ফের পেছাল এসকে সিনহার রায়

সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের করা মামলার রায় আবারও পিছিয়ে গেল। নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ নভেম্বর।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলমের আদালতে রায় ঘোষণার কথা ছিল। তবে তা পিছিয়ে আবারও নতুন তারিখ দিলেন বিচারক শেখ নাজমুল আলম।

এর আগে ১৪ সেপ্টেম্বর একই আদালতে এ মামলায় উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুনানি শেষ হয়। এরপর রায় ঘোষণার জন্য ৫ অক্টোবর তারিখ নির্ধরণ করেন আদালত। তবে অনাকাঙ্খিত কারণে তা পিছিয়ে যায়। নতুন করে তারিখ নির্ধারণ হয়েছিল ২১ অক্টোবর।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মামলা দুই আসামি শাহজাহান ও নিরঞ্জন, ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান শাখার একাউন্ট থেকে ৪ কোটি টাকা ঋণ পেয়েছিলেন।

এই ঋণের জামানত হিসেবে আরেক আসামি রনজিৎ চন্দ্রের স্ত্রী সান্ত্রী রায়ের নামে সাভারের ৩২ শতাংশ জমির কথা উল্লেখ করা হয়েছিল।

পরে ঋণের সেই টাকা রনজিতের হাত ঘুরে বিচারপতি এস কে সিনহার বাড়ি বিক্রির টাকা হিসেবে দেখিয়ে তার ব্যাংক হিসাবে ঢুকেছে।

২০১৭ সালে বিদেশ থেকে পদত্যাগ পত্র পাঠানোর পরে দুদক এই সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পায় এবং তদন্ত শুরু করে।

পরে ২০১৯ সালের ১০ জুলাই মামলা করে দুদক। মামলায় সাবেক ফারমার্স ব্যাংক (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) থেকে ভুয়া তথ্য দিয়ে অন্যের নামে চার কোটি টাকার ঋণ করে পরে তা এস কে সিনহার ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করার অভিযোগ আনা হয়।

অভিযোগে বলা হয়, সেই ব্যাংক হিসাব থেকে পরবর্তী সময়ে টাকা স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে পাচার করা হয়। দুদক বলছে, মামলার তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

তাই সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তার সুপারিশের প্রেক্ষিতে বিদেশে অবস্থারত এস কে সিনহাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন দেওয়া হয়।

মামলার এক আসামি মৃত হিসেবে প্রমাণ মেলায় চার্জশিট থেকে তার নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। আর তদন্ত শেষে নতুন করে আসামি হয়েছেন ফারমার্স ব্যাংকের নিরীক্ষা কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতী। তিনি বর্তমানে কারাগারে আছেন।

এদিকে জামিনে আছেন,ফারমার্স ব্যাংকের সাবেক এমডি এ কে এম শামীম, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রায়, ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. লুৎফুল হক, সাবেক এসইভিপি গাজী সালাহউদ্দিন, টাঙ্গাইলের বাসিন্দা মো. শাহজাহান ও একই এলাকার বাসিন্দা নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা।

এর আগে গত ২৯ আগস্ট আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছিলেন বিচারের মুখোমুখি হওয়া এই সাত আসামি।

মামলাটিতে এখন পর্যন্ত পলাতক আছেন সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, ফারমার্স ব্যাংকের ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সাফিউদ্দিন আসকারী, রণজিৎ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী সান্ত্রী রায়।

যে সব ধারায় এ মামলার অভিযোগ গঠন করা হয়েছে, তাতে অপরাধ প্রমাণিত হলে আসামিদের সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন শাস্তি হতে পারে। মৃত্যুদণ্ডের কোনো ধারা না থাকায় এস কে সিনহাসহ পলাতক আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবীকে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি।

বৈশাখী নিউজ/ বিসি