ইন্দুরকানীতে ওয়ার্ড আ.লীগ কার্যালয়সহ তিনটি দোকান ভস্মীভূত

আপডেট: November 6, 2023 |

পিরোজপুর প্রতিনিধি: পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার মৃধারহাটে গভীর রাতে অগ্নিকান্ডে ওয়ার্ড আ.লীগের কার্যালয় সহ তিনটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভস্মিভূত হয়েছে।

গতকাল রবিবার দিবাগত রাত একটার দিকে উপজেলার ঢেপসাবুনিয়া গ্রামের মৃধারহাটে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে।

তবে এটি স্বাভাবিক কোন অগ্নিকান্ড নয় বরং বিএনপি-জামায়াতের নাশকতা বলে দাবি করেছেন স্থানীয় ওয়ার্ড আ.লীগের নেতৃবৃন্দ এবং ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা।

আর এটি অগ্নিকাণ্ড না নাশকতা এমন সন্দেহ ঘুরপাক খাচ্ছে সবার মনে।

এ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় আ.লীগের দলীয় অফিস সহ দুটি দোকান ভস্মিভূত হওয়ায় প্রায় ১৮ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন তারা।

এদিকে এ ঘটনার খবর পেয়ে রবিবার সকালে পিরোজপুর পুলিশ সুপার শফিউর রহমান, ইন্দুরকানি উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু বক্কর সিদ্দিকী,ইন্দুরকানী থানার ওসি আল মামুন,বালিপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান কবির হোসেন এবং বিকেলে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এম মতিউর রহমান সহ উপজেলা ও স্থানীয় আ.লীগের নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেন।

রবিবার সরেজমিনে গিয়ে প্রত্যক্ষ দর্শীদের কাছ থেকে জানা যায়, গতকাল রবিবার রাত দেড়টার দিকে স্থানীয় ৩ নং ওয়ার্ড আ.লীগের কার্যালয়ে আগুন জ¦লতে দেখেন আশপাশের বাসিন্দারা।

এরপর তাদের ডাক চিৎকারে ব্যাবসায়ী ও স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়ে আগুন নেভানোর চেস্টা করেন। এসময় আগুন নেভাতে ব্যর্থ হলে ফায়ার সার্ভিসকে ফোন দেন স্থানীয় জনতা।

ফায়ার সার্ভিস পৌছার আগেই ততক্ষণে পাশে থাকা রফিকুলের চায়ের দোকান এরপর ফজলুল হকের মুদি দোকানে আগুন ধরে ধাউ করে জ্বলতে থাকে।

ফজলুল হকের মুদি দোকানে ১৮টি গ্যাস সিলিন্ডারের বোতল একে একে বিস্ফোরণ ঘটনার কারনে এবং দুটি ফ্রিজ, কেরোসিন এবং আলকাতরা থাকার কারনে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় দোকানের ধারে কাছে ভিরতে পারেনি লোকজন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান,ফজলুল হকের মুদি দোকানটি মৃধারহাটের সব চাইতে বড় দোকান ছিল। তার দোকানে ঐ দিন ২৫ বস্তা চাল,দুটি ফ্রিজ,১৮টি গ্যাস সিলিন্ডারের বোতল সহ মুদি মনোহারির অনেক মালামাল ছিল।

এছাড়া রফিকুল ইসলামের চায়ের দোকানে ১টি টিভি ছিল। এদের আগুনে সব কিছুই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

এদিকে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে আজ রবিবার বিকালে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত দুই ব্যাবসায়ী সহ তিন জনকে ২৫ কেজি চাল ও সাত হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন ইন্দুরকানী উপজেলা প্রশাসন।

ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ী ফজলুল হক বলেন, আমার দোকানটিতে প্রায় ১৫ লাখ টাকার মালামাল ছিল। একটি মালও আমি নামাতে পারিনি। দোকানটি পুড়ে যাওয়ায় আমার সব শেষ হয়ে গেল।

রাতের আধারে কেউ আগুন ধরিয়ে দিয়ে আমাদের সর্বশান্ত করেছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

স্থানীয় ৩নং ওয়ার্ড আ.লীগের সভাপতি মো: আলমগীর হোসেন অভিযোগ করে বলেন, প্রথমে আমাদের ওয়ার্ড আ.লীগের কার্যালয়ে আগুন জ¦লতে ছিল। এরপর মুহুর্তেই পাশের দুটি দোকানে আগুন ধরে যায়।

এটি জামায়াত-বিএনপির নাশকতা ছাড়া আর কিছুই নয়। ২০১৩ সালেও তারা এ এলাকায় আতংক সৃস্টি করার জন্য এরকম অনেক নাশকতা চালিয়েছিল বলে তিনি জানান।

বালিপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান কবির হোসেন বলেন, এটা স্বাভাবিক কোন অগ্নিকান্ড নয়। নাশকতা সৃস্টির জন্য হয়ত কোন মহল ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়ায় পাশে থাকা দুটি দোকান পুড়ে যায়।

ইন্দুরকানী থানার ওসি মো: আল-মামুন বলেন, মৃধারহাটে অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে আমরা সাথে সাথে ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করি।

এটি স্বাভাবিক কোন অগ্নিকান্ড না নাশকতা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে নাশকতা হলে এ বিষয়ে যথাযথ ভাবে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর