যারা ভাস্কর্যের বিরোধিতা করছে, তারা একাত্তরের সাম্প্রদায়িক শক্তি : শেখ সেলিম
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম ভাস্কর্যের বিরোধিতাকারী সাম্প্রদায়িক শক্তিকে দমনে কঠোর পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ।তিনি বলেন, ‘যারা ভাস্কর্যের বিরোধিতা করছে, তারা একাত্তরের সেই সাম্প্রদায়িক শক্তি। ওই সময়ে তাদের ভূমিকা কী ছিল? তারা কখনো বাংলাদেশ চায়নি।’
শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মণির ৮১তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ আহ্বান জানান তিনি। শেখ ফজলুল করিম সেলিম ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
বিভিন্ন মুসলিম দেশে ভাস্কর্য থাকার কথা তুলে ধরে শেখ সেলিম বলেন, ‘বিভিন্ন দেশে ভাস্কর্য আছে। সৌদি আরবে আছে; ইরান, ইরাক মিশর, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, এমনকি তাদের প্রিয় পাকিস্তানেও ভাস্কর্য আছে। সেখানে ইসলাম যায় না, ইসলাম সব চলে যায় বাংলাদেশের জন্য।’
সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রুখে দিতে যুবলীগ নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘এরা একাত্তরের সেই শক্তি, যারা পাকিস্তানকে সহযোগিতা করছে, ৩০ লক্ষ লোককে হত্যায় সহযোগিতা করছে, ২ লক্ষ মা-বোনের ইজ্জত লুণ্ঠনে সহযোগিতা করেছে। অগ্নিসংযোগ করেছে, লুটপাট করেছে।’
‘বঙ্গবন্ধু এদের বিচারের ব্যবস্থা করেছিল, কিন্তু জিয়াউর রহমান এসে তাদের ক্ষমা করে দিয়ে এই দেশে আবার মৌলবাদীদের সুযোগ দিয়েছে। যুবলীগ নেতাকর্মীদের এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। আর কোনো সাম্প্রদায়িক শক্তি যেন বাংলাদেশে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে।’
সাম্প্রদায়িক শক্তিকে দমনে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এটাই হোক আমাদের শপথ যে, বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে দমন করতে হবে। সরকারকে বলব, এদের কঠোর হাতে দমন করতে হবে।’
যুবলীগকে আদর্শিক সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলতে বঙ্গবন্ধু এবং শেখ মণির আদর্শ নিয়ে কাজ করতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
তোফায়েল আহমেদ শেখ ফজলুল হক মণির স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘তিনি ছিলেন আপোশহীন। যা বিশ্বাস করতেন, সেটিই করতেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে থেকে তিনি ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছেন। নিজে নির্বাচন না করে নির্বাচন পরিচালনা করার মতো ত্যাগ স্বীকার করেছেন তিনি। মণি আওয়ামী লীগের অন্যতম বড় নেতা ছিলেন। তিনি ছিলেন খুবই সাহসী। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক হিসেবে তিনি যেভাবে কাজ করেছেন তা শুধু একজন দক্ষ সংগঠকের দ্বারাই সম্ভব।’
যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চলনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান খান নিখিল। উপস্থিত ছিলেন যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদ, মঞ্জুর আলম শাহীন, শেখ ফজলে ফাহিম, মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুব্রত পাল, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জহির উদ্দিন খসরু, মশিউর রহমান চপল, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, উপ-তথ্য ও যোগাযোগ (আইটি) সম্পাদক এনআই আহমেদ সৈকত, ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইনুদ্দিন রানা, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা, সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী সারোয়ার হোসেন বাবুসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগর কমিটির নেতাকর্মীরা।
বৈশাখী নিউজ/ জেপা
