মিয়ানমারে নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে একদিনে নিহত ১১৪

মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানবিরোধী চলমান বিক্ষোভের সবচেয়ে রক্তাক্ত দিনে ১১৪ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে। শনিবার দেশটির সশস্ত্রবাহিনী দিবসে এ হত্যাযজ্ঞে মেতে ওঠে নিরাপত্তাবাহিনী। দিনটিকে বিক্ষোভকারীরা দেশটির সশস্ত্রবাহিনীর জন্য লজ্জা দিবস বলে আখ্যায়িত করেছেন।

সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে শিশুও রয়েছে। মিয়ানমারজুড়ে বিভিন্ন শহরে এই নিহতের ঘটনা ঘটেছে। ইয়াঙ্গুন, মান্দালয় ও অন্যান্য শহরে সেনাবাহিনীর মাথায় ও পিঠে গুলির হুমকি উপেক্ষা করে রাজপথে নামেন জান্তাবিরোধীরা।

মিয়ানমার নাউ সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, স্থানীয় সময় শনিবার রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত নিরাপত্তাবাহিনীর হাতে ১১৪ জন নিহত হয়েছেন। মান্দালয়ে নিহত ২৯ জনের মধ্যে একজনের বয়স ৫ বছর। ইয়াঙ্গুনে নিহত হয়েছেন ২৪ জন।

মিয়ানমারে ক্ষমতাচ্যুত রাজনীতিকদের জান্তাবিরোধী গোষ্ঠী কমিটি রিপ্রেজেন্টিং পাইডাউংসু হ্লুত্তাউ (সিআরপিএইচ) এর এক মুখপাত্র ড. সাসা বলেন, আজ সশস্ত্র বাহিনীর জন্য লজ্জা দিবস। তিন শতাধিক নিরাপরাধ বেসামরিক মানুষকে হত্যার পর সামরিক বাহিনীর জেনারেলরা সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালন করছেন।

শনিবার সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক মহড়ায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী প্রধান মিন অং হ্লাইং বলেছেন, তারা গণতন্ত্র রক্ষা করতে ক্ষমতায় এসেছেন। নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দিলেও তার কোনো সময়সীমা উল্লেখ করেননি তিনি।

সেনাপ্রধান বলেন, ‘গণতন্ত্র রক্ষায় পুরো দেশের সঙ্গে হাত মেলাতে চায় সেনাবাহিনী। দাবি আদায়ে সহিংসতার মাধ্যমে স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তাকে ক্ষতিগ্রস্থ করা ঠিক নয়।’

তিনি দাবি করেন, মানুষের সুরক্ষা এবং দেশে শান্তি পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে কর্তৃপক্ষ।

উল্লেখ্য, গত ১ ফেব্রুয়ারি নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চির সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এর পর থেকেই দেশটিতে বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভকারীরা সু চির মুক্তির পাশাপাশি বেসামরিক কর্তৃপক্ষের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন। এসব বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৪০০ জনের কাছাকাছি।

বৈশাখী নিউজজেপা