষায় চীনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে একটি বিবৃতিতে দিয়েছেন ৩৯টি দেশ। স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মতো ক্ষমতাধর দেশ।

উইঘুরদের মানবাধিকার পরিস্থিতি হংকংবাসীদের মতো হয়ে যায় কি-না সে ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে বিবৃতিতে।

জাতিসংঘে মানবাধিকার সংক্রান্ত এক সভার সময় এই বিবৃতির উদ্বেগ নেওয়া জার্মান দূত ক্রিস্টোফ হেউজেন বলেন, “মানবাধিকারের প্রতি সম্মান জানাতে আমরা চীনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি। বিশেষ করে, জিনজিয়াং ও তিব্বত অঞ্চলে ধর্ম ও জাতিগত সংখ্যালঘু মানুষজনের অধিকারের প্রতি।”

এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করা ৩৯টি দেশের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মতো ক্ষমতাধর দেশ রয়েছে। রয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের অধিকাংশ দেশ। আছে আলবেনিয়া, বসনিয়া, হাইতি, হন্ডুরাসের মতো দেশগুলোও।

বিবৃতিতে স্বাক্ষরদাতারা বলেছেন, “জিনজিয়াংয়ে মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং সাম্প্রতিক সময়ে হংকংয়ে চীনের কার্যক্রম নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।”

“জিনজিয়াংয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য সেখানে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনারসহ স্বাধীন নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকদের প্রবেশে ত্বরিত, অর্থবহ ও অবাধ অনুমতি দিতে চীনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি আমরা।”

৩৯ দেশের এই বিবৃতির তীব্র সমালোচনা করেছে চীন। দেশগুলোর এসব অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে উল্লেখ করেছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত চীনের স্থানীয় প্রতিনিধি জাং জুন। তার দাবি, এই বিবৃতির লক্ষ্য দেশগুলোর মধ্যে ‘দ্বন্দ্ব উসকে দেওয়া’।

জাং বলেন, “তারা মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে, চীনের দুর্নাম করছে এবং চীনের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করছে। চীন এসব অভিযোগের বিরোধিতা এবং প্রত্যাখ্যান করছে।”

সিনহুয়ার খবরে বলা হয়েছে, ৩৯ দেশের বিবৃতির বিপরীতে তাদের পক্ষ নিয়ে কিউবার নেতৃত্বে ৪৫টি দেশের একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, জিনজিয়াং নীতি নিয়ে সমালোচনা করা মানে চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা।

চীনের সরকার নিয়ন্ত্রিত বার্তা সংস্থাটির খবরে বলা হয়েছে, তারা জাতিসংঘের মানবাধিকার সংক্রান্ত হাইকমিশনার মিশেল বাশেলেটকে জিনজিয়াংয়ে সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। তবে বাশেলেট বলেছেন, পরিস্থিতি মূল্যায়নে এই অঞ্চলে স্বাধীনভাবে প্রবেশ করা দরকার তার।

এদিকে, হংকং ইস্যুতে চীনের পক্ষ নিয়ে পাকিস্তানের নেতৃত্বে ৫৫টি দেশের স্বাক্ষর আরও একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। তাতেও বলা হয়, হংকং চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ ব্যাপারে কথা বলা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর শামিল।

বৈশাখী নিউজ/ জেপা