সুস্থ রোগীদের বীর্যে উপস্থিত ‘করোনা’, যৌনতায়ও ছড়াবে এ ভাইরাস?

আপডেট: May 16, 2020 |

সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে কভিড-১৯ এ আক্রান্ত পুরুষদের শুক্রাণুতেও (বীর্য) থাকতে পারে সার্স কভি-২ নামক নতুন প্রজাতির এ করোনাভাইরাস। এমনকি ওই ব্যক্তি সুস্থ হয়ে উঠলেও তার শুক্রাণুতে ভাইরাস থেকে যেতে পারে। এর মধ্য দিয়ে আশঙ্কা করা হচ্ছে, করোনাভাইরাস যৌন সম্পর্কের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে কিনা? তবে তা নিশ্চিত হতে নতুন গবেষণার প্রয়োজন পড়বে বলে মনে করছে তারা।

দ্য জার্নাল অব দ্য আমেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (জামা) এর এই গবেষণায় ৫০জন পুরুষকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল। এদের মধ্যে ৩৮ জন বীর্যের নমুনা সরবরাহ করতে পেরেছিলেন। অংশগ্রহণকারীদের ২৩ জন সম্প্রতি কভিড-১৯ সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে বীর্য নমুনা সরবরাহ করতে সক্ষম হয়েছিল। এই সুস্থ রোগীদের মধ্যে দু’জনের বীর্যে কভিড -১৯ ভাইরাস ছিল। অন্য ১৫ জন রোগী সংক্রমণের তীব্র পর্যায়ে ছিলেন এবং এই গ্রুপের মধ্যে চারজন রোগীর বীর্যে ভাইরাসের উপস্থিতি ছিল। তবে গবেষণাটি যেহেতু সীমিত আকারে হয়েছে, তাই গবেষণার লেখকরা স্বীকার করেছেন যে আরো গবেষণা করা দরকার।

এছাড়া জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে চীনে মহামারি ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ার সময় শাংকুই মিউনিসিপ্যিাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৩৮ জন পুরষকে নিয়ে পরীক্ষা চালান গবেষকরা। এদের প্রায় ১৬ শতাংশের  বীর্যের মধ্যে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। এসব রোগীর এক চতুর্থাংশই তখন মারাত্মক সংক্রমণের পর্যায়ে এবং প্রায় ৯ শতাংশ সেরে উঠার পর্যায়ে ছিলেন বলে গবেষকরা জানান।

নর্থ-ওয়েস্টার্ন মেডিসিন সেন্টার ফর সেক্সুয়াল মেডিসিন অ্যান্ড মেনোপজের প্রতিষ্ঠাতা ও মেডিকেল ডিরেক্টর ডা. লরেন স্ট্রেচার বলেছেন, কভিড-১৯ যৌন সংক্রমণ হতে পারে কিনা তা নির্ধারণের জন্য এখনো পর্যাপ্ত তথ্য নেই। সীমিত গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল থেকে এটা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। শুক্রাণুতে চিহ্নিত হওয়া মানেই যৌন সংক্রমণ হওয়ার মতো নয়। সহবাসের পরে যোনি টিস্যু বা জরায়ুর টিস্যুতে এটি সনাক্ত করা গেলে তখন বলা যাবে এটা যৌন সংক্রামক হতে পারে।’

স্ট্রেচার ব্যাখ্যা করলেন, ধরুন আপনার করোনাভাইরাস রয়েছে এবং যদি যৌনসম্পর্কে লিপ্ত হন, পরে যদি দেখা যায় মহিলাটিও করোনায় আক্রান্ত হয়েছে তবে কি বলবেন এটি তার সঙ্গে একসাথে কাটানো, শ্বাস ফেলা এবং কাশির মাধ্যমে ছড়ায়নি? আপনি যদি তার যোনি টিস্যু এবং জরায়ুর ক্ষরণে এটি সনাক্ত করতে পারেন তবেই বলা যাবে। তবে এটি এখনো নির্ধারিত হয়নি বলে এর অর্থ এই নয় যে, করোনাভাইরাসটি যৌনভাবে সংক্রমণ হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই।

তবে ভবিষ্যত গবেষণায় যদি প্রমাণিত হয় যে সার্স কভি-২ যৌন সংক্রমণে সক্ষম, তাহলে এ ধরনের সংক্রমণ ঠেকানো কঠিন হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন তারা। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘এই ধরনের রোগীদের ক্ষেত্রে প্রতিরোধের উপায় হিসেবে যৌনমিলনে বিরত থাকা বা কনডম ব্যবহারের কথা বিবেচনা করা যেতে পারে। এটি যেহেতু বীর্যপাতের মধ্যে রয়েছে, সুতরাং এটি যৌনরোগ হতেও পারে এমন সম্ভাবনা রয়েছে। যাই হউক না কেন আপনাদের এখন নিরাপদ যৌন অনুশীলন করা উচিত।সূত্র- স্ট্রাইপস ডটকম।

বৈশাখী নিউজএপি

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর