শীষ কাটা পোকার আক্রমণে দিশেহারা চলনবিলের কৃষকেরা

নাটোরের সিংড়ায় পাকা আমন ধান ঘরে তোলার মুহূর্তেই শীষ কাটা পোকার আক্রমণে দিশে হারা হয়ে পড়েছে কৃষক। কৃষকরা বলছেন জমিতে ধান কেটে রাখা পরও শীষ কেটে ফেলছেন ওই শীষ কাটা লেদা প্রজাতির পোকা।

স্থানীয়ভাবে একে বলা হচ্ছে হিরকাটা পোকা। কীটনাশক দিয়েও দমন করা যাচ্ছে না এসব পোকা। ফলে প্রতি বিঘা জমিতে ৫ থেকে ৬ মণ ধানের ফলন কমে যাচ্ছে। যে জমিতে ১৮ থেকে ২০ মণ ধান হওয়ার কথা সেখানে হচ্ছে ১২ থেকে ১৫ মণ।

উপজেউপজেলার ইটালী ইউনিয়নের বনকুড়ি, শেরকোল, শ্রীকোল মাঠে সরেজমিনে গিয়ে কৃষকদের সাথে কথা বলে এসব জানা গেছে। শ্রীকোল গ্রামের কৃষক আলহাজ উদ্দিন বলেন, পোকার আক্রমণ ঠেকাতে না পেরে অতিরিক্ত শ্রমিক খরচ দিয়ে জমিতে ধান কাটাচ্ছি। ধান কেটে জমিতে রাখার পরেও সেখানে শীষ কাটছে। বাধ্য হয়ে ওই কাটা ধানের জমির ধানের উপর কীটনাশক স্প্রে করছি।

শেরকোল গ্রামের কৃষক বলেন, কীটনাশক দিয়েও কাজ হচ্ছে না। এই পোকা রাতের বেলায় বেশি কাটে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ বনকুড়ি গ্রামের কৃষক বলেন, আমার ৮ বিঘা ঊনত্রিশ ও চৌত্রিশ আমন ধানের জমির মধ্যে ৫ বিঘা জমির ধান কেটে ধান হয়েছে মাত্র ১০ মণ।

একই গ্রামের কৃষক বলেন, আজ থেকে ১০ দিন আগেও এই পোকা দেখা যায়নি। ধান পাকা পরই হঠাৎ করে শিষ কাটা শুরু হয়। প্রথমে দুই এক জমিতে কম বেশি দেখা গেলেও এখন সারা মাঠের জমিতেই মহামারির মত ছড়িয়ে পড়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, চলতি বছরে সিংড়া উপজেলায় ১৮ হাজার ৫শত হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ হয়েছে। ইতোমধ্যে ধান কাটা শুরু হয়েছে। আবহাওয়া জনিত কারণে এবার পাকা ধানে লেদা পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে।

এই পোকা ধানের শীষ কেটে ফেলছে। যে জমির ধান পেকে গেছে তা দ্রুত কেটে ফেলে ঘরে তোলা এবং আধা পাকা ধানের জমিতে কীটনাশক ব্যবহার করে পোকা দমন করার পরার্মশ দিচ্ছি। এছাড়া জমিতে পানি রাখার পরার্মশও দেয়া হচ্ছে। জমিতে পানি থাকলে এ পোকার আক্রমণ ঠেকানো যায়। তবে আমাদের পরার্মশ অনুসরণ করলে কৃষক খুব বেশি ক্ষতির মুখে পড়বে না।

বৈশাখী নিউজজেপা