ইসরায়েলের আকাশকে যেভাবে রক্ষা করে চলেছে ‘আয়রন ডোম’

সময়: 2:01 pm - May 16, 2021 | | পঠিত হয়েছে: 3 বার

ইসরায়েলি বিমান হামলা এবং ফিলিস্তিনি হামাস গোষ্ঠীর পাল্টা রকেট নিক্ষেপ অব্যাহত আছে আজ সপ্তম দিনের মত। ২০১৪ সালের পর দুই দেশের মধ্যে এত বড় বিরোধ সংঘটিত হয় নি।

তবে গাজা থেকে ছোঁড়া ৯০ শতাংশ রকেটই ইসরায়েলের আকাশে এসে যেন কোন এক অদৃশ্য পর্দায় ধাক্কা খাচ্ছে। আর এ ঘটনা পুরো বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। ইসরায়েলের এই অদৃশ্য বর্মই হলো ‘আয়রন ডোম’।

হামাস ও  অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠী গত কয়েক দিনে ইসরায়েলের দিকে ২ হাজারেরও বেশি রকেট নিক্ষেপ করেছে।

কিন্তু ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর তথ্য মতে, এর শতকরা ৯০ ভাগই আয়রন ডোমের ব্যূহ ভেদ করে দেশটির আকাশে প্রবেশ করতে পারে নি।

সংক্ষিপ্ত পরিসরে নিক্ষেপিত হামলার জন্যই বিশেষ এই প্রতিরোধী দেয়াল তৈরি করা হয়েছে।

মূলত ২০০৬ সালে লেবাননের সঙ্গে যুদ্ধের বছরে ইসরায়েল প্রথম এমন একটি শক্তিশালী প্রতিরোধ ব্যবস্থার প্রয়োজন অনুভব করে। লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর ছোঁড়া ঝাঁকে ঝাঁকে রকেট আর গোলার আঘাতে ইসরায়েলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এবং প্রাণহানি ঘটে সে সময়।

তখনই ইসরায়েল বুঝতে পারে যে, এবার সময় হয়েছে একটি নতুন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরীর।

যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় ইসরায়েলি সংস্থা রাফায়েল অ্যাডভান্সড ডিফেন্স সিস্টেমস এবং ইসরায়েল এরোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ মিলে ২০১১ সালে আয়রন ডোম তৈরি করে।

এই প্রতিরক্ষা প্রযুক্তিতে রাডার ব্যবহার করা হয়। ইসরায়েলের দিকে ধেয়ে আসা রকেট মাটিতে আঘাত হানার আগেই আয়রন ডোমের রাডার নিমেষে তা শনাক্ত করে ফেলে।

দিন হোক কিংবা রাত, সব ধরনের আবহাওয়ায় সক্রিয় থাকে এই প্রযুক্তি। গাজা থেকে নিক্ষেপিত অপেক্ষাকৃত কম মাত্রার ক্ষেপণাস্ত্রগুলো তাই ধাক্কা দিয়ে যাচ্ছে এই প্রযুক্তির দেয়ালে।

তবে আয়রন ডোম প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অত্যন্ত ব্যয়বহুল৷ ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্তকরণ প্রযুক্তির জন্যই এর এমন উচ্চ ব্যয় বলে জানান ব্যবস্থাটির নির্মাতারা।

স্থাপনের এক দশক পর, ইসরায়েলে এখন দশটি আয়রন ডোম ব্যাটারি সক্রিয় রয়েছে৷ প্রতিটিতে তিন থেকে চারটি লঞ্চার রয়েছে যারা একাধারে ২০টি ক্ষেপণাস্ত্র আটকানোর ক্ষমতা রাখে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র লে. কর্নেল জোনাথন কনরিকাস বলেন, “আয়রন ডোমের এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাটি না থাকলে সহিংসতায় নিহত ও আহত ইসরায়েলিদের সংখ্যা অনেক বেশি হতো, সব সময়ের মতই এটি এবারও সুরক্ষা দিয়ে গেছে”।

তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, গাজার সাম্প্রতিক আক্রমণের ধরন দেখে বোঝা যায় যে, তারা আয়রন ডোমের প্রতিরোধের দেয়াল ছাপিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। ফলে এই ব্যবস্থার সম্ভাব্য সীমাবদ্ধতাগুলো নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

বৈশাখী নিউজ/ এপি

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর