দেশে করোনায় মৃতদের ৮০ শতাংশই পঞ্চাশোর্ধ্ব

মহামারী করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের তাণ্ডবে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যায় রেকর্ড ভাঙা-গড়া চলছে ধারাবাহিকভাবে। সর্বশেষ দুইদিনে মৃতের সংখ্যা ছিল নব্বইয়ের ওপরে। এর মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বৃহস্পতিবার ১০ হাজার ছাড়িয়েছে।

এদিন মৃত্যু হয়েছে ৯৪ জনের। মৃত ১০ হাজারের মধ্যে ৮০ শতাংশের বয়স ছিল পঞ্চাশোর্ধ্ব। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যানে মৃতদের বয়সভিত্তিক এমন চিত্র উঠে এসেছে।

গত বছরের জুন থেকে পরবর্তী তিন মাস দেশে তীব্র ছিল করোনার সংক্রমণ। এরপর সংক্রমণ কমলেও নভেম্বর ও ডিসেম্বরে বাড়ে। জানুয়ারিতে কমলেও সংক্রমণ বাড়তে থাকে ফেব্রুয়ারির শেষ থেকে। এর মধ্যে চলতি বছরের মার্চে শুরু হয়েছে করোনার দ্বিতীয় পর্যায়ের সংক্রমণ। প্রথম পর্যায়ের চেয়ে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে দ্বিতীয় পর্যায়ের সংক্রমণ। এ সময় দৈনিক সুস্থ হওয়ার চেয়ে শনাক্তের সংখ্যাই বেশি। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মৃত্যুর সংখ্যাও।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা নয় হাজার ছাড়ায় গত ৩১ মার্চ। আট হাজার থেকে মৃত্যু নয় হাজার ছাড়াতে সময় লেগেছিল ৬৭ দিন। আর সর্বশেষ এক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে। দেশে চলমান এ মহামারীতে এটিই দ্রুত সময়ে এক হাজার মৃত্যুর রেকর্ড। এর আগে এক হাজার মৃত্যুতে সবচেয়ে কম সময় ছিল ২৩ দিন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, গতকাল পর্যন্ত দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১০ হাজার ৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে ৭ হাজার ৪৯৯ জন পুরুষ ও ২ হাজার ৫৮২ জন নারী। বয়স বিবেচনায় তাদের মধ্যে পঞ্চাশোর্ধ্ব ছিলেন ৮ হাজার ১৫৫ জন, যা মোট মৃতের ৮০ দশমিক ৮৯ শতাংশ।

এছাড়া ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ছিলেন ১ হাজার ১২৫ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ছিলেন ৪৯৮ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিলেন ১৯২ জন, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ছিলেন ৭১ জন এবং শূন্য থেকে ১০ বছরের শিশুর সংখ্যা ৪০ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৪ হাজার ১৯২ জনের শরীরে প্রাণঘাতী ভাইরাসটির সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এতে মোট আক্রান্ত করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৭ হাজার ৩৬২ জনে। গত চারদিন ধরে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা কমে যাওয়ায় শনাক্তের সংখ্যাও কমেছে। গত ১২ এপ্রিল ৩৪ হাজার ৯৬৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হলে ৭ হাজার ২০১ জন করোনা রোগী শনাক্ত হন। এরপর ১৩ এপ্রিল ৩২ হাজার ৯৫৫টি নমুনার বিপরীতে ৬ হাজার ২৮ জন, ১৪ এপ্রিল ২৪ হাজার ৮২৫টি নমুনার বিপরীতে ৫ হাজার ১৮৫ জন এবং গতকাল ১৯ হাজার ৯৫৯টি নমুনার বিপরীতে ৪ হাজার ১৯২ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে এই মহামারী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২১৮টি দেশ ও অঞ্চল।

বৈশাখী নিউজজেপা