১০ বছরে নিক্সন চৌধুরীর কৃষি জমি বেড়েছে ৫৪ গুণ
![](https://www.boishakhinews24.net/wp-content/uploads/2023/12/inbound7852901876765794566.jpg)
ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি: ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরী প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে।
ওই বছরের নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামায় তার মালিকানাধীন কৃষি জমির পরিমাণ ৩৮ শতাংশ উল্লেখ করেন।
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে দাখিল করা তার হলফনামায় কৃষি জমির পরিমাণ উল্লেখ করেছেন ২ হাজার ৪২ শতাংশ।
সেই হিসাবে গত দশ বছরে তার মালিকানাধীন কৃষি জমি বেড়েছে প্রায় ৫৪ গুণ।
নিক্সন চৌধুরী তৃতীয়বারের মতো ওই আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন।
তিনি ২০১৪ সালে প্রথমবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে আনারস প্রতীকে এবং ২০১৮ সালে দ্বিতীয়বার স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সিংহ প্রতীকে জয়লাভ করেন। বর্তমানে তিনি আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য।
বর্তমান নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা সংসদ সদস্য মজিবুর রহমানের হলফনামা থেকে দেখা যায়, নগদ টাকা রয়েছে ৩৮ লাখ ৩০ হাজার ৬শ’ টাকা, স্ত্রীর নামে ১ কোটি ৫২ লাখ ৮৫ হাজার ৬শ’ টাকা, ব্যাংক জমা ৭ লাখ ৪৫ হাজার ২৫৯ টাকা, স্ত্রীর নামে রয়েছে ৭ লাখ ২৩ হাজার ১৯১ হাজার।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ২০১৩ সালের ১ ডিসেম্বর দাখিল করা হলফনামায় স্ত্রীর নামে একটি ফ্ল্যাট ও ৭.৫ কাঠার প্লট দেখানো হয়। তবে তার নিজের নামে কোনো ফ্লাট বা প্লট দেখানো হয়নি।
আর দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে উপলক্ষে চলতি বছরের ২৮ নভেম্বর দাখিল করা হলফনামায় রাজধানীর বনানীতে দুইটি, গুলশানে দুইটিসহ মোট চারটি ফ্ল্যাট রয়েছে উল্লেখ করা হয়, আর প্লট রয়েছে ঢাকার পূর্বাচল, আদাবর, শিবচর হাউজিংসহ মোট চারটি স্থানে। এগুলো স্ত্রী ও নিজ নামে দেখিয়েছেন নিক্সন চৌধুরী।
২০১৩ সালে কৃষি খাতে আয় ছিল ২ কোটি ৫ লাখ টাকা । চলতি বছর তা কমে হয়েছে ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
এছাড়া প্রার্থীর নামে ব্যাংক লোন আছে ১৬ কোটি ৭৩ লাখ ৬০ হাজার ৭৪৮ টাকা। তবে স্ত্রীর নামে পূর্বের হলফনামায় কোনো নগদ অর্থ না থাকলেও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনী হলফনামায় ১ কোটি ৫২ লাখ ৮৫ হাজার ৬শ’ টাকা দেখানো হয়েছে।
বর্তমান নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা সংসদ সদস্য মজিবুর রহমানের হলফনামা থেকে দেখা যায়, নগদ টাকা রয়েছে ৩৮ লাখ ৩০ হাজার ৬শ’ টাকা, স্ত্রীর নামে ১ কোটি ৫২ লাখ ৮৫ হাজার ৬শ’ টাকা, ব্যাংক জমা ৭ লাখ ৪৫ হাজার ২৫৯ টাকা, স্ত্রীর নামে রয়েছে ৭ লাখ ২৩ হাজার ১৯১ হাজার।
স্বর্ণালংকার রয়েছে ৩০ তোলা, স্ত্রীর রয়েছে ৫০ তোলা। কৃষি জমি দেখিয়েছেন ব্রাক্ষণপাড়া ৯৭৫.২৮, একই এলাকায় ৫১০ শতাংশ, ৩০ শতাংশ, ২৩৪ শতাংশ, ২৯০ শতাংশ এছাড়াও সাভারে ৩.২৮২৫ শতাংশ ।
এর বাইরে স্থাবর সম্পদ দেখিয়েছেন, অকৃষি ৫ কাঠা প্লট শিবচর হাউজিংয়ে, পূর্বাচল রাজউক ৭.৫ কাঠা, আদাবর ০.০১২১৫ একর, দত্তপাড়া শিবচর অকৃষি ০.৩৮ একর ।
এছাড়া নিজ ও স্ত্রীর নামে ঢাকার বনানীতে ফ্ল্যাট রয়েছে ৩৭১৬.১১ বর্গ ফুটের, ঢাকা বনানী প্রোপার্টি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড একটি ফ্ল্যাট, গুলশানে ৪ হাজার ৮৯১ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, গুলশান রোড ৭৯, হাউজ ১৬ এ একটি ফ্ল্যাট এবং ব্রাক্ষ্মনপাড়ায় দোতলা বাড়ি।
দশ বছর আগে ২০১৩ সালের ১ ডিসেম্বর দশম সংসদ নির্বাচনে দাখিল করা হলফনামায় কৃষিখাতে আয় ২ কোটি ৫ লাখ টাকা, ফ্ল্যাট বা প্লট ছিল না, শেয়ার সঞ্চয়পত্র ব্যাংক আমানত ছিল ২ কোটি ১ লাখ ৬৯ হাজার ৪৯৩ টাকা।
নগদ অর্থ দেখিয়েছেন ২৮ লাখ ১০ হাজার ২২০ টাকা, স্ত্রীর নামে নেই। কৃষি জমির পরিমাণ দেখিয়েছিলেন ৩৮ শতাংশ, অকৃষি জমির পরিমাণ ১৭.১০, স্ত্রীর নামে ৭.৫ কাঠা। এ হলফনামায় স্ত্রীর নামে স্বর্ণ ছিল ২৫ তোলা।
হলফনামায় সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরী ঘোষণা দিয়েছেন, ইতোপূর্বে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে তিনি তার চারটি প্রতিশ্রুতির দুইটি (বিদ্যুতায়ন ও সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পে ৯৫ ভাগ, স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মন্দির ৮৫ ভাগ) এবং জননিরাপত্তা ৭২ ভাগ এবং ব্রিজ, কালভাট, রাস্তা পাকাকরণ ৭৯ ভাগ পূরণ করেছেন।
বার্ষিক আয়: কৃষিখাতে ৮ লাখ ৫০ হাজার, ব্যবসা থেকে নীপা পরিবহন লিমিটেড (সম্মানী) ১১ লাখ ৫০ হাজার, রিতা কনস্ট্রাকশন লিমিটেড (সম্মানি) ৬০ হাজার টাকা, স্বাধীনবাংলা ফিলিং এন্ড সার্ভিসিং স্টেশন (অংশ) ৭ লাখ ৭০ হাজার ৮শ ৫০ টাকা, এন ডেইরি ফার্ম, এন ডাক ফার্ম, এন ফিসারিস থেকে ৭৬ লাখ ১৮ হাজার ৮শ ৮৫ টাকা।
এছাড়া ব্যাংক মুনাফা (ব্যক্তিগত) থেকে ৯ হাজার ৯শ ৩টাকা, জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে প্রাপ্ত পরিতোষিক ও অন্যান্য ২২ লাখ ৩৮ হাজার ১শ ৭৫ টাকা। স্টক ব্যবসা থেকে ১৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেখানো হয়েছে।
নির্ভরশীলদের আয় দেখানো হয়েছে অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া বাবদ ১৬ লাখ ৮১ হাজার ৪শ ৭২ টাকা, পরিচালক মাস্ট প্যাকেজিং লি: (সম্মানি) ২১ লাখ টাকা, ছুটি ভাতা (ইত্তেফাক পাবলিকেশন লি:) ৪ লাখ টাকা। ব্যাংক মুনাফা ১৫ লাখ ১৭ হাজার ৯শ ৫৮ টাকা, স্টক ব্যবসা (মেয়ে) ৪ লাখ ১৫ হাজার টাকা।
এছাড়াও সম্পদ হিসেবে নিজ নামে ইলেকট্রিক সামগ্রী ৯লাখ ১০ হাজার, আসবাবপত্র ৭ লাখ ৭০ হাজার, বন্দুক, পিস্তল ১লাখ ১০ হাজার, পিয়ানো ৪লাখ ২০ হাজার টাকা দেখানো হয়েছে। স্ত্রীর নামে এফডিআর/আইপিডিসি ফাইন্যান্সে বিনিয়োগ ২৮ লাখ ১৮ হাজার ৪শ ৫১ টাকা।