মন্দির নির্মাণের নামে প্রতিবন্ধীভাতা থেকে চাঁদা আদায় (ভিডিও)

সময়: 4:05 pm - March 19, 2021 | | পঠিত হয়েছে: 2 বার

তিমির বনিক, মৌলভীবাজার সংবাদদাতা: বর্তমান সরকার চা শ্রমিক জনগোষ্ঠীর জীবন মান উন্নয়নে বিভিন্ন রকম সাহায্য সহযোগিতা করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। কিন্তু অনেক সময় চা শ্রমিক জনগোষ্ঠীর পিছিয়ে পড়া মানুষদের সাথে চলছে বিভিন্ন রকম প্রতারণার কৌশল।

এবার সরকার কতৃক সমাজ কল্যাণ দফতরের আওতাধীন গৃহীত বয়স্ক ও বিধবা ভাতা বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ করেন শ্রীমঙ্গলের ৮ নং কালিঘাট ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নং ওয়ার্ডের ভুক্তভোগীরা।

অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, যারা নতুন প্রতিবন্ধী ও বিধবা ভাতার কার্ড পেয়েছেন তারা এককালীন ১ বছরের জন্য ৯ হাজার টাকা করে পাওয়ার কথা ছিলো।

কিন্তু নতুন ভাতা সংগ্রহকারীদের সরকারী অর্থ বিতরণের সময় নগদ ১ হাজার টাকা স্থানীয় একটি মন্দির নির্মাণের কথা বলে জোরপূর্বক রশিদ দিয়ে কেটে রাখার অভিযোগ করেন ভুক্তভুগীরা।

কালিঘাট ইউনিয়ন পরিষদের অন্তর্গত ভাড়াউড়া চা বাগানের ৬নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মীরা দোষাদ অভিযোগ করে বলেন, বিধবা ভাতা এবং প্রতিবন্ধী ভাতা চেয়ারম্যানের বাসায় যেতে বলা হয়। সেখানে যাওয়ার পর ৯ হাজার টাকা দেওয়ার পরিবর্তে ১ হাজার টাকার একটি রশিদ ও নগদ ৮ হাজার টাকা দিয়ে দেওয়া হয়।

তখন তিনি প্রতিবাদ জানালে তাকে উপস্থিত সকলে কার্ড বাতিল করে দেয়ার হুমকি দেওয়া হয় বলে জানান তিনি।

মীরা দোষাদ বলেন, প্রতিবন্ধী ভাতা থেকে কিভাবে মন্দির নির্মাণের জন্য টাকা কেটে রাখলো। আমি যেখানে তিন মেয়ে ও ছেলের পড়াশোনা, খাওয়া দাওয়া ও চিকিৎসার খরচ বহন করতেই হিমশিম খাই সেখানে গরীবের জন্য বরাদ্দ সরকারী অর্থ কিভাবে কেটে রাখা হয়।

আরেক ভুক্তভোগী বিধবা লক্ষী মনি গণমাধ্যমকর্মীদের অভিযোগ করে জানায়, একই দিনে বাড়ি বাড়ি হতে ২০০ টাকা করে তোলা হয় মন্দির তৈরি করার কথা বলে। বিধবা ভাতা থেকে এক হাজার টাকা কেটে রাখা হবে কেন। আমাদেরকে টাকা ফেরত চাই।

তিনি আরো বলেন চা বাগানের শ্রমিকরা সাপ্তাহিক হাজিরাতে ১০-২০ টাকা করে মন্দিরের জন্য দিয়ে থাকি তাহলে কেনো এই বাড়তি টাকা কেটে রাখলো ওনারা।

এ বিষয়ে ৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইদ্রিস আলীর কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাগানের একটা মন্দির নির্মাণের জন্য তাদের বলেছি যে, তোমরা তো টাকা পেয়েছো সেখান থেকে চাইলে তোমরা চাঁদা হিসেবে এক হাজার টাকা করে দিতে পারো, তখন তারা এক হাজার টাকা করে মন্দির নির্মাণের নামে দেয়। আমরা কোন জোর করে টাকা নেইনি। তারা স্বেচ্ছায় টাকা দিয়েছে এবং বলেন আমার এমন কোন অভিযোগ নেই কারো কাছে ৫ বছরে,যদি জানতে চান তাহলে চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করে দেখেন।

বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ নূর মিয়া বলেন, আমরা তো জোর করে কোন টাকা নেই নাই, তারা স্বেচ্ছায়ই মন্দিরের জন্য টাকা দিছে। প্রতিবন্ধীদের কাছ থেকেও কি টাকা নিতে হবে, এমন প্রশ্নের উত্তরে নূর মিয়া বলেন, আপনি প্রতিবন্ধী বলেন, বা সুস্থ মানুষই বলেন, তারা তো ধর্মের নামে টাকা দিচ্ছে। আর আমরা তাদের হাতে নয় হাজার টাকা দেওয়ার পরে তারা আমাদেরকে এক হাজার টাকা দিছে, আমরা রিসিটও দিয়ে আসছি।

কালিঘাট ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মিতু রায় বলেন, আমরা জোর করে কোন টাকা নেইনি। বাগানের মন্দির নির্মাণের জন্য প্রচুর টাকার প্রয়োজন তাই তাদের কাছ থেকে আমরা এক হাজার টাকা করে নিয়েছি। আমরা তাদেরকে টাকার রশিদ ও দিছি। বাগানের সবার কাছ থেকেই টাকা নিচ্ছি, কেউ ১শ, ২শ বা ৫শ করে টাকা দিচ্ছে।

প্রতিবন্ধী ও বিধবার ভাতার টাকা কেটে রাখার বিষয়ে কালিঘাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান প্রানেশ গোয়ালার সাথে যোগাযোগ করা হলে ফোনে তিনি বলেন, ভাতার টাকা থেকে কেউ কোন টাকা নিয়েছে বলে আমার জানা নাই তবে যেহেতু আমি এখন জেনেছি রাত হয়ে গেছে কেউ জানায়নি আমি এ বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি সকালে, তারপর ঘটনা সত্য হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে নিশ্চিত করেন।

ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন।

https://www.facebook.com/Boishakhinews24.net/videos/272999207728675
 

বৈশাখী নিউজফম

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর