না ফেরার দেশে ২০২০ সালে শিল্প ও সংস্কৃতি অঙ্গনের যেসব শিল্পী
এ বছর আমরা হারিয়েছি চলচ্চিত্র অঙ্গনের অনেক গুণী ব্যক্তিদের। এদের অধিকাংশই করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। দেশের শিল্প ও সংস্কৃতির উন্নয়নে তাদের অবদান রয়েছে। যাদের আমরা হারিয়েছি তাদের নিয়েই এই প্রতিবেদন।
মিনু মমতাজ : দীর্ঘদিন কিডনি এবং চোখের সমস্যায় ভুগছিলেন অভিনেত্রী মিনু মমতাজ। গত ২২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর গ্রীন লাইফ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। বর্ষীয়ান এই অভিনেত্রী করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। মৃত্যুর পর তার লাশ মর্গে পড়েছিল। বিল পরিশোধ করতে হবে শুনে তার মরদেহ নিতে আসেননি পরিবারের সদস্যরা। অবশেষে অভিনয় শিল্পী সংঘ ও মিনু মমতাজের এক ভাগ্নির সহায়তায় তার দাফনকার্য সম্পন্ন হয়।
কে এস ফিরোজ : জনপ্রিয় এই অভিনেতা ৯ সেপ্টেম্বর রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মারা যান। করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি।
সাদেক বাচ্চু : ঢাকাই চলচ্চিত্রের দাপুটে অভিনেতা সাদেক বাচ্চু গত ১৪ সেপ্টেম্বর করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। নন্দিত এ অভিনেতা দীর্ঘদিন হৃদরোগ, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। মৃত্যুর পর তার লাশ দাফন নিয়ে তৈরি হয় জটিলতা। করোনায় আক্রান্ত বলে লাশ দাফনে বাধার মুখে পড়তে হয়েছে স্থানীয়দের।
মোজাম্মেল হক : চলচ্চিত্র প্রযোজক মোজ্জামেল হক। করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৩১ মে মারা যান তিনি। ঢাকাই চলচ্চিত্রে তিনিই প্রথম করোনায় মারা যান।
আফতাব খান টুলু : চিত্রপরিচালক আফতাব খান টুলু ২৮ জুলাই না ফেরার দেশে চলে যান। করোনায় আক্রান্ত হয়ে ল্যাব এইড হাসপাতালে মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৬ বছর।
শরীফউদ্দীন খান দীপু : বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শরীফউদ্দীন খান দীপু করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২৩ অক্টোবর না ফেরার দেশে চলে যান।
নাসির উদ্দিন দিলু : গত ৩ নভেম্বর রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন দেশের নামজাদা চলচ্চিত্র প্রযোজক ও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের সাবেক সদস্য নাসির উদ্দিন দিলু। দীর্ঘদিন হৃদরোগসহ বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগছিলেন তিনি।
আমিনুল ইসলাম মিন্টু : ৮ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত চিত্রসম্পাদক আমিনুল ইসলাম মিন্টু ১৮ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে মারা যান। তিনিও করোনায় আক্রান্ত ছিলেন।
মতিউর রহমান পানু : চলতি বছরের ২৪ মার্চ না ফেরার দেশে চলে যান ‘বেদের মেয়ে জোছনা’খ্যাত প্রযোজক, পরিচালক মতিউর রহমান পানু। দীর্ঘদিন বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন তিনি।
জবা : সত্তরের দশকে ‘জিঘাংসা’ সিনেমায় ‘পাখির বাসার মতো দুটি চোখ তোমার, ঠিক যেন নাটোরের বনলতা সেন’ শিরোনামের গানটি তুমুল জনপ্রিয় ছিল। এ গানে পর্দায় ঠোঁট মিলিয়েছিলেন নায়ক ওয়াসিম ও জবা চৌধুরী। চলতি বছরের ৩ মে দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলায় নিজ বাড়িতে মারা যান জবা। সেখানেই হয়েছে তার দাফন।
রানা হামিদ : ঢালিউডের আলোচিত ব্যবসা সফল সিনেমা ‘গ্যাং লিডার’- এর অভিনেতা রানা হামিদ। তিনি চলতি বছরের ৯ মে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পাকস্থলির ক্যানসার ও কিডনি সমস্যায় ভুগছিলেন এই অভিনেতা।
শাহাদৎ খান : ১৮ আগস্ট রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যা গ করেন শাহদৎ। ‘অকৃতজ্ঞ’, ‘হৃদয় থেকে হৃদয়’, ‘জামাই শ্বশুর’সহ বেশ কিছু জনপ্রিয় সিনেমার তিনি নির্মাতা।
সাত্তার খান : ঢাকাই সিনেমার ইতিহাসে মাইলফলক সৃষ্টি করা ‘রঙিন রূপবান’-এর নায়ক সাত্তার গত ৪ আগস্ট মারা যান। রাজধানীর গ্রিনলাইফ মেডিক্যাল কলেজের আইসিইউতে নেওয়ার সময় তার মৃত্যু হয়।
মহিউদ্দিন বাহার : ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা ও ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র নিয়মিত শিল্পী মহিউদ্দিন বাহার গত ১৪ সেপ্টেম্বর মারা যান।
এস আলম : ঢাকাই চলচ্চিত্রের সহস্রাধিক সিনেমার নৃত্যপরিচালক এস আলম গত ৬ জুন মারা যান।
বৈশাখী নিউজ/ জেপা