চীনের ইএমপি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে নিমিষেই নামবে অন্ধকার

আপডেট: October 6, 2021 |

চীন শব্দের চেয়ে ছয়গুণ দ্রুতগতিসম্পন্ন ইলেক্ট্রো ম্যাগনেটিক পালস (ইএমপি) ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করেছে। যা কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে কোনো শহরে রাসায়নিক বিস্ফোরণ ঘটিয়ে চোখের পলকে সেখানকার যোগাযোগ এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করে মানুষের জনজীবন স্থবির করে দিতে পারে।

ধ্বংসাত্মক এবং কার্যকর ইলেক্ট্রো ম্যাগনেটিক পালস (ইএমপি) অস্ত্র নতুন নয়। তারপরও চীনা সামরিক বিজ্ঞানীরা এই অস্ত্রের ক্ষণগণনা শুরু করেছেন। চীনের একাডেমি অব লঞ্চ ভেহিকল টেকনোলজির বিজ্ঞানীরা বলছেন, তাদের তৈরি এই ক্ষেপণাস্ত্র তিন হাজার কিলোমিটার দূরেও শব্দের চেয়ে ছয়গুণ দ্রুতগতিতে (আনুমানিক ২৫ মিনিটের ফ্লাইট) আঘাত হানতে পারে। শুধু তাই নয়, এই ক্ষেপণাস্ত্র এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যা নজরদারি চালানোর জন্য মহাকাশের আগাম সতর্কীকরণ ব্যবস্থাকেও ধোঁকা দিতে পারে।

লক্ষ্যবস্তু হিসেবে নির্ধারিত এলাকায় এই অস্ত্র আঘাত হানার পর সেখানে রাসায়নিক বিস্ফোরণ ঘটায় এবং ফ্লাক্স কমপ্রেশন জেনারেটর নামে পরিচিত বৈদ্যুতিক চার্জযুক্ত চুম্বককে সংকুচিত করে। এর ফলে তৈরি হওয়া শক এনার্জি অত্যন্ত শক্তিশালী ইলেকট্রন ও চুম্বকীয় শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।

প্রকৌশল বিজ্ঞানী সান ঝেং এবং তার সহ-গবেষকরা চীনের স্থানীয় টেকটিক্যাল মিসাইল টেকনোলজি জার্নালে গর্ব করে বলেছেন, এটি মাত্র ১০ সেকেন্ডের মধ্যে ৯৫ শতাংশ শক্তিকে নির্গমন করতে পারে। এর ফলে এটি টার্গেটকৃত এলাকার ২ কিলোমিটারজুড়ে ইনফরমেশন নেটওয়ার্কের গুরুত্বপূর্ণ ইলেকট্রনিক ডিভাইসকে কার্যকরভাবে ধ্বংস করে দিতে পারে। একই সঙ্গে ওই এলাকার বিভিন্ন ধরনের যোগাযোগ এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থাও বিকল করে দেয়।

অন্যান্য অ-পারমাণবিক ইএমপি বোমার তুলনায়, এই অস্ত্রটিতে কোনও ব্যাটারি থাকবে না বলে জানিয়েছেন চীনের সামরিক বিজ্ঞানীরা। তারা বলেছেন, ব্যাটারির ড্রাই সেলের পরিবর্তে এতে সুপার-ক্যাপাসিটর ব্যবহার করা হবে।

লাইভসায়েন্স ডটকমের তথ্য অনুযায়ী, ইএমপি হলো— ইলেক্ট্রন ও চুম্বকীয় শক্তির ব্যাপক বিস্ফোরণ; যা প্রাকৃতিকভাবেও ঘটতে পারে। তবে এই বিস্ফোরণের কারণে মানুষের তেমন কোনও ক্ষতি হয় না। এই ধরনের চৌম্বকীয় শক্তি কাছাকাছি দূরত্বের তারের ইলেকট্রনকে অকেজো করে দিতে পারে।

একসঙ্গে লাখ লাখ বজ্রপাতের সময় যে আলোকরশ্মি তৈরি হয়, ইলেক্ট্রো ম্যাগনেটিক পালস (ইএমপি) এক আঘাতেই তারচেয়ে বেশি রশ্মি সৃষ্টি করতে পারে। বজ্রপাতের মতোই অবকাঠামো, বৈদ্যুতিক লাইন, বিমান, রাডার, উন্নত কম্পিউটার এবং আধুনিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও ধ্বংস করতে সক্ষম এই ইএমপি।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও এশিয়ার চীন ও ভারত এই অস্ত্র তৈরি করছে। তবে ভবিষ্যতে অনেক দেশের সামরিক বাহিনী এমনকি বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীও এই অস্ত্র তৈরির সক্ষমতা অর্জন করতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক পিটার প্রাই। সূত্র: এশিয়া টাইমস।

বৈশাখী নিউজ/ এপি

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর