নায়করাজ রাজ্জাকের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

আপডেট: August 21, 2022 |

নায়করাজ রাজ্জাক। বাংলার নায়ক। অভিনয়-সত্তা দিয়ে নিজেকে প্রমাণ করেছিলেন একজন সফল অভিনেতা হিসেবে। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে নায়ক রাজ্জাক যে অভিনয় প্রতিভা রেখে গেছেন সেটি অনেক দিন টিকে থাকবে দর্শকদের মনে। আজ ২১ আগস্ট এই মহা নায়কের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী।

২০১৭ সালের এই দিনে রাজধানীর একটি হাসপাতালে বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের উজ্জ্বল নক্ষত্রের প্রয়াণ ঘটে। কিংবদন্তি এ নায়কের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে পারিবারিকভাবে ধর্মীয় রীতি মেনে মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অভিনেতার ছোট ছেলে চিত্রনায়ক সম্রাট।

বাবার স্মৃতিচারণ করে সম্রাট বলেন, ‘বাবাকে নিয়ে আমার অনেক স্মৃতি খুব মনে পড়ে। সর্বশেষ তিনি কলকাতা গিয়েছিলেন ২০১৭ সালের জুলাই মাসে। সেখানে যাওয়া হয়েছিল টেলিসিনে অ্যাওয়ার্ডের জন্য। সেবার তিনি তার পুরনো বাসাতেও গিয়েছিলেন। তার সব আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখা করলেন। আমাকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরলেন, অনেক কথা বললেন।

তিনি বলেন, কলকাতায় একটা মার্কেট আছে, যেখানে লিমিটেড এডিশনের জিনিস পাওয়া যায়। সেখান থেকে কোরআন শরিফ কেনার জেদ করলেন। এ ছাড়া তিনি প্রথম দিকে কলকাতা গেলেই লিটন হোটেলে থাকতেন। আমার জ্ঞান হওয়ার পর থেকে দেখেছি তিনি সেখানেই থেকেছেন। শেষ অনেক বছর বিভিন্ন হোটেলে কাটিয়েছেন বাবা। তবে শেষবার তিনি জেদ করলেন লিটন হোটেলে থাকবেন। এই জিনিসগুলো চিন্তা করলে মনে হয় তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে চলে যাবেন। সেখানে গিয়ে তার সব ইচ্ছা পূরণ করেছিলেন। এটা ভেবে আমার অনেক শান্তি লাগে, শেষ কলকাতা ভ্রমণে তার সঙ্গী হতে পেরেছিলাম। তার অনেক ইচ্ছা পূরণ করার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার।’

এদিকে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি ও চলচ্চিত্র সম্মিলিত পরিষদ, মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করেছে। শিল্পী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক সাইমন সাদিক জানান, তিনি আমাদের নায়করাজ। তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে আজ বাদ আসর এফডিসিতে দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে।

১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন নায়করাজ রাজ্জাক। সপ্তম শ্রেণিতে পড়াকালীন মঞ্চনাটকে অভিনয় করেন। ১৯৬৪ সালে কলকাতায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কবলে পড়ে রাজ্জাক ও তার পরিবার ঢাকায় চলে আসেন।

অভিনেতা হিসেবে চলচ্চিত্রে রাজ্জাকের অভিষেক হয় সালাউদ্দিন প্রোডাকশনের ‘১৩ নাম্বার ফেকু ওস্তাগার লেন’ সিনেমায়। এই সিনেমাতে ছোট একটি চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। এরপর ‘ডাকবাবু’, ‘আখেরি স্টেশন’সহ (উর্দু ছবি) কয়েকটি সিনেমায় ছোট ছোট ভূমিকায় অভিনয় করেন তিনি।

একসময় প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও পরিচালক জহির রায়হানের নজরে পড়েন আব্দুর রাজ্জাক। তিনি ‘বেহুলা’য় লখিন্দরের ভূমিকায় অভিনয়ের সুযোগ দেন রাজ্জাককে। নায়িকা হলেন সুচন্দা। ‘বেহুলা’ ব্যবসাসফল হওয়ায় আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি রাজ্জাককে।

কলকাতার উত্তম-সুচিত্রা জুটির মতোই ঢাকায় রাজ্জাক-কবরী জুটি ছিল ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও আজীবন সম্মাননা পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন এই গুণী অভিনেতা।

অভিনয়ের পাশাপাশি পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন নায়করাজ। তিনি ‘বদনাম’, ‘সৎ ভাই’, ‘চাপা ডাঙ্গার বউ’সহ ১৬টি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেন। পরিচালনার পাশাপাশি প্রযোজনাতেও বেশ সফল ছিলেন রাজ্জাক।

বৈশাখী নিউজ/ এপি

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর