চলতি সপ্তাহে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ: গোটাবায়া

আপডেট: May 12, 2022 |

শ্রীলঙ্কায় নতুন প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভা নিয়োগ দেয়া হবে চলতি সপ্তাহেই বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজপাকসে। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানা গেছে এমন তথ্য।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সদ্য সাবেক হওয়া প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসের পদত্যাগের পরই এমন সিদ্ধান্ত জানালেন তার ছোটভাই।

বুধবার (১১ মে) গোটাবায়া জানিয়েছেন, ২২৫ আসনের পার্লামেন্টের নেতৃত্ব দেবেন নতুন একজন প্রধানমন্ত্রী ও তার নেতৃত্বাধীন নতুন মন্ত্রিসভা। পার্লামেন্টকে আরও ক্ষমতা দিতে সাংবিধানিক সংস্কারের অঙ্গীকারও করেন তিনি।

প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া আরও বলেন, শ্রীলঙ্কায় চলমান সংকটের সুরাহা করতে দ্রুত নতুন সরকার গঠনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। দেশ যেন বিশৃঙ্খলায় পর্যবসিত হয়ে না পড়ে, অতি দ্রুতই সেই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

নতুন মন্ত্রিসভা গঠন হলে সরকারের স্থগিতাবস্থায় থাকা কার্যক্রমগুলোও পুরোদমে চালু করা হবে বলেও জানান লঙ্কান প্রসিডেন্ট।

শ্রীলঙ্কার চলমান অর্থনৈতিক সংকটের জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে ও সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে এবং তাদের পরিবারকেই দায়ী হিসেবে দেখছে দেশটির সাধারণ মানুষ। রাজাপাকসে পরিবারের শাসনামলে দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রায় পাঁচ কোটিতে নেমে এসেছে। যার ফলে দেশটির অধিকাংশ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে। তেল-গ্যাসসহ অন্যান্য জ্বালানি, ওষুধ এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের চরম ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

বিগত একমাসেরও বেশি সময় ধরে শ্রীলঙ্কায় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করেছে সাধারণ জনগন। কিন্তু চলতি সপ্তাহে এসে হঠাৎ করেই তাদের এই শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ বিস্ফোরিত হয়ে সহিংসতার রূপ নিয়েছে।

বিক্ষোভকারীদের প্রবল বিক্ষোভের মুখেই প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন মাহিন্দা রাজাপাকসে। একটি নতুন ঐক্য সরকার দেশ শাসন করবে বলে আশা নিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়ছেন বলেও বিদায়বেলায় জানান তিনি।

মাহিন্দা রাজাপাকসের পদত্যাগের মাধ্যমে শ্রীলঙ্কার মন্ত্রিসভাও ভেঙে যায়। এরপরই সরকার দলীয় রাজনীতিবিদদের ওপর ক্রমাগত হামলা চালাতে থাকে বিক্ষোভকারীরা। এই পরিস্থিতিতে মাহিন্দা রাজাপাকসে দেশের উত্তরপূর্বাঞ্চলের একটি সামরিক ঘাঁটিতে আশ্রয় নেন।

শ্রীলঙ্কার প্রতিরক্ষা সচিব কমল গুনারাতনে জানান, মাহিন্দা রাজাপাকসে কিছুদিন সামরিক ঘাঁটিতেই অবস্থান করবেন। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে নিজের পছন্দসই কোনো স্থানে চলে যাবেন তিনি।

তীব্র অর্থনৈতিক সংকটের মুখে গত মাসে পি. নন্দালা উইরসিঙ্গীকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নিয়োগের পরে তিনিও পদত্যাগের আগাম ঘোষণা দিয়ে বলেন, হাঙ্গামা বন্ধে একটি স্থিতিশীল সরকার অপরিহার্য। দেশে যতি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে না আসে, তবে আমি পদত্যাগ করবো।

তিনি আরও জানান, আমি প্রেসিডেন্ট ও অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে পরিষ্কার করে বলে দিয়েছি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে যদি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে না আসে, তবে আমি পদত্যাগ করব। কেবলমাত্র দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসলেই চলমান সংকটের সমাধান সম্ভব হবে।

বৈশাখী নিউজ/ ইডি

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর