সারাদেশে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি অটোরিকশা চালকদের

আপডেট: May 20, 2024 |
inbound8673664982482957509
print news

রাজধানীতে ইজিবাইক, ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী, বিআরটিএ এবং ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের ঘোষণার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন রিকশা, ব্যাটারি রিকশা-ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ।

পাশাপাশি সমাবেশে থ্রি-হুইলার ও সমজাতীয় মোটরযান নীতিমালা চূড়ান্ত ও কার্যকর করে ইজিবাইক, রিকশাসহ ব্যাটারিচালিত যানবাহনের দ্রুত নিবন্ধন, লাইসেন্স প্রদান ও রুট পারমিটসহ ৭ দফা দাবি জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা।

দাবি আদায় না হলে আগামী ২৭ মে সারা দেশে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

আজ সোমবার (২০ মে) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এই বিক্ষোভ সমাবেশ করেন সংগঠনটির নেতারা।

এর আগে কয়েকশ অটোরিকশা চালক মিছিল নিয়ে স্লোগান দিতে দিতে প্রেস ক্লাবের সামনে জড়ো হন। এতে প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তার একপাশে যান চলাচল সীমিত হয়ে যায়।

সমাবেশে সংগঠনটির নেতারা বলেন, কেন এই সিদ্ধান্ত? কার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত? ইজিবাইক, রিকশাসহ ব্যাটারিচালিত যানবাহন ঢাকা মহানগরের প্রধান সড়কে চলাচল করে না। এটা মূলত মহানগরে অলিগলিতে চলে।

কারণ সেখানে কোনও গণপরিবহন নেই। এক জরিপে দেখা গেছে, ঢাকা মহানগরের প্রায় ৬০ ভাগ মানুষ এই ধরনের যানবাহনে চলাচল করে।

আর মাত্র ৬ ভাগ যাত্রী নিয়ে ঢাকা মহানগরের প্রায় ৮০ ভাগ রাস্তা দখল করে যানজট সৃষ্টি করে প্রাইভেট গাড়ি। তারপরেও কেন এই বাহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা।

তারা বলেন, এই বাহনের সাথে চালক, মালিক, মহাজন, গ্যারেজ মালিক, চার্জিং ব্যবসায়ী, শ্রমিক, মেস পরিচালনাকারী ও মোটর-রিকশা পার্টস, ব্যাটারিসহ সারা দেশে প্রায় ৬০ লাখ মানুষ জড়িত।

ঢাকা মহানগরে এ সংখ্যা আনুমানিক ৫ লাখের উপরে। বিকল্প ব্যবস্থা না করে রাস্তা থেকে উচ্ছেদ করে এ গণপরিবহন বন্ধ করা হলে আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহকারী লাখ লাখ মানুষের ও তাদের পরিবারের দায়দায়িত্ব কে নেবে?

নেতারা আরও বলেন, ২ টনের একটি এসিতে ৬ ঘণ্টায় ১৬ ইউনিট বিদ্যুৎ লাগে অথচ একটা ব্যাটারিচালিত যানবাহনের ব্যাটারি চার্জে ৩.৫-৪ ইউনিট বিদ্যুৎ লাগে।

অর্থাৎ, ২ টনের এসিতে ১-২ জন মানুষের ঠান্ডা হওয়াটা জরুরি না সমপরিমাণ বিদ্যুতে ৪ জন মানুষের আত্মকর্মসংস্থান ও ২০ জন মানুষের জীবন-জীবিকা রক্ষা, কোনটা জরুরি? আর অপচয়ের তো কোনও সুযোগই নেই বরং বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর ভাষায়, বিদ্যুৎ ব্যবহারে তাদের রিটার্ন বেশি।

কারণ তাদের বিদ্যুৎ বিল আবাসিক বিল থেকে অনেক বেশি। এরা বিদ্যুৎ চুরিও করে না। দেশের প্রায় ৩৭ শতাংশ বিদ্যুৎ এমনিতেই ব্যবহারের অভাবে অলস পড়ে থাকে, যার জন্য সরকারকে ক্যাপাসিটি চার্জ গুনতে হয়।

সমাবেশে সংগঠনটির নেতারা সড়ক পরিবহন মন্ত্রী, বিআরটিএ ও ঢাকা মহানগরের দুই মেয়রের ঘোষণার পর মিরপুর, লালবাগ, গেন্ডারিয়া, শ্যামপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় রিকশা আটক, ব্যাটারি খুলে নেওয়া, ডাম্পিং ও চালক-মালিকসহ সংশ্লিষ্টদের হয়রানির এবং মিরপুর এলাকায় আন্দোলনরত রিকশা শ্রমিকদের ওপর পুলিশি হামলার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

পাশাপাশি মন্ত্রী, বিআরটিএ ও মেয়রের এই সিদ্ধান্ত বাতিলের জোর দাবি জানান তারা।

অন্যথায় কর্মহীন ও বেকার চালকসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে ২৭ মে সারা দেশের ৬৪ জেলায় তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর