আজ মধ্যরাত থেকে বরগুনায় ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ

আপডেট: October 3, 2021 |

আজ মধ্যরাত থেকে ২২ দিন বঙ্গোপসাগর ও নদীতে ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। এ সময় ইলিশ আহরণ, ক্রয় বিক্রয়, বিপণন, মজুদ ও পরিবহণ নিষিদ্ধ থাকবে। নিষেধাজ্ঞার কারণে সাগর থেকে ঘাটে ফিরছে বরগুনার জেলেরা।

বরগুনা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছর আশ্বিনের ভরা পূর্ণিমার আগে-পরে মিলিয়ে মোট ১৫-১৮ দিন ইলিশের ডিম ছাড়ার উপযুক্ত সময়। এ সময় সাগর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ নদীতে ছুটে আসে।

ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে এবং মা ইলিশ রক্ষা করতে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্য়ন্ত ইলিশ শিকারে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। আজ মধ্যরাত থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হবে। এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে কমপক্ষে ১ থেকে ২ বছরের কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের কথাও জানান হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।

বরগুনার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র গুলো ও বিভিন্ন ঘাটে খোঁজ নিয়ে জানা যায়,শনিবার থেকেই বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকার করতে যাওয়া ট্রলার গুলো ঘাটে ফিরতে শুরু করেছে। মৎস্যজীবী নেতারা বলছেন সরকারের দেয়া নিষেধাজ্ঞা তারা সঠিকভাবে পালন করবেন।

বাংলাদেশ মৎসজীবি ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, সকল ট্রলার মালিকরা তাদের মাঝি ও জেলেদের ঘাটে ফিরতে বলেছেন। অনেক ট্রলার জেলেদের নিয়ে ইতিমধ্যে বিএফডিসি ঘাটে পৌছে গেছে। বাকি ট্রলারগুলো পথে আছে। নিষেধাজ্ঞা শুরুর আগেই সবাই পৌঁছে যাবে।

এদিকে জেলা মৎস্য অফিস জানান,নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে প্রত্যেক জেলের জন্য ২০ কেজি চাল খাদ্য সহায়তা হিসেবে বরাদ্দ হয়েছে। শিঘ্রই জেলেদের মাঝে এসব চাল বিতরন করা হবে।

তবে জেলেরা বলছে ২০ কেজি চাল দিয়ে ২২ দিন সংসার চালানো সম্ভব না। তাই চালের সাথে নগদ অর্থ সহায়তার দাবী জানিয়েছেন বরগুনার জেলেরা।

তালতলী জেলে আবু কালাম, মোঃ রফিক, ইউসুব ফকির, পাথরঘাটার জেলে জব্বার, দেলোয়ার কামাল মাঝিসহ একাধিক জেলে বলেন, সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী কাল থেকে মাছ শিকার করতে পারবে না । এ ২২ দিন কোন আয় ইনকাম হবেনা। শুধু চাল দিয়েই তো আর পেট চলেনা, চালের সাথে আরও অনেককিছুর দরকার আছে।

এমনিতেই এ বছর তেমন মাছ পাননি, ঋণগ্রস্ত হয়ে পরছে তারা। তার উপর এই ২২ দিনে ধার দেনা করে চলতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত সহযোগিতা পেলে তাদেন সংকট দূর হতো।

বরগুনা জেলা মৎস কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে জেলেদের মাছ না ধরায় উদ্বুদ্ধ করার জন্য ইতিমধ্যে বিভিন্ন যায়গায় মাইকিং করা হয়েছে।

নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করতর জেলা মৎস অধিদফতর, কোস্টগার্ড, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ এবং স্থানীয় মৎস্য বিভাগের উদ্যোগে অভিযান পরিচালনা করা হবে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত চালানো হবে।

তবে এ সময় জেলেরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন সেদিকেও নজর দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক জেলেদের বিশেষ ভিজিএফের মাধ্যমে ২০ কেজি চাল দেওয়া হবে।

বৈশাখী নিউজ/ ফাজা

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর