বিশ্বজুড়ে করোনায় মৃত্যু ৫২ লাখ ২৩ হাজার
চলমান মহামারি করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবায় বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সঙ্গে আগের দিনের তুলনায় বাড়ল প্রাণঘাতী ভাইরাসে নতুন সংক্রমিত রোগীর সংখ্যাও। গেল ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে কোভিড শনাক্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে নতুন করে রোগটিতে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বেড়ে সোয়া চার লাখের ঘর ছাড়িয়েছে।
সর্বশেষ এক দিনে বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। এ দিকে দৈনিক মৃত্যুর তালিকায় এখনো শীর্ষস্থানে রয়েছে রাশিয়া। আর এরপরই তালিকায় যথাক্রমে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ইউক্রেন, তুরস্ক, হাঙ্গেরি এবং ভিয়েতনামের নাম। এতে বিশ্বব্যাপী রোগটিতে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ২৬ কোটি ২৩ লাখে দাঁড়িয়েছে। অপর দিকে মৃতের সংখ্যাও এরই মধ্যে ৫২ লাখ ২৩ হাজারে পৌঁছে গেছে।
মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) সকাল ১০টা পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে মৃত্যু, আক্রান্ত ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডো মিটারস থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, শেষ ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে কোভিড সংক্রমিত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন পাঁচ হাজার ২৬৬ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ল এক হাজারের বেশি। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা ৫২ লাখ ২৩ হাজার ৯৮৪ জনে পৌঁছেছে।
নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন চার লাখ ৩১ হাজার ১৮৯ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৫০ হাজার। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত রোগটিতে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে ২৬ কোটি ২৩ লাখ ৩১ হাজার ৫৭৯ জনে দাঁড়িয়েছে।
এ দিকে গেল এক দিনে বিশ্বে করোনার থাবায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ দেখেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। একই সময়ে দেশটিতে নতুন করে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ৫৬ হাজার ৭২৫ জন। আর মারা গেছেন ৩১৭ জন। করোনা ভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশটিতে এ পর্যন্ত চার কোটি ৯২ লাখ ৬৭ হাজার ৮৭৭ জন সংক্রমিত হয়েছেন। এর মধ্যে মারা গেছেন আট লাখ এক হাজার ৪৯ জন।
অন্য দিকে দৈনিক মৃত্যুর তালিকায় এখনো শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া। শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন এক হাজার ২০৯ জন। আর নতুন করে রোগটিতে সংক্রমিত হয়েছেন ৩৩ হাজার ৮৬০ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ৯৬ লাখ চার হাজার ২৩৩ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে দুই লাখ ৭৩ হাজার ৯৬৪ জনের।
এছাড়া ইউরোপের দেশ জার্মানিতে নতুন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪২ হাজার ৫৮২ জন। আর মারা গেছেন ২৪১ জন। মহামারি করোনার সংক্রমণ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে ৫৮ লাখ ২৫ হাজার ৮৪৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে এক লাখ এক হাজার ৬৫২ জনের।
এছাড়া শেষ এক দিনে ব্রিটেনে নতুন করে কোভিড সংক্রমিত হয়েছেন ৪২ হাজার ৫৮৩ জন। আর মারা গেছেন ৩৫ জন। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে ইউক্রেনে নতুন করে মহামারি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন পাঁচ হাজার ৮০৪ জন। এর মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ২৯৭ জন।
করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ১১৪ জন। আর নতুন করে রোগটিতে সংক্রমিত হয়েছেন তিন হাজার ৮৪৩ জন। অপর দিকে মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দুই কোটি ২০ লাখ ৮৪ হাজার ৭৪৯ জনে দাঁড়িয়েছে। আর মৃত্যু হয়েছে ছয় লাখ ১৪ হাজার ৪২৮ জনের।
এ দিকে কোভিড আক্রান্তদের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ দেশ ভারত। যদিও প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে শনাক্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান এখন তৃতীয়। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বেড়ে তিন কোটি ৪৫ লাখ ৮৩ হাজার ৫৯৭ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছেন চার লাখ ৬৮ হাজার ৭৯০ জন।
এছাড়া কোভিড আক্রান্ত হয়ে গেল এক দিনে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে ৮২ জন, ইউরোপের মুসলিম রাষ্ট্র তুরস্কে ১৮৯ জন, ফিলিপাইনে ১৪১ জন, হাঙ্গেরি ৪৬০ জন, রোমানিয়ায় ৯২ জন এবং ভিয়েতনামে ১৭৩ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। অপর দিকে নির্ধারিত ২৪ ঘণ্টায় উত্তর আমেরিকার দেশ মেক্সিকোতে প্রাণ হারিয়েছেন ৩৮ জন। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে দুই লাখ ৯৩ হাজার ৮৯৭ জনের।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে এশিয়ার পরাশক্তি চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ প্রাণঘাতী ভাইরাসটিকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি সংস্থাটি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে। সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স, এএফপি
