ঝালকাঠিতে লাশের মিছিল, হাসপাতালে স্বজনদের কান্নার রোল

আপডেট: July 23, 2023 |
inbound5969386571725026260
print news

মো. নাঈম হাসান ঈমন, ঝালকাঠি প্রতিনিধি: বরিশাল-খুলনা মহাসড়কের ঝালকাঠি সদর উপজেলার ছত্রকান্দা এলাকার গাবখান ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের পাশে “বাসার স্মৃতি” নামের একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুরে পড়ে যায়।

এ ঘটনায় হুহু করে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। এ পর্যন্ত সেখান থেকে ১৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

প্রাণহানি আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এছাড়া এ ঘটনায় ৩০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। নিমজ্জিত গাড়িটি রেকার দিয়ে উপরে তুলেছে জেলা পুলিশের উদ্ধারকারী একটি টিম।

উদ্ধার অভিযানে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ৭টি ইউনিটসহ র‌্যাব, পুলিশ প্রশাসন, রেড ক্রিসেন্ট এবং ও স্থানীয়রা।

শনিবার (২২জুলাই) সকাল ১০টায় ভান্ডারিয়া থেকে ঝালকাঠি যাওয়ার পথে বাসটি উল্টে পুকুরে পড়ে যায়।

বাসে আনুমানিক যাত্রী ছিল ৫০-৬০ জন। এখন পর্যন্ত ১৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৮ জন নারী, ৬ জন পুরুষ ও ৩ জন শিশু।

উদ্ধার অভিযান এখনও চলছে। এদিকে উদ্ধার কাজ চলায় দুর্ঘটনার পর থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত তিন ঘন্টা রাজাপুর-ঝালকাঠি আঞ্চলিক মহাসড়কের যানচলাচল বন্ধ ছিলো৷

প্রায় ৬ কিলোমিটার লাইনে সারি বেঁধে দাড়িঁয়ে ছিলো কয়েক শতাধিক গাড়ি।

এ ঘটনায় ২৩ জন আহত যাত্রী ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তী হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং বাকিদের বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।

ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল এখন যেন লাশের মিছিলে পরিণত হয়েছে। স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছে সদর হাসপাতালসহ আশপাশ এলাকাসমূহ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকালে ভান্ডারিয়া থেকে “বাসার স্মৃতি” পরিবহণ নামক একটি যাত্রীবাহী বাস ঝালকাঠির দিকে যাচ্ছিল। পথে ছত্রকান্দা এলাকায় পৌঁছে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাশের একটি পুকুরে পড়ে উল্টে যায়।

তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়রা উদ্ধার কাজ শুরু করেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উদ্ধার কাজে যোগ দেন।

ফায়ার সার্ভিসের ঝালকাঠির ষ্টেশন কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের ৭ ইউনিট উদ্ধার কাজে অংশ নিয়েছে। নিমজ্জিত গাড়িটি উপরে তোলা হয়েছে গাড়ির মধ্যে আর কোনো যাত্রী নেই।

তবে পুকুরের মধ্যে কোন যাত্রী আছে কিনা তা খুজতে আমরা ৩ টি পাম্প দিয়ে পানি অপসারন করতেছি। পানির সেচ শেষ হলে বলা যাবে আর কোনো মরদেহ আছে কিনা।

হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া আহতরা জানান, কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশের পুকুরে পড়ে যায়। তবে মাঝপথে যাত্রী তোলার কারণে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি সময় লাগে।

এ জন্য বাসটি বেপরোয়া গতিতে চালানো করা হচ্ছিল। এদিকে হাসপাতালে আহাজারী করছেন নিহতদের স্বজনরা। তাদের সান্তনা দিতে এবং আহতদের খোজ নিতে জেলা প্রসাসক, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জন হাসপাতালে ছুটে যান।

ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন সরকার জানান, যাত্রীবাহী বাসটি উল্টে পুকুরে পড়ে গেলে এখন পর্যন্ত ১৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

আহতদের ২৩জনকে সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে আশঙ্কাজনক কয়েকজনকে দেখা গেছে। নিহত ১৭ যাত্রীর লাশ সদর হাসপাতালে রাখা হয়েছে। ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হবে

এ ঘটনায় শোক বার্তা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র ঝালকাঠি-২ আসনের সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমু এবং ঝালকাঠি-১ আসনের সংসদ সদস্য বজলুল হক হারুন।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর