আজ কুষ্টিয়া মুক্ত দিবস

আপডেট: December 11, 2021 |

আজ ১১ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এই দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধারা কুষ্টিয়া জেলাকে শত্রুমুক্ত করেন। ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের আগেই কুষ্টিয়ার জনগণ বিজয় অর্জন করেছিলো।

১৯৭১ সালের সেই দিনের অনুভূতি তুলে ধরে যুদ্ধকালীন কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আফতাব উদ্দিন বলেন, ১৯৭১ সালের ৩০ মার্চ ভোর রাতেই পাক হানাদার বাহিনীর আক্রমণের শিকার হয় কুষ্টিয়া। প্রতিরোধ যুদ্ধের মুখে ১ এপ্রিল রাতে পাকবাহিনী কুষ্টিয়া ছেড়ে পালিয়ে যায়। তারপর দফায় দফায় বিমান হামলা চালিয়ে ১৬ দিন পর আবারো কুষ্টিয়া দখল করে নেয় পাকবাহিনী।

তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন এলাকায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তি বাহিনীর তুমুল লড়াই চলে। এরমধ্যে ২৬ নভেম্বর সবচেয়ে বড় সম্মুখ যুদ্ধ হয় কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে। ৯ ডিসেম্বরে কুষ্টিয়া শহর ছাড়া সমস্ত এলাকা শত্রুমুক্ত হয়। শহর মুক্ত করতে শুরু হয় তুমুল লড়াই। এ যুদ্ধে উভয় পক্ষের অসংখ্য মানুষ নিহত হয়। ১১ ডিসেম্বর আসে চূড়ান্ত বিজয়।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আফসার আলী বলেন, ৯ মাস ধরে যখন থেমে থেমে যুদ্ধ হয়, তখন বাঙালি নিধন আর গণহত্যার উৎসবে মেতে উঠে পাকবাহিনী। ১৮ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ কুষ্টিয়া শহরের বিহারী কলোনির কোহিনুর ভিলার ১৬ জন শহীদ হন। এটি এ জেলার একটি পরিবারের উপর সংঘটিত সবচেয়ে বড় গণহত্যা।

কুষ্টিয়া শহরে প্রথম পতাকা উত্তোলনকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিল বলেন, দীর্ঘ নয় মাসের মুক্তি সংগ্রামে হানাদার পাকসেনাদের সাথে সম্মুখ যুদ্ধ করে যেসব বীর মুক্তিযোদ্ধারা শহীদ হয়েছিলেন তাদের সমাধি হিসেবে কুমারখালী, বংশীতলা, বিত্তিপাড়াসহ জেলায় প্রায় অর্ধশতাধিক গণকবর রয়েছে। এসব স্থানে নির্বিচারে হাজারো ব্যক্তিকে গণহত্যা করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, যে স্বপ্ন ধারণ করে মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে দেশকে স্বাধীন করতে লক্ষ প্রাণের বলিদান, সেই স্বপ্ন পূরণ এখনও সুদূর পরাহত। এর আগে ৪ ডিসেম্বর খোকসা, ৭ ডিসেম্বর আমলাসদরপুর, ৮ ডিসেম্বর মিরপুর, দৌলতপুর ও ভেড়ামারা থানা ও ৯ ডিসেম্বর কুমারখালী থানা পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালিত হয়।

এ বিজয়ের দিনটিকে উদযাপন করতে জেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে

বৈশাখী নিউজ/ ইডি

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর