“ভেবেছিলাম বোধ হয় এখানে ই শেষ”: কুবি শিক্ষার্থী

আপডেট: February 4, 2023 |

কুবি প্রতিনিধি: পিছনে ধোঁয়া, গ্যাসের তীব্র গন্ধ, নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট, সমানে কাশি আর সামনের দিকে গেইট বন্ধ। অনেক ডাকা ডাকি, চিল্লা চিল্লির পরেও যখন গার্ড মামার ঘুম ভাঙেনা, ভেবেছিলাম বোধ হয় এখানে ই শেষ। আম্মু কে কল দিয়ে কোন কথা বলতে পারিনি,কান্না ছাড়া। এই মুহূর্ত টা আসলে কোন ভাবে ই ব্যাখ্যা করার মত না কিংবা বুঝানোর মত না।

শুধু মাত্র আমরা যারা ওই মুহূর্ত টা ফেইস করছি তারাই জানি। সকালের চিত্র টা অন্যরকম ও হতে পারত, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা হল থেকে ৩৫০ এর বেশি লাশ, স্বজনদের আহাজারি, আর ও কত কি! সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় নতুন ভোর দেখার সুযোগ পেয়েছি। এমন ভাবে লোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন শেখ হাসিনা হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার শিমু।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) নবনির্মিত আবাসিক হল(মেয়ে)শেখ হাসিনা হলের গ্যাস পাইপের লিকেজ ছিলো আরো আগে থেকেই। তারা মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি)বিষয়টি হল প্রশাসননে জানালেও তারা কার্যকরী কোন পদক্ষেপ নেয় নি। শুক্রবার মধ্যরাতে হটাৎ তীব্র গ্যাসের গন্ধ পাওয়া গেলে পুরো হল জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ শুধু গ্যাসের বিষয় না অন্য সমস্যাগুলো প্রশাসনকে জানালেও তারা তাৎক্ষণিক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে না। এ বিষয়ে একাধিক শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা যায় ময়লা ব্যবস্থাপনা, ডাইনিং এর খাবার ও অন্যান্য সমস্যার কথা জানানো হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাযথ উদ্যোগ নেয়া হয় নি।

এই ব্যপারে শেখ হাসিনা হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থী জান্নাতুল মাওয়া বলেন, ‘গ্যাসের সমস্যার মতো সেনসিটিভ একটা বিষয়কে প্রশাসন কিভাবে হালকা ভাবে নিয়েছে তা আমার বোধগম্য নয়। মাসিক সাধারণ সভা হয়েছে মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারী তে যেখানে এ বিষয়ে হল প্রশাসনকে অবগত করা হয়। এরপর সমাধান ছাড়া কেটে গেলো ৩ দিন। গতরাতে সাড়ে তিনশো মেয়ে সহ এই হলে দূর্ঘটনা ঘটে গেলে প্রশাসন এর জাবাবদিহি করতে পারত কিনা জানা নেই। ‘

গ্যাস লিকেজের বিষয়টি জানতে চাইলে শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট মো. সাহেদুর রহমান বলেন,’ আমাকে শিক্ষার্থীরা ৩১ জানুয়ারী সাধারণ সভায় বিষয়টি জানায়। পরদিন আমি বিশ্বিবদ্যালয় প্রশাসনকে বিষয়টি অবগত করলে আমাকে জানানো হয় প্রকৌশলী টিম বৃহস্পতিবার,শুক্রবার কাজ করবে না।

শনিবার সকালে সমাধান করবে। তাই আমি শিক্ষার্থীদের সে চুলাটি সাময়িক সময়ের জন্য ব্যবহার করতে মানা করেছি। আমাদের প্রশাসনের সীমাবদ্ধতার জন্য ততক্ষণাৎ কোন সমাধান দিতে না পারার দায় আমরা এড়াতে পারি না। তবে শিক্ষার্থীদের ও একটু সচেতন হওয়া জরুরী ছিলো।’

উল্লেখ্য, গত শুক্রবারের রাতে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটে নি। শনিবার সকালে গ্যাস লিকেজ সমাধান করা হয়েছে।

বৈশাখী নিউজ/ জেপা

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর