সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত সহকারীর পদ হারালেন মুকিত

আপডেট: June 2, 2022 |

গাইবান্ধা-৩ আসনের সংসদ সদস্য উম্মে কুলসুম স্মৃতির ব্যক্তিগত সহকারী পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে মুহিবুল হাসান মুকিতকে। মুকিতের পরিবারের সঙ্গে জামায়াত সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ এবং সর্বশেষ মুক্তিযোদ্ধাকে হুমকি প্রদানের বিষয়টি সামনে আসার পর এই পদ হারালেন মুকিত।

গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুকিতকে সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত সহকারীর পদ থেকে অব্যাহতির কথা জানান খোদ সংসদ সদস্য নিজেই।

এ বিষয়ে জানতে তার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সে আমার ব্যক্তিগত সহকারী নেই। তার কোন বিষয়েই আমি আর কিছু জানি না। আর সে আমার ব্যক্তিগত সহকারী যেহেতু নেই, তার কোন বিষয়েই আমি আর কথা বলতে চাচ্ছি না। সে এই (আমার পিএস) পরিচয় কেনো ব্যবহার করবে যদি সে আমার পিএস না থাকে।

এদিকে গুঞ্জন শোনা যায় মুকিতকে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে বহাল রাখার চেষ্টায় আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে পৃথক এক তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের চেষ্টা করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক এবং মুকিতের পরিবারের জামায়াত সংশ্লিষ্টতা যাচাই বিষয়ক তদন্ত কমিটির সদস্য সাইফুল আলম সাকা বলেন, এটি নিছক গুজব। যারা বলছেন আমি কেন্দ্রে পৃথক প্রতিবেদন নিয়ে গিয়েছি তারা মিথ্যা বলছেন। বিগত এক মাসে আমি ঢাকায় যাইনি। আর জেলার সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষর নিয়ে পৃথক রিপোর্ট জমা দেয়ার প্রশ্নই ওঠে না।

তিনি আরো বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের কাছে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছে। সেটি কেন্দ্রেও প্রেরণ করা হয়েছে বলে আমি শুনেছি। বিষয়টি নিয়ে সংশয়ের কোন কারণ নেই। আরো নিশ্চিত হতে আপনি জেলার সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গেও কথা বলতে পারেন।

এদিকে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন নিয়ে গাইবান্ধা জেলার সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন জমা পড়েছে আমি জানি। এখনো দেখিনি সেটি। দেখার পরে এ বিষয়ে কথা বলতে পারবো। আর কেন্দ্রে এই প্রতিবেদন জমাও দেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৫ এপ্রিল আমিনুল ইসলাম নামে পলাশবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক এক নেতা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দফতরে অভিযোগ করেন, মুহিবুল হাসান মুকিতের পরিবার জামায়াত সংশ্লিষ্ট এবং তার বাড়িতে শিবিরের মেস ছিলো। এই অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে কেন্দ্রের নির্দেশে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে জেলা আওয়ামী লীগ। সেখান থেকে একে একে উঠে আসে মুকিতের পরিবারের জামায়াত সংশ্লিষ্টতার বিভিন্ন তথ্য।

মুকিতের পরিবারের জামায়াত সংশ্লিষ্টতা নিয়ে গঠিত এই কমিটির কাছে সাক্ষ্য প্রদান করেন ২৮ জন সাক্ষী। তাদের কেউই ‘মুকিতের পরিবার জামায়াত সংশ্লিষ্ট নয়’-এমন বক্তব্য প্রদান করেননি। বরং উপজেলা আওয়ামী লীগের এই সাংগঠনিক সম্পাদকের পরিবারের জামায়াত সংশ্লিষ্টতা নিয়ে নতুন বেশ কিছু প্রমাণ উপস্থাপন করেন সাক্ষীরা।

এদিকে নিজের বাবাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রমাণ করতে গিয়ে অপর এক মুক্তিযোদ্ধাকে হুমকিও প্রদান করেন মুকিত। সর্বশেষ তার এই হুমকির ঘটনায় মানববন্ধন করে প্রতিবাদ জানায় পলাশবাড়ীর স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর