যৌতুকের দাবীতে শিক্ষিকাকে অমানুষিক নির্যাতন

আপডেট: February 11, 2024 |

মো: হুমায়ুন কবির, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি : নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় স্বামীর বাড়িতে যৌতুকের দাবিতে এক শিক্ষিকার ওপর তাঁর স্বামী ও পরিবারের লোকজনের অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

নির্যাতনের শিকার হয়ে শনিবার কেন্দুয়া উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ওই শিক্ষিকা বাদী হয়ে শনিবার রাতেই তাঁর স্বামীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে কেন্দুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।

নির্যাতনের শিকার ওই শিক্ষিকার নাম মোছাঃ রুনা আক্তার (৩২) তিনি বান্দনাল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক। এবং অভিযুক্ত স্বামীর নাম রিয়াজ আহম্মেদ সিরাজ ( ৪০) অন্য অভিযুক্তরা হলেন,শিক্ষিকার ভাসুর মোঃ অলি উল্লাহ( ৪৫) ও বোন শিল্পি আক্তার (৪৭) তাঁরা উপজেলার বলাইশিমুল ইউনিয়নের কচন্দরা গ্রামের আছাব উদ্দিনের ছেলে এবং মেয়ে।

শিক্ষিকার অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, রিয়াজ আহম্মেদের সাথে ১০ বছর পূর্বে শিক্ষিকা রুনা আক্তারের বিয়ে হয়। তাদের চারটি সন্তান রয়েছে। বিয়ের কয়েক বছর পর থেকে তাঁর স্বামী রিয়াজ আহম্মেদ , ভাসুর মোঃ অলি উল্লাহ ও বোন শিল্পি আক্তার যৌতুকের দাবীতে রুনাকে অত্যাচার নির্যাতন করে।

এমত অবস্থায় প্রায় ৭ বছর পূর্বে রুনা আক্তারের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চাকুরী হয়। এবং রুনা আক্তারের বেতনের সমস্ত টাকা তাঁর স্বামী এবং পরিবারের লোকজনের দিয়ে থাকেন। এর পরেও তাঁরা আরো যৌতুকের টাকা দাবী করে বিভিন্ন সময় রুনাকে মারপিট করেন।

তাঁদের অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে প্রায় এক বছর পূর্বে সোনালী ব্যাংক, কেন্দুয়া শাখা থেকে ৪ লাখ টাকা লোন নিয়ে তাঁদের দিয়েছেন রুনা আক্তার।

পরবর্তীতে কয়েকমাস পূর্বে আবার রুনা আক্তাকে আরো ১০লাখ টাকা যৌতুক দাবী করেন তাঁরা।

এই অবস্থায় শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রুনার বাবার নিকট থেকে আরও ১০লাখ টাকা যৌতুক বাবত এনে দেয়ার জন্য বলে। কিন্তু শিক্ষিকা আর কোন টাকা আনিয়া দিতে পারবেনা বলে জানালে রুনার স্বামী এবং পরিবারের লোকজন তাঁর উপর ক্ষিপ্ত হয়ে মারধর করে বলে শিক্ষিকা অভিযোগে উল্লেখ করেছেন।

শিক্ষিকা রুনা আক্তার বলেন, যৌতুকের জন্য আমার স্বামীসহ পরিবারের লোকজন আমাকে প্রায়সময় নির্যাতন করত।

শনিবার আবার মারধর করেছে। আমি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ নিয়ে কেন্দুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি আশাকরি পুলিশ আমার অভিযোগ আমলে নিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবেন।

এ বিষয়ে শিক্ষিকা রুনা আক্তারের স্বামী রিয়াজ আহম্মেদের মোবাইল ফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক রোববার দুপুরে বলেন, শিক্ষিকা রুনা আক্তারের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি।

তাঁর স্বামী ও পরিবারের লোকজন যৌতুকের জন্য তাঁকে নির্যাতন করেছেন অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। শিক্ষিকা উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর