জনপ্রিয়তাই কাল

আপডেট: December 7, 2018 |
print news

দৈনন্দিন জীবনে পরিবেশ পরিস্থিতি বিবেচনা করে নিরাপদে থাকতে চাওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু বাস্তবে আমরা কতটুকু নিরাপদে থাকতে পারি? একটু ভাবুন? বর্তমানে সামাজিক/রাজনৈতিক দিক থেকে যাই বলি না কেন – ইতিহাস পর্যালোচনা করলে ঘৃণ্য নৃশংস ঘটনাবলীর পিছনে অতি নিকট জনের কু-মতলব বা বিশ্বাস ভঙ্গের নেপথ্যে শত্রুপক্ষের বিজয় সম্ভব হয়েছে। পিতা/পিতামহের সম্পদ ভাই-বোনদের মধ্যে ভাগাভাগি নিয়ে একে অপরের চরম শত্রুতে পরিণত হয় এবং এক সময় ভাই-বোনদের মধ্যে হত্যার ঘটনাও ঘটে থাকে। প্রায়শঃ দেখা যায, বাবার মৃত্যুর পর সংসারের বড় ভাই/বোনরাই সংসারের হাল ধরে। পরিবারের ছোট ভাই-বোন হয় পড়ে নির্ভরশীল। সার্বিক পরিস্থিতিকে সে অনুকূলে রাখতে সচেষ্ট থাকে। ছোট ভাইরা যখন এক সময় মানুষ হয়ে চাকুরী বা ব্যবসার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন শুরু করে তখন সংসারে আয়-উন্নতি বৃদ্ধি পায়। এতে কর্তা ব্যক্তিও আনন্দ পায়। দেখা গেছে, এক সময় ছোট ভাইদেরকে বিবাহ করানোর পর সংসারের কর্তা অর্থাৎ বড় ভাই-বোন আস্তে আস্তে পর হতে থাকে। এক সময় ঘরে নতুন বউকে প্রায়শই ছোট ভাই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। একদি তারা বড় ভাইকে অপমান করতেও লজ্জা বোধ করে না। যে বড় ভাই সংসারের ভার বহন করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলেছে, খেয়ে না খেয়ে যাদের জন্য জীবনকে বিসর্জন দেয় তাকেই একদিন ভয়াবহ লজ্জাস্কর অবস্থায় পড়তে হয়। তখন কি জনপ্রিয়তাই কাল হয়ে দাঁড়ায় না?
এবার আসি রাজনৈতিক প্রসঙ্গ নিয়ে – পৃথিবীর ইতিহাস লক্ষ্য করলে দেখা যায় – যারা দেশের জন্য নিজের জীবন বিসর্জনসহ সার্বিক ত্যাগ স্বীকারে সদা জাগ্রত ভূমিকা রেখেছেন তারাই এক শ্রেণীর চোখে কাল হিসাবে দেখা দেয়, যেমন পাকিস্তানের স্বৈর শাসক হতে বাঙ্গালী জাতিকে স্বাধীন ও মুক্ত করেন – জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ভারতের মুক্তির জন্য ত্যাগ স্বীকার করেন মহাত্মা গান্ধী/ইন্দিরা গান্ধী, ইরাকের জন্য যিনি ত্যাগ স্বীকার করেন – প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন, লিবিয়ার প্রেসিডেন্ট কর্নেল গাদ্দাফী, এধরনের ঘটনাবলী অসংখ্য রয়েছে কিন্তু তাঁরা দেশের সার্বিক স্বার্থ রক্ষার চেষ্টায় ব্রত ছিলেন বলেই জনপ্রিয়তা হতে বঞ্চিত করার সুপরিকল্পিত পদক্ষেপ ছাড়া কিছুই নয়। তবে এ ধররেন ত্যাগী মানুষের সংখ্যা নেহায়েত কম হলেও যুগে যুগে তাদের আবির্ভাব ঘটবে। আমি তৃণমূলে সামাজিক সংগঠন করতে গিয়ে দেখা গেছে – যাহা আমার এলাকায় কোনদিন যা বাস্তবায়ন করতে পারেনি – আমি তাহা চেষ্টার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছি। এই বিষয়টি বসবাসরত একাংশ (হিংসুক ও অকর্মন্য) মেনে নিতে পারছে না এবং এলাকার পরিচিতির স্বার্থেই আমার এ চেষ্টা হয়েছে তাহা একমাত্র সাধারণ মানুষের স্বার্থেই ব্যক্তিগত কোন স্বার্থের চেষ্টা করি নাই ভবিষ্যতে ইচ্ছাও নাই। কিন্তু তার পরও অশুভ শক্তি কেন বসবাসরত ৮০% ভাগ মানুষের চোখ ফাঁকি দিয়ে এলাকায় প্রাধান্য বিস্তার করে অত্যন্ত চতুর তারা সাধারণত রাজনৈতিক অথবা এলাকার উর্ধ্বতন মহলের সাথে সচরাচর যোগাযোগ রক্ষা করে এবং সাধারণ মানুষকে ভয়-ভীতি দেখানোর মাধ্যমে এলাকায় প্রাধান্য বিস্তার করে এবং তার অভিষ্ট লক্ষ্য অর্জন করে চলে।
আমরা যে যাই করি না কেন – মৃত্যুর পর সকল প্রাণীজগতের পুনরুত্থান হবে সে এক মহা ভয়ানক দিবসে – সে দিন তারা দাঁড়াবে আল্লাহ্র সম্মুখে। জগত প্রতিপালক তাদের সকল বিষয়ে হিসাব নিবেন। তখন তারা অবনমিত থাকবে। সেই সকল পাপাচারীদের প্রত্যাবর্তন এবং ঠিকানা হবে একটি নির্দিষ্ট সংকীর্ণ স্থানে। নিশ্চয়ই তা চিরস্থায়ী ও যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি তাতে কিছু সংযোজন এবং বিয়োজন কোনটাই হবে না। এ অবস্থা হতে উত্তরণের স্বার্থে আমরা যার যার অবস্থান থেকে বিশ্বস্ততার সহিত নিজ নিজ কর্তব্যে ব্রত থাকি এবং সর্বদা আমিত্ব ভাব অন্তর থেকে বর্জন করতঃ কর্তব্য কাজে জাগ্রত ভূমিকা পালন করে পরম করুণাময়ের সান্নিধ্য লাভ করি।

লেখকঃ এম.ছানাউল্লাহ।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর