চীনের আর্থিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার সমালোচনার পর থেকেই তিনি নিখোঁজ। তাকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না। নিয়মিত অংশ নিতেন ‘আফ্রিকাজ বিজনেস হিরোজ’, সেই রিয়েলিটি টিভি শোতেও তিনি নেই। রিয়েলিটি শো-এর পেজ থেকে তার ছবি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এই শোতে তিনি বিচারক। সেখানে তাকে আর দেখা যাচ্ছে না। প্রকাশ্যেও আসছেন না তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘দ্য অ্যাপ্রেন্টিস’-এর আদলে জ্যাক মা সৃষ্টি করেছেন ‘আফ্রিকাস বিজনেস হিরোস’ নামে রিয়েলিটি শো। সিএনএন/ফোর্বস/দ্য ফিনান্সিয়াল টাইমস

জ্যাক মা’র শোতে বিজয়ীকে দেয়া হয় ১৫ লাখ ডলার পুরষ্কার। আফ্রিকার ব্যবসায়ী উদ্যোক্তাদের এতে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করা হয়। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের বিচারক প্যানেলে ছিলেন জ্যাক মা। কিন্তু চীনের আর্থিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার সমালোচনা করার পর থেকেই আলিবাবা’র একজন নির্বাহী তাকে বিচারক পদ থেকে বাদ দেন। এমনকি প্রতিযোগিতার ওয়েবপেইজ থেকে জ্যাক মা’র ছবি নামিয়ে ফেলা হয়। সরিয়ে ফেলা হয় জ্যাক মা’র প্রমোশনাল ভিডিও। ওই প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব পিছিয়ে দেয়া হয়েছে আগামী বসন্ত পর্যন্ত। আলিবাবা’র এক মুখপাত্র বলেছেন, শিডিউল নিয়ে সমস্যা থাকার কারণে বিচারক প্যানেলে জ্যাক মা আর থাকছেন না।

চীনের সবচেয়ে সফল এই ব্যবসায়ী দেশটির নিয়ন্ত্রক এবং রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকের সমালোচনা করেন গত অক্টোবরে। তিনি তখন সাংহাইয়ে এক বক্তব্যে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় সংস্কার দাবি করেন। অভিযোগ করেন, এ পদ্ধতি উদ্ভাবনী ব্যবস্থার গলা টিপে ধরছে। এর প্রায় এক সপ্তাহ পরে সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ আলিবাবা’র অঙ্গ প্রতিষ্ঠান অ্যান্ট গ্রুপের ৩৭০০ কোটি ডলারের ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিং (আইপিও) স্থগিত করে দেয়। এতে জ্যাক মা অন্তত ৬ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতির মুখে পড়েন। তারপর থেকেই জ্যাক মা’কে আর জনসমক্ষে দেখা যাচ্ছে না। ব্রিটেনের টেলিগ্রাফ সংবাদপত্র জানিয়েছে, মাস দু’য়েক আগে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর নেতৃত্বাধীন কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে বিরোধে জড়িয়েছিলেন জ্যাক মা।

তিনি বলেছিলেন, সরকারের কর্তারা সুদখোরের মতো আলোচনা করছেন। চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির নানা নীতিরও নিন্দা করেন এই ধনকুবের। জ্যাক মা’র মতে, চীনা ব্যাঙ্কগুলি যেভাবে চলছে, তাতে সময়ের সঙ্গে তাল মেলানো যায় না। ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রে ব্যাপক সংস্কার দাবি করেন জ্যাক মা। জ্যাক মা’র বক্তব্যে অসন্তুষ্ট হয় জিনপিং সরকার। তাদের মতে, জ্যাক মা কমিউনিস্ট পার্টির কর্তৃত্বকেই চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন। এর পরেই আলিবাবার প্রতিষ্ঠাতার নানা ব্যবসার ওপরে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। গত নভেম্বরে ‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’-এ প্রকাশিত হয়, জ্যাক মা-কে বিদেশে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। ক্রিসমাসের ঠিক আগে তার আলিবাবা গ্রুপ হোল্ডিং নিয়ে তদন্তের আদেশ দেওয়া হয়। জ্যাক মা-র অপর কোম্পানি অ্যান্ট গ্রুপের ব্যবসাও গুটিয়ে আনতে বলা হয়।

বৈশাখী নিউজ/ দিপু